তাহিরপুরে পাহাড়ি ঢলে সড়ক বিধ্বস্ত, ঘটছে দুর্ঘটনা
এম.এ রাজ্জাক, :: তাহিরপুর সীমান্ত সড়কটি বর্তমানে পর্যটক ও স্থানীয়দের জন্য মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবারের কয়েক দফায় বন্যা আর পাহাড়ী ঢলে বাগলী থেকে বারেকটিলা পর্যন্ত সড়কটির কয়েক স্থানে ভেঙ্গে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বারেক টিলার উপর থেকে নিচে নামার সড়কটির পাশে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটির এক কিলোমিটার রাস্তার পশ্চিম পাশ থেকে পূর্ব পাশ পর্যন্ত ইট সিঙ্গেল পাকার টুকরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। অন্য কোনো সড়ক না থাকায় বিপজ্জনক জেনেও মোটরসাইকেল চালকরা যাত্রীরা নিয়ে ঝুকি নিয়ে চলাচল করছে। যার ফলে প্রতিনয়িত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। গত বৃহস্পতিবার রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় তরিকুল ইসলাম নামে এক পল্লী বিদ্যৎ লাইনম্যানের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে এ সড়কটিতে। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, অপরুপ বারেকটিলার চারপাশে সবুজের সমাহার, উঁচু টিলার একপাশে পাহাড়, অন্যপাশে স্বচ্ছ জলের যাদুকাটা নদী। অপর প্রান্থে শিমুল বাগান, নিলাদ্রী লেক ও টাঙ্গুয়া হাওর। টিলার উপর দাঁড়ালে হাতছানি দেয় মেঘালয় পাহাড়। বারেকটিলা সহ পর্যটন স্পটগুলোর সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে প্রতিদিনেই পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসছেন পর্যটক প্রেমিরা সহ স্থানীয়রা।
তবে, ভ্রমণ পিয়াসু সহ স্থানীয়দের কাছে দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এ মরণ ফাঁদ সড়কটি। উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের বাগলী থেকে সীমান্ত রাস্তাটির বাসতলা, লালঘাট, বড়ছড়া, চানপুর সহ কয়েকটি স্থানে এবারের পাহাড়ী ঢলে ভেঙ্গে যাওয়ায় যাত্রীরা চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন । নারায়নগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা ইমা ও রবিউল বলেন, দূর থেকে যতটা শুনেছি তার থেকে বেশি উপভোগ করছি এখানে এসে। বারেকটিলার সৌন্দর্য্য আর উচুনিচু টিলা অসাধারণ। তবে আঁকাবাঁকা রাস্তাটিতে ব্যাপক ভাঙ্গন আর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যা দেখার পর অনেক ভয় লেগেছে মনে। তারা বলেন, রাস্তাটি ভাঙ্গন দেখে ভয়ে মোটরসাইকেল দিয়ে উপরে না উঠে পায়ে হেটে অনেক কষ্টে উঠেছি টিলাটিতে। মোটরসাইকেল চালক আলী হাসান বলেন, অনেকেই টিলার এ রাস্তা বেয়ে উপরে উঠার সাহস পায়না। কারণ পাথর উঠে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় রাস্তাটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোন সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য হাসান মিয়া বলেন, সমপ্রতি কয়েক দফায় বন্যায় বাগলী থেকে বারেকটিলা পর্যন্ত জেলা শহরের রাস্তাটি একেবারে চলাচলের অনুপোযী হয়েছে পড়েছে। মাঝে মধ্যে ব্যক্তি উদ্যোগে বালি দিয়ে রাস্তায় কোনরকম পথচারীরা চলাচল করছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবুল কাসেম বলেন, বারেকটিলার আঁকাবাঁকা রাস্তাটি এখন অনেকাংশ্যে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পর্যটকদের জন্য মারাত্মক বিপদজনক হয়ে উঠেছে। এ রাস্তাটির বিষয়ে বেশ কয়েকবার সংশ্লিষ্টদের অবগত করেছেন করেছি। কিন্তু এখনও কোন কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাহিরপুর উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. কাজী ফজলুল হক জানান, সড়কটি বর্তমানে পর্যটকসহ স্থানীয়দের জন্য এটা মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে জিওবি’এর স্কিম গ্রহণ করে প্রাক্কালন প্রেরণ করা হয়েছিল, কিন্তু অনুমোদন পায়নি। তিনি বলেন, জরুরি ভিত্তিতে সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ বলেন, বারেক টিলার আঁকাবাঁকা সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। বারেকটিলা সড়ক সহ সীমান্ত সড়কটি দ্রুত সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।