‘শাকিব আমাকে প্রতিনিয়ত ঠকিয়ে গেছে’
চিত্রনায়ক শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসের প্রেম বিয়ের গুঞ্জন বহুদিন ধরেই চলছিল। হঠাৎই লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যান অপু বিশ্বাস। এর মধ্যে অনেক জল ঘোলা হয়েছে। হয়েছে অনেক জল্পনা কল্পনাও। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে জনসম্মুখে হাজির হলেন অপু বিশ্বাস। সন্তানকে নিয়ে দিয়েছেন সাক্ষাৎকারে।
কেমন আছেন আপনি?
যেমনই থাকি না কেন ভালো থাকার ভান করতে হয়। এরপরও যেমন আছি তাকে খারাপ বলব না। দিন চলে যাচ্ছে কোনো রকম।
আপনি মাঝখানে হারিয়ে গিয়েছিলেন। নানা মাধ্যমে নানা রকম খবর বেরিয়েছিল?
আমি আসলে হারিয়ে যাইনি। আমি ছিলাম, আছি, থাকব। তবে এটা ঠিক যে আমি মাঝখানে নিজেকে আড়াল করে রেখেছিলাম। আপনাদের সঙ্গে কিন্তু আগেই বলেছিলাম যে আমি আড়াল ভাঙব।
কেন আপনার এই আড়ালে চলে যাওয়া?
আসলে কারণটা আমার একান্তই ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক। সে কারণে এতদিন আড়ালে ছিলাম এবং মুখ খুলিনি।
কিন্তু দর্শক আপনার কাছ থেকে সেই কারণ শোনার জন্য মুখিয়ে আছে। তা ছাড়া অনেকে অনেক রকম কথাও বলছে। এর জবাব নিশ্চয়ই আপনার কাছে আছে?
হ্যাঁ। সব প্রশ্ন আর সবকিছুর জবাব আমার কাছে আছে। কিন্তু ব্যক্তিগত আর পারিবারিক হওয়ার কারণে আমি কাউকে কিছু বলতে চাইনি। কিন্তু এখন আর চুপ থাকব না। আমি পুড়তে পুড়তে একেবারে ছাই হয়ে গেছি। আমিও একটা মানুষ। আমি তো বেশি কিছু চাইনি, কেবল আমার নিজের এবং সন্তানের স্বীকৃতি চেয়েছি।
আপনি বিবাহিত? কে আপনার সন্তানের পিতা?
জি। আমি বিবাহিত। আমি শাকিব খানের স্ত্রী। আর আমার সন্তান আবরাম খান জয়ের পিতাও শাকিব।
কিন্তু এতদিন কেন আপনি এসব বলেননি?
শাকিব খানের সম্মান এবং ক্যারিয়ারের স্বার্থে। তিনি বার বার আমাকে অপেক্ষা করিয়েছেন। বিয়ের ৯ বছর পরও আমি আমার স্বীকৃতি পাইনি। আর এখন তো আমি আর একা নই। এখন আমার একটা সন্তান আছে। তার জন্য অন্তত সুবিচার পেতে পারি আমি।
আর আপনার ক্যারিয়ার?
আমি আমার ক্যারিয়ারের কথা কখনোই ভাবিনি। শাকিবকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম। সব সময় ওর ভালো চেয়েছি। কখনই ওর ক্ষতি চাইনি। সে কারণেই নিজের ক্যারিয়ারের কথা না ভেবে আমি আড়ালে ছিলাম। শাকিবের কথা মেনে চলেছি। ফলাফল কী? ফলাফল কেবলই অপমান।
শাকিবের সঙ্গে আপনার বিয়ে ও সম্পর্কটা জানতে চাই।
শাকিব খানের সঙ্গে বন্ধু থেকে সম্পর্কটি অনেক দূর গড়িয়েছে। ২০০৮ সালের ১৮ এপ্রিল বিয়ে করি। তবে মিডিয়ার মানুষ বলেই বিষয়টি লুকিয়ে রাখি। বিয়ে হয়েছে শাকিব খানের বাসাতেই। তবে গোপনীয়তার স্বার্থে কাজী এখানকার ছিলেন না। কাজী এসেছিলেন শাকিবের বাড়ি গোপালগঞ্জ থেকে। তার নাম মুজিবুর। শাকিব, আমি, আমার মেজো বোন, একজন প্রডিউসার মামুন ছিলেন, আমার ভাই ও শাকিবের ভাই মুনীর ছিল। বিয়ের সময় নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় অপু ইসলাম খান। তবে আমি নায়িকা হওয়ার কারণে আমার ওই নামটি ব্যবহার করা হয়নি। আমি অপু বিশ্বাসই থেকে গেছি। ভবিষ্যতেও আমি এই নামেই থাকতে চাই। আমার মা-বাবার দেওয়া নাম ধরে রাখতে চাই।
আপনি কি কাজে ফিরবেন?
আমি একটু মুটিয়ে গেছি। তাই কাজে ফিরছি না। ডায়েট, এক্সারসাইজ দুটোই চলছে। তা ছাড়া যখন আড়ালে ছিলাম তখন কোনো বিজনেস করতে পারিনি। কোনো কাজেই আমি ছিলাম না। শুধু নিজের প্রতি খেয়াল রেখেছি।
কোথায় ছিলেন এতদিন?
এই দশ মাসে ঢাকা, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক এবং কলকাতায় ছিলাম। কলকাতায় ৫-৬ মাস আমার রিলেটিভের বাসায় ছিলাম। এর মাঝে শাকিব কলকাতায় গেলেও আমার সঙ্গে দেখা করেনি। কথা বলেনি। মানুষ নিজেকে ঠকাতে পারে কিন্তু নিজের জনকে ঠকাতে পারে না। আমি আসছি সেজন্য। আমি এই দশ মাস অনেক স্ট্রাগল করেছি। অনেক কষ্ট পেয়েছি।
কী ধরনের স্ট্রাগল করেছেন?
আসলে ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। কেবল এটুকু বলতে চাই— একটা মানুষের ধৈর্য্য, স্ট্রাগল কতটুকু হতে পারে? আমার যুদ্ধটা সব ছাপিয়ে গেছে। আমি তো জন্ম নিয়েছি মানুষ হিসেবে, অমানুষ হিসেবে তো জন্ম নিইনি। আমি তো মানুষের ভালো করতে চেয়েছি। একটা মেয়ে কতটা কষ্ট করতে পারে, আমি অনেক কষ্ট করেছি। আজ দশ মাসের ফল, কারও কাছে ছোট হয়ে যাব। আমাকে ছোট করা হবে এটা কাম্য ছিল না। আজকে আমার সব কিছু জীবন দিয়ে আগলে রাখছি। তার বিনিময়ে সম্মান চেয়েছি আর তো কিছু চাইনি। [কান্নায় ভেঙে পড়েন অপু। নিজেকে সামলে নিয়ে আবার বলেন]
শাকিব আর আমার একটি ছেলে আছে। সে বাচ্চাকে আমি অনেক কষ্ট করে জন্ম দিয়েছি। শাকিব আমার পাশে ছিল না। টাকা দিয়েছে কিন্তু আমার কাছে থাকেনি। কোনো মানুষ শুধু টাকা দিলেই সব হয়ে গেল না। আমার বাচ্চা জন্মানোর সময় চেয়েছিলাম, একবার শাকিবের সঙ্গে হ্যালো বলি। তাও পারিনি। আমি কি অন্যায় করেছিলাম, আমি তো তার ভালো চাই। এখনো চাই। চেয়ে আসছি। ওর মা আছে, বোন আছে। তারাও মেয়ে। তারা কি এটা মানতে পারত। তাদেরকে জিজ্ঞেস করুক তারা এমন কষ্ট করে কিনা। আমার কী অন্যায়, আমি নায়িকা? শাকিবকে অনেক সাপোর্ট করেছি, এটা আমার অন্যায়? আমি দশ মাস আড়ালে গেছি, আমাকে নিয়ে অনেক বিদ্রূপ হয়েছে। কিছুই গায়ে লাগাইনি। আমি জানি, আমার শাকিবকে ঠিক রাখতে হবে।
আমাকে প্রতিনিয়ত ঠকিয়ে গেছে। কেন, আমি তো কাউকে ঠকাইনি। আমাকে বলেছে লুকিয়ে রাখ। আমি লুকিয়ে রেখেছি। আমার প্রেগন্যান্ট অবস্থা লুকিয়ে রাখতে বলেছে, আমি রেখেছি। আমার প্রাণের ছবি বসগিরি, সে ছবি ছেড়ে গেছি এক মুহূর্তে। আমি টুঁ শব্দ করিনি। ঢাকায় আসছি ৫ মাস হয়ে যাচ্ছে। কেউ বলতে পারবে না আমি কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তবু কেন শাকিব আমাকে ছোট করবে। আমি তো তাকে ছোট করিনি। চেষ্টাও করিনি। যে শাকিব খানকে আমি সাপোর্ট করে গেছি, সে আমাকে কেন ছোট করবে? কী অন্যায় করেছি। আমি তো সাপোর্ট দিয়ে গেছি।
আমি চেয়েছি শাকিবের ক্যারিয়ার ভালো হোক, তাই বিয়ের কথা কাউকে বলিনি। কিন্তু আমাকে ছোট করে না। আমি আমার ক্যারিয়ারের কথা চিন্তাও করিনি। আমি চেয়েছি ও ভালো থাকলে আমি ভালো থাকব। আমি যার ভালো চাচ্ছি সে আমায় ছোট করে দিয়েছি। আমি ৮০টা সিনেমা করেছি, আমাকেও তো মানুষ জানে। অথচ আমাকে কেন ছোট করা হলো। এখন যদি সে বলে তুমি ছোট হওনি। কিছুদিন আগেও তো কত নিউজ হয়েছে। তারপরেও এই বিষয়টা ছোট হওয়ার মতো না? শাকিবের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। আমার যেহেতু সন্তান আছে, তাকে নিয়ে সুখে-শান্তিতে থাকতে চাই। আমি অন্যায়কারী, একটা সন্তান তো অন্যায়কারী না। তার জন্য তার মর্যাদা আমি মা হয়ে দিতে চাই।
যখন সন্তান হয় তখন শাকিব কোথায় ছিলেন?
তখন শাকিব শুটিংয়ে ব্যস্ত ছিল। বাচ্চা হয় দেশের বাইরে। সে ছিল দেশে। আমাদের দেখতেও যায়নি। বাংলাদেশে আসার পর দেখতে গেছে। এটা বিষয় নয়। আমি কখনই তার কাছ থেকে ম্যান্টাল সাপোর্ট পাইনি।
আপনি দেশে ফিরেছেন কবে?
আমি দেশে আসছি ৫ মাস।
শাকিব বাচ্চাকে দেখতে যায়নি?
গিয়েছে। বাচ্চাকে দেখত, আদর করত, কিন্তু সেটা ঘরের মধ্যে। বাইরে না। তাকে প্রকাশ্যে আনতে পারিনি। এ ব্যাপারটি নিয়ে আমি অনেক সহ্য করেছি। আমার সঙ্গে আর দশটি মেয়েকে মিলিয়ে দেখেন আর কত সহ্য করব। ওর বোন আছে সেকি করবে? আমাকে উত্তর দিক। কেউ করবে না।
আপনার এবং শাকিব খানের বাচ্চা আপনি বলছেন… নাম কী ওর?
আবরাম খান জয়।
তাহলে আপনার সঙ্গে শাকিবের সম্পর্কটা ভালো নয়?
বলতে পারেন। কদিন আগে আমাকে ও একজন হিরোইনকে নিয়ে একটা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। সেই বিতর্কে আমি তাকে বলেছিলাম, একটা জুনিয়র আর্টিস্ট আমাকে নিয়ে কথা বলবে আর তুমি সেখানে চুপ করে থাকবে! সে সেটার বিষয়ে খেয়াল রাখেনি। তার মানে সে আমাকে সম্মান করেনি। আমি ছোট হচ্ছি না কোথাও বড় হচ্ছি সেই দিকটা ওর খেয়াল রাখা উচিত।
অপু আপনি বিয়ে গোপন করেছেন। আমরা জানি চলচ্চিত্রের অনেক তারকা অনেক ক্ষেত্রে বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখতে চান। তারা মনে করেন এটা তাদের ক্যারিয়ারে প্রভাব ফেলবে। আপনি হয়তো সেজন্য বিয়ের ব্যাপারটি গোপন রেখে গেছেন। কিন্তু আপনার বাচ্চা হওয়ার পরও কেন আপনি বিষয়টি গোপন করে গেলেন?
আগেও বলেছি, আবারও বলছি। শুধু ওর জন্য। শাকিবের যেন ক্যারিয়ারে কোনো প্রবলেম না হয়। ওর ভালোটা আমি চেয়েছি। কিন্তু ও আমাকে ছোট করে দিয়েছে।
শাকিব আপনাকে না করেছেন?
ওর না করা থেকে বড় কথা আমিই চাইনি ওর কোনো প্রবলেম হোক। আমি এখনো চাই না ওর প্রবলেম হোক। কিন্তু যখন মানুষ অনেক ছোট হয়ে যায় না! তখন তাকে তো ভালো করতে হবে। আজকে আমার ছোট হওয়ার পেছনে তো এই বাচ্চাটা আছে। আপনি দেখেন এই ছোট বাচ্চাটা কী অপরাধ করেছে? এক দিন তো শাকিব অনেক ছোট ছিল। ওর বাবার কোলে ছিল। সামাজিক মর্যাদা পেয়েছে। তাহলে এই বাচ্চাটির সামাজিক মর্যাদা পেতে দোষ কোথায়!
সবার কাছে আমার একটাই চাওয়া, সবাই যেন আমার সন্তানের জন্য দোয়া করে। ও যেন অনেক ভালো থাকতে পারে। ও যেন মানুষের মতো মানুষ হতে পারে। আমি যেন ওকে মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। আমি অনেক কষ্ট সহ্য করেছি। অনেক অপমানিত, লাঞ্ছিত হয়েছি। আমি কোনো দিন মুখ ফুটে বলিনি। আমি আজকেও বলতে চাইনি।
আমার ছেলে এখনো কিছু বোঝে না। ওকে কোনোভাবে ঠকানো যাবে না। আমি আশা করব ও বাবা হয়ে যেন ওকে না ঠকায়। এখান থেকে শাকিবের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে।
আপনি বলছেন আপনাকে অনেক অপমান করা হয়েছে, আপনাকে অনেক টর্চার করা হয়েছে। আপনাকে কেমন করে টর্চার করা হতো।
এটা আসলে আমাদের দুজনের ব্যাপার। সেটা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। কিন্তু আমি তো এত বছর ওকে হেল্প করেছি। ও কেন এর দাম দিল না। ও আজকেও আমাকে হেল্প করতে পারত। আজকে আমাকে ছোট না করলেই পারত।
শাকিব খান শেষ কবে এসেছিলেন আপনার সন্তানকে দেখার জন্য।
গত পরশু রাতে।
কী বলেন শাকিব?
আসল ওকে আদর করে গেল। ওকে লাখ লাখ টাকা দিয়ে গেছে।
শুধু টাকা দেওয়া বা খরচ দিয়ে কি একজন বাবার দায়িত্ব শেষ? এ বিষয়ে আপনি কী মনে করেন?
এটা আমারও প্রশ্ন।
আপনি তাকে সেই প্রশ্ন করেননি? কেন বাবার দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করা হচ্ছে না?
তার আশপাশে তো অনেক লোক আছে। তারাও তো বাবা, তারা রাত শেষে তাদের ছেলেকে নিয়ে ঘুমায়। তার আশপাশে আছে না এমন লোক। তার বোন, বিবাহিত জীবন পার করছে। সে কি তার স্বামীকে নিয়ে সংসার করছে না? তার সন্তান তো তার বাবার কাছে থাকে। আমি কেন শাকিবের বউ হয়েও দূরে। আমি কেন সন্তান পেটে নিয়েও দূরে। যখন আমি ডক্টরের কাছে সিজার রুমে গিয়েছিলাম আমি নিজে বন্ড সই করেছিলাম। ডাক্তার বলেন, ৩৫ বছরের ক্যারিয়ারে এমন কোনো রোগী দেখিনি যে, নিজের সিজারে নিজেই বন্ড সই করেছেন। আমার কী অপরাধ ছিল? আজকে আমাকে এতটা শাস্তি পেতে হলো। আমি তো মানুষ। আমি আর কতদিন বাঁচব? আমার কী কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই? শুধু টাকা দিয়েই কী মানুষের সেবা হয়ে যায়? কিছুদিন আগে শাকিব অসুস্থ, এখনো জ্বর। ওর বাসা থেকে জানানো হয়েছে ওর নাকি ভ্যাক্সিনের জ্বর। কিন্তু আমার বাচ্চার এখনো জ্বর। এর কী কোনো মূল্য নেই।
আপনি শাকিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন না, এটা কারা বলে?
ওর পরিবারে সদস্য আছে, তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়।
আপনি সরাসরি কথা বলেননি?
আমি বলেছি। কিন্তু বেশ কয়েক দিন আগের বাকবিতণ্ডার পর তার সঙ্গে আর আমার কথা বলা হয়নি।
বাসায় যখন আসেন বাচ্চা দেখতে তখন কথা বলেন না?
তখন ও দেখে তার বাচ্চাকে। আদর করে। কী বলার আছে!
আপনার সঙ্গে কথা বলেনি।
না ওইভাবে কথা বলা হয় না। আসলে একটা মেয়ে এভাবে সিচুয়েশন ক্রিয়েট করে যখন বাচ্চা নিয়ে আসে সেই মেয়ে কী কখনো তার সঙ্গে কথা বলতে চায়!
মানে আপনি তার ওপর রাগ করে আছেন।
আমার অনেক বলা হয়ে গেছে। আমার আর বলার ভাষা নেই।
আপনার কী মনে হয় না, আপনি অনেক বেশি ছাড় দিয়ে ফেলেছেন?
আমি এখন বুঝতে পারছি, এসব আমার আরও আগে করা উচিত ছিল। এটা আমি বুঝেছি। আমি ছাড় দিয়েছি কিন্তু আমার বাচ্চার জন্য আমি আর ছাড় দিতে রাজি নই। আমার ঠকের পাল্লা অনেক ভারী হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমি আমার সন্তানের অধিকার নষ্ট করতে চাই না। আমি আসলে ধৈর্য্য ধরতে ধরতে নিজেও জানি না কতটা সীমায় আমি চলে গিয়েছিলাম।
শাকিব খানের যে পরিবারের কথা বলছিলেন, সেই পরিবার থেকে আপনার ও আপনার সন্তানের ব্যাপারে তাদের বক্তব্য কী?
আমাকে ও আমার বাচ্চাকে নিয়ে তারা পজিটিভ।
তাদের কোনো বক্তব্যে শাকিব খানের কিছু যায় আসে?
তারা শাকিবের কাছে কোনো বক্তব্য পেশ করেন না। হয়তো তারা শাকিবকে ভয় পান। কিংবা শাকিবকে তারা এড়িয়ে যায়।
হঠাৎ কী এমন হলো যে আপনি এত রেগে গেলেন?
আমি আসলে সহ্যের শেষ সীমায় পৌঁছে গেছি। শাকিব আমাকে স্ত্রীর সম্মান দেয়নি। আবার বাইরেও কোনো সম্মান দিচ্ছে না। সে আমাকে কথা দিয়েছে যে বুবলির সঙ্গে শাকিব কাজ করবে না। কারণ সে অপুর সঙ্গে মিসবিহেভ করেছে। তখন হয়তো আমাকে ম্যানেজ করার জন্য এটা করেছে। এখন আবার পাল্টে গেছে। এত অসম্মান আমি কীভাবে সহ্য করব?
এখন আপনার চাওয়া কী?
আমি কেবল আমার আর আমার সন্তানের স্বীকৃতি চাই। আমি কোনো বিতর্ক চাই না। আমার অসহায়ত্ব আর নিরুপায় হওয়ার গল্পটাই বলতে চেয়েছি। কাউকে হেয় বা ছোট করতে চাইনি। এতদিন ধরে যে সত্যটা লুকিয়ে রেখেছিলাম, আজ আমার কাছে মনে হয়েছে সেটি সবার কাছে প্রকাশ করা দরকার। সে কারণেই আমি বলেছি। এখানে আর কোনো উদ্দেশ্য নেই। আমি এখনো শাকিবের ভালো চাই।
চলচ্চিত্রে ফিরবেন?
সব ঠিক থাকলে অবশ্যই ফিরব। আমি যেহেতু ফিট হচ্ছি, ভবিষ্যৎ কাম ব্যাক করতে চাইব। ভালোভাবে কাজ করব। আর দর্শকদের কাছে দোয়া চাই আমি যেন বাচ্চাটাকে মানুষের মতো মানুষ করতে পারি। আমার তো ছেলে, ওর দ্বারা যেন কোনো প্রতারিত না হয়। এটা আমি ওকে শেখাব।
কতদিনের মধ্যে ফেরার আশা?
আমি আর এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে ফিট হবো ভাবছি। তখন পুরনো কাজে ফিরব। নতুন বিষয় নিয়ে কথা বললে সেটা নিয়ে কাজ করব। নতুন একটা সিনেমার কথা হচ্ছিল জানি সেটার কি হবে।
এর মধ্যেই শাকিব বলেছেন তিনি সন্তানের দায়িত্ব নেবেন। আপনার নয়। এ বিষয়ে আপনার কী ভাষ্য?
আমার সন্তানের দায়িত্ব নিলেই আমি খুশি। আমার দায়িত্ব নিক, এটা আমি তার কাছে আশাও করি না।
পাঠকদের উদ্দেশে কিছু বলার আছে?
নিজের জন্য এবং আমার সন্তানের জন্য দোয়া চাই। দর্শকের দোয়া ও ভালোবাসা থাকলে আমি আবার ফিরব তাদের প্রিয় অপু বিশ্বাস হয়ে।
সূত্র বাংলাদেশ প্রতিদিন