দোয়ারাবাজারে স্ত্রী-সন্তানের সামনে বৃদ্ধকে কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা, হাসপাতালে মৃত্য
দোয়ারাবাজার::স্থানীয় কয়েকজন সন্ত্রাসী স্ত্রী-সন্তানের সামনে বৃদ্ধকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করার ৮ দিন পর তার মৃত্যু হয়েছ। গত ৫ অক্টোবর সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থঅয় ওই বৃদ্ধ মৃরা যান। মৃত ব্যক্তি মাঈন উদ্দিনের (৬০) বাড়ি দোয়ারাবাজার থানার নরসিংপুর ইউনিয়নের হাবিবনগর গ্রামে। এ ঘটনায় মাঈন উদ্দিনের ভাতিজা মো. আল আমিন (৩৫) বাদি হয়ে দোয়ারাবাজার থানায় হত্যামামলা দায়ের করেছেন। পরবর্তীতে পুলিশ হামলাকারী তিনজনকে গ্রেফতার করলেও হত্যামামলার মূল আসামিরা এখনও ধরাছোয়ার বাইরে। মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে দোয়ারাবাজার থানার নরসিংপুর ইউনিয়নের হাবিবনগর গ্রামের বাসিন্দা মো. আল আমিনের পরিবারের একটি গরুর বাচ্চা (বাছুর) পূর্ব সোনাপুর গ্রামের আসকর আলীর থানের চারায় (হালি) লাগানো ক্ষেতে গেলে চারা খাওয়ার আগেই বাছুরটিকে চারা খাওয়ার অভিযোগে তিনি বেধড়ক মারতে থাকেন। এসময় আল আমিনের ভাবি তানিয়া আক্তার বিষয়টির প্রতিবাদ করলে তাকেও আসকর আলী মারপিট করে আহত করেন। এসময় প্রতিবেশীদের হস্তক্ষেপে আসকর আলীর হাত থেকে তানিয়া আক্তার রেহাই পান।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ দিনই আসকর আলী (৫৫) ও তার সহযোগী মো. সরাফত আলী (৬০), মো. শওকত আলী (৪৫), মো. আব্দুল জলিল (৩২), মো. সিদ্দিক মিয়া (৪৫), মো. সোনা মিয়া (৪০), মো. আলাল উদ্দিন (৩৫), মো. জনাব আলী (৭০), মো. মানিক মিয়া (৪২), মো. জয়নাল আবেদিন ( ৩০)ও মো. শওকত আলী (৭০)সহ আরও ৪/৫ জন মিলে আল আমিনের বাড়িতে প্রবেশ করে হামলা চালান। এসময় আল আমিনের চাচা মাঈন উদ্দিনকে উঠানে পেয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপাতে ও লাটি-সোটা দিয়ে মারতে থাকে হামলাকারীরা। এসময় মাঈন উদ্দিনকে বাঁচাতে আল আমিন ও তার বাবা ফয়েজ উদ্দিন, ভাই নুরুল ইসলাম ও নুরুল আমিন এগিয়ে এলে তাদেরও উপরও হামলে পড়ে আসকর আলী এবং তার সহযোগীরা। মাঈন উদ্দিনকে মারপিটকালে তার স্ত্রী-সন্তানরা হামলাকারীদের হাতে-পায়ে ধেরে মাঈন উদ্দিনের প্রাণ ভিক্কা চান। কিন্তু এতে মন গলেনি সন্ত্রাসীদের। তাদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ও মারপিটে মাঈন উদ্দিন ও তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসা লোকজন গুরুতর আহত হয়ে পড়লে তাদের চিকৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন এবং সন্ত্রাসীদের হাত থেকে আশঙ্কাজনক অব্স্থায় তাদের উদ্ধার করে সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৫ অক্টোবর হামলার শিকার আল আমিনের চাচা মাঈন উদ্দিন (৬০) মৃত্যুবরণ করেন এবং বাকিরা চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরেন। এদিকে, হামলার ঘটনার পরপরই আল আমিন বাদি হয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর দোয়ারাবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে মাঈন উদ্দিন মারা যাওয়ার পর সেটি হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড করে পুলিশ। পরে দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাজির আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। মামলা দায়েরের পর গত ৫ অক্টোবর লামাকাজি ব্রিজের পাশ থেকে হামলাকারী তিনজনকে আটক করে বিশ্বনাথ থানাপুলিশ। পরে তাদেরকে দোয়ারাবাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়। আটককৃতরা হচ্ছেন- পূর্ব সোনাপুর গ্রামের মাহফুজ (২৬), খলিল (২৫) ও জাহাঙ্গীর (২০)। পরে তাদের সুনামগঞ্জ জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাজির আলম হামলা ও মাঈনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মাঈন উদ্দিনের মৃত্যুর পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং মূল আসামির ধরতে পুলিশ জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। হত্যার নির্দেশক ও মূল আসামিরা দ্রুত ধরা পড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।