চীন কি বঙ্গোপসাগরে ঘাটি গাড়তে চায়!-মিহির চক্রবর্তী
মিহির চক্রবর্তী-মার্কিন উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন বিগান তিনদিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন। সফরকালে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ, পররাস্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন মহোদয়ের সাথেও বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। তার এই হঠাৎ বাংলাদেশ সফর নিয়ে কুটনৈতিক এবং বিশ্লেষক মহলে ব্যাপক আলোড়ন এবং কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। আমেরিকার এই সফরের কারন যে বঙ্গোপসাগরে চীনের প্রভাব সহ বাংলাদেশে দেশটির প্রভাব বিস্তার করার উদ্দেশ্য নিয়েই পরিচালিত হচ্ছে, তা নিয়েও আলোচনা চলছে। এর কিছু দিন আগে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শ্রী হর্ষবর্ধন শ্রিংলার আকস্মিক বাংলাদেশ সফর নিয়েও কথা উঠেছিল। যদিও সফরকালে দেশ দুটি বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক আরো প্রগাঢ় এবং ঘনিষ্ঠ রাখার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে এবং উন্নয়ন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক যোগাযোগ আরো বৃদ্ধি পাবে বলেই আমেরিকা,ভারত এবং বাংলাদেশ একমত হয়েছে।
ভারত অবশ্য গত মাসের প্রথম দিকেই তার সফর কালীন সময়ে এই আশাবাদ ব্যাক্ত করে গিয়েছে এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও ভারতের সাথে সম্পর্ক অন্যান্য সময় থেকে আরো ভালো বলেই মন্তব্য করা হয়েছে। বাংলাদেশ আমেরিকা,ভারত, চীন সবার সাথেই সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতে আগ্রহী এবং এক্ষেত্রে বাংলাদেশের কুটনীতি অত্যন্ত ফলপ্রসূ এবং চমৎকার। যদিও আমেরিকা চাইছে, বাংলাদেশে চীনের প্রভাব সংকুচিত করতে। এক্ষেত্রে দেশটি এখন আর ভারতের উপরও আস্থা রাখতে পারছে না। আগে আমেরিকা তার বাংলাদেশ নীতির বিষয়ে ভারতের উপরই নির্ভর করতো। কিন্তু চীন যে ভাবে বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক সহযোগিতার আড়ালে নিজের সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়ে তুলছে,তা আমেরিকার জন্য রীতিমতো উদ্বেগের কারন হয়ে দাড়িয়েছে। চীন যদি বঙ্গোপসাগরে ঘাটি গেড়ে বসে,তা হলে আমেরিকা এই অঞ্চলে মায়ানমার, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ সহ বহু এলাকায় তার প্রভাব হারাবে যা দেশটির কাম্য হতে পারে না বর্তমান ভু-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে। এ কারনেই হয়তো আমেরিকার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন বিগানের এই ঝটিকা সফর যা বাংলাদেশের সফল কুটনীতিরই বহিঃপ্রকাশ বলেই পরিগনিত হচ্ছে কুটনৈতিক, বিশ্লেষক মহলে। সংক্ষেপে এটুকু বলা চলে, ভু-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ চীন, ভারত এবং আমেরিকা এই তিনটি দেশের কাছেই তার গুরুত্ব উপলব্ধি করাতে পেরেছে এবং সারা বিশ্বে কুটনৈতিক ক্ষেত্রে সফলতার স্বাক্ষরই তুলে ধরেছে।