এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শাহজালাল বিশ্বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থসহ তিন জনের নামোল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে  আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার সকালে নির্যাতিতা ছাত্রীর মা বাদী হয়ে  সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে এই মামলা করেন। আদালতের বিচারক মুহিতুল হক অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতের পিপি এডভোকেট এম এ মালেক জানান, মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে- গত (৮ এপ্রিল) শনিবার ফুফাতো ভাইয়ের সাথে শাবি ক্যাম্পাসে ঘুরতে যায় ওই ছাত্রী। ওই সময় শহীদ মিনার এলাকায় ফুচকা খাওয়াকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মামলায় উল্লেখিত আসামীরা তার মুখে সিগারেটের ধোয়া ছাড়ে এবং গায়ে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। ওই ছাত্রীর আর্তচিৎকারে শাবিপ্রবি প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা এগিয়ে আসলে এই ঘটনার জের ধরে দুইজন সাংবাদিককে পিটিয়ে গুরতর আহত করেন উত্যক্তকারীরা।
এ ঘটনায় নির্যাতিতার মা মাহমুদা খাতুন বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেছেন বলে জানান তিনি। মামলার আসামীরা হলেন- শাবিপ্রবির শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ, সমাজকর্ম বিভাগের ২য় বর্ষের ১ম সেমিস্টারের ছাত্র মাহমুদুল হাসান রুদ্র এবং পরিসংখ্যান বিভাগের ২য় বর্ষের ১ম সেমিস্টারের ছাত্র সাজ্জাদ রিয়াদ। এছাড়াও মামলায় ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত হিসেবে আসামী করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার  বিকেল ৫টার দিকে সিলেট নগরীর পাঠানটুলা দ্বিপাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ক্যাম্পাসে বেড়াতে আসলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থের অনুসারী কর্তৃক লাঞ্ছনার শিকার হয়। সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দুই সংবাদকর্মীকে পার্থের অনুসারীরা ঘটনাস্থলে লাঞ্ছিত করে। ঘটনাটি জানতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সংবাদকর্মী সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থের কর্মীদের সাথে তাদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এসময় সাংবাদিকরা শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি পার্থকে সমাধানের বিষয়ে বললে তিনি হলে ফিরে গিয়ে উল্টো হামলার নির্দেশ দেন বলে অভিযোগ ওঠে।
পরে সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ফুডকোর্টে চা খেতে গেলে দেশীয় অস্ত্রসাজে সজ্জিত হয়ে তাদের উপর উপর্যুপরি আঘাত হানে ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এসময় এই দুই সাংবাদিককে বেধড়ক পিটুনি দেয় তারা। এতে ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারান সাংবাদিক  সরদার আব্বাস এবং গুরুতর আহত হন সৈয়দ নবীউল আলম দিপু।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn