হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবা হাফেজ মাওলানা আবদুল বারীর (৬০) মৃত্যুর পর শোকে কাতর হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন অনার্স পড়ুয়া ছেলে শেখ রাসেল (২২)। গত বুধবার (১১ নভেম্বর) রাতে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার বিশকাকুনি ইউনিয়নের ধোবারুহী গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বিশকাকুনী ইউনিয়নের ধোবারুহী গ্রামে একটি পুকুরপাড়ের ঘর থেকে ছেলেটির লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধার হওয়া ওই তরুণের নাম শেখ রাসেল (২৩)। তিনি ধোবারুহী গ্রামের মাদ্রাসাশিক্ষক আবদুল বারীর (৬০) ছেলে। তিনি ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজে অর্থনীতি বিভাগের স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র ছিলেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার রাতে রাসেলের বাবা আবদুল বারী হৃদরোগে আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত আটটার দিকে হাসপাতালের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এতে রাসেল মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। বাবার লাশ নিয়ে বাড়িতে এসে রাত ১২টা থেকে ১টার মধ্যে নিজের ফেসবুকে তিনটি পোস্ট দেন রাসেল। রাসেলের বাবা স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষকতা করতেন। বুধবার রাত ৮টার দিকে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পিতা মৃত্যুর শোক সহ্য করতে না পেরে ছেলে শেখ রাসেল মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এ ঘটনার পর শেখ রাসেলে ফেসবুকে স্ট্যাস্টাস দেন।
তিনি স্ট্যাটাসে লিখেন, আমার দুনিয়ায়, আমার আখেরাত আমার আব্বা! ডা. মাত্র আব্বারে মৃত ঘোষণা করলো! দোয়া চাই, অবশ্যই আব্বাকে একা ছাড়বো নাহ…আমিও সঙ্গী হবো, ইনশাআল্লাহ। আরেকটি স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘আমার অক্সিজেন ফুরিয়ে গেল, আমার দেহ থেকে কলিজা বিছিন্ন হলো! বাবা আমাদের জন্য আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেলেন প্রতিদান দিলাম, দুশ্চিন্তা, ক্রোধ, আর নানা বাজে কাজ! আব্বা তুমি আমার সুপার হিরো! আমার বেঁচে থাকার সম্বল তুমি নাই আমি কি করে থাকবো বলো? ১০ টা বেজে গেল, কই তোমার ফোন তো আসলো নাহ! কই আমার খোঁজ তো কেউ নিলো নাহ’। এর পর রাতেই বাড়ির পাশে তাদের ফিসারিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে পূর্বধলা থানার ওসি মোহাম্মদ তাওহীদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
৭৮ বার