বার্তা ডেক্সঃঃ সম্প্রতি রাজধানীর কয়েক জায়গায় গাড়ি পোড়ানোর বিষয়ে বিএনপি নেতাদের পরিকল্পনার ফোন কথপোকথনের রেকর্ড সংসদে শুনিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি বলেন, টেকনোলজি এসে গেছে। এবং সেটা অনেক এগিয়েছে। এখন টেকনোলজি কথা বলবে। সোমবার (১৬ নভেম্বর) রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে গাড়ি পোড়ানো ইস্যু নিয়ে পয়েন্ট অব অর্ডারে বিএনপির সংসদ সদস্য হরুনুর রশিদ বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে।’ সত্য ঘটনা উদঘটনের জন্য তিনি সংসদীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানান। হারুনুর রশীদ বলেন, ‘আমি আপনার কাছে পত্রিকা পাঠিয়ে দিচ্ছি মাননীয় স্পিকার। আজকের একটি পত্রিকায় খবর এসেছে। খবর এসেছে মামলার কথা বাদী জানেই না। সেখানে মামলা হচ্ছে। পুলিশ বলছে, ভিডিও ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি মাননীয় স্পিকার, ইশরাক হোসেন কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত। জুয়েল কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত। ছাত্রদলের আরেক নেতা এক বছর ধরে চেন্নাই হসপিটালে চিকিৎসাধীন। তারা কীভাবে বাস পোড়ানোর মামলার আসামি হয় মাননীয় স্পিকার। আজকে পত্রিকায় ছবি এসেছে তিন বছরের শিশু তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। আদালতে কান্নাকাটি করছে সে, মুদিখানার দোকানে বসে ছিল। তাঁকে মামলার আসামি করা হয়েছে মাননীয় স্পিকার।’ এর পরিপ্রেক্ষিতে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যের জবাব দেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী স্পিকারের অনুমতি নিয়ে বিএনপি নেতাদের গাড়ি পোড়ানোর পরিকল্পনার কথপোকথনের রেকর্ড শোনান।
ফোন রেকর্ডে শোনা গেছে, ফরিদা নামে এক নারী নেত্রী বলছেন, আদাব, ফরিদা বলছি..পার্টি অফিসে তো আটকে পড়েছিলাম, এতক্ষণ গাড়ি পোড়াইছে ছেলেপেলে। অপরপ্রান্ত থেকে একজন সিনিয়র নেতা বলছেন, গাড়ি পোড়ানো হয়েছে, এগুলো কোন জায়গায়? এরপর ফরিদা বলছেন, হ্যাঁ হ্যাঁ। অপরপ্রান্ত থেকে বলছে, কোন জায়গা? আবার ফরিদা বলছেন, এই যে পার্টি অফিসের সামনে। এখান পুলিশ-র্যাব এসে পার্টি অফিস ঘেরাও করে রেখেছে। সাংবাদিকদের সহযোগিতায় কোনোরকমে বের হয়েছি আমি। আমি তো যেতে চেয়েছিলাম, যেতে পারলাম না। অপরপ্রান্ত থেকে বিএনপির ওই সিনিয়র নেতা বলেন, গাড়ি কোন জায়গায় পুড়েছে? এরপর ফরিদা বলছেন, পুলিশের স্টাফ গাড়ি থাকে না। ওগুলোতে আগুন দিয়েছে যুবদলের ছেলেরা। কোন জায়গায়? পার্টি অফিসের সামনে, কয়টা? একটা, একটা গাড়ি, হ্যাঁ একটা গাড়ি। পুলিশ আসছে, র্যাব আসছে। শনিবারের দিন যোগাযোগ করে আসবো নে.. আপনার সাথে কথা ছিল।
ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি সিটে নির্বাচন হচ্ছে, পট করে কয়েকটা বাসে আগুন দেওয়া। তারা নিজেরা আগুন দিয়ে দোষ দিচ্ছে এটা নাকি সরকারি এজেন্ট। আমরা আগুন দেব কী কারণে? আমরা ক্ষমতায় আছি। আমরা আগুন দিয়ে আমাদের সরকারকে বদনামের ভাগিদার করব কেন? মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দেওয়া তো আমাদের দায়িত্ব। টেকনোলজির কারণে হাতে হাতে ধরা পড়ে যাচ্ছে কারা আগুন দিচ্ছে। নিজেরা আগুন-টাগুন দিয়ে পার্লামেন্টে এসে সরকারকে দোষারোপ করা হলো। উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানো, এটা তাদের অভ্যাস।’ বিএনপির সংসদ সদস্যকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সংসদ একটি পবিত্র জায়গা। বিএনপির সদস্যকে বলবো, এইভাবে এখানে অসত্য তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত না করাই ভালো। এটা মানুষ বিশ্বাস করবে না। আর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডটা যেন বিএনপি বন্ধ করে। এটাই আমার আবেদন থাকবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে এমনিতেই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। তারা কষ্টে আছেন। তাদের সাহায্য করে যেতে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি, অর্থনীতির চাকাটা সচল রাখতে। আর সেখানে তারা এই সুযোগে চাচ্ছে— মানুষের দুঃসময়টাকে কাজে লাগিয়ে সরকারকে বদনাম করা। আর নিজেদের ফায়দা লুটা। এই ফায়দাটা লুটতে পারবে কিনা জানি না। কারণ, মানুষ এখন অন্ধ নয়। তারা সব দেখে-জানে। এ বিষয়টি বিএনপি নেতাদের বোঝা উচিত। টেকনোলজির কারণে সব ধরা পড়ে যায়। আমার মনে হয়, তারা আর অসত্য তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবে না।’-পূর্বপশ্চিমবিডি
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
৭০ বার