পীর হাবিবুর রহমান– প্রতিবার ভাবী একটি নিয়ে লিখব, লেখা হয়ে যায় আরেকটি নিয়ে। একের পর এক ইস্যু এসে এলোমেলো করে দেয়। বঙ্গবন্ধু ’৭০ সালে সুনামগঞ্জে বলেছিলেন এখানে বিশ্ববিদ্যালয় হবে। এ কথাটি বলেন, স্বাধীনতা-উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নুরুজ্জামান চৌধুরী শাহী। স্বাধীনতার পর জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে সুনামগঞ্জ স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, গোপালগঞ্জের উন্নয়ন হলে সুনামগঞ্জের উন্নয়ন হবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাও একই কথা বলেছেন এবং শত বছরে যে উন্নয়ন সুনামগঞ্জ দেখেনি শেখ হাসিনা ১২ বছরে তা দিয়েছেন। বিএনপির সময় এম সাইফুর রহমান সুরমা সেতু নির্মাণ করার প্রকল্প নিলেও বাতিল হয়ে যায়। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মতিউর রহমান সেটি আবার পাস করিয়ে কাজ অনেক দূর নেন। পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ সেটি সম্পন্ন করে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক গণমানুষের নেতা আবদুজ জহর সেতু নামকরণের প্রস্তাব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আবেদন জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নে সারা দেশের মতো আজ সুনামগঞ্জজুড়ে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ। তিনি নিজে গিয়ে কৃষককে সহায়তা দেন। তিনি হাওরে বাঁধ দিয়ে ফসল কৃষকের ঘরে তুলে দিয়ে নিরাপদ করেন মানুষের জীবন। জেলাজুড়ে সড়ক, অবকাঠামোর উন্নয়ন ব্যাপক হারে করছেন। হাওরে ফ্লাইওভার নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন। সুনামগঞ্জ শত বছরের আশার বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজসহ কত মেগা প্রকল্প দিয়েছেন। কিন্তু পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান তার নির্বাচনী এলাকাও নয় নিজের গ্রামকেই বড় ভালোবাসেন। মানুষ যেখানে তাকে সম্মান দিয়েছে, দল যেখানে সমর্থন দিয়েছে, এমপিরা যেখানে তার পাশে থেকেছেন সেখানে তিনি বড় স্বেচ্ছাচারী আচরণে চতুরতার সঙ্গে কারও সঙ্গেই পরামর্শ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল, টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, বিআরটিএসহ সব মেগা প্রকল্প তার গ্রাম শান্তিগঞ্জের ২ কিলোমিটারের মধ্যে নিয়েছেন। এতে জেলাজুড়ে অসন্তোষ দেখা দেয়। জেলা সদরের মানুষ বলে, সব শান্তিগঞ্জ নিলে শত বছরের জেলা সদর যেমন পরিত্যক্ত অন্ধকারে হারিয়ে যাবে তেমনি সব উপজেলা সুফল ভোগ করতে পারবে না। সদর আসনের এমপি পীর ফজলুর রহমান মিসবাহর নেতৃত্বে শহরে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন বিশাল স্বতঃস্ফূর্ত জনসভায় পরিণত হয়। পীর মিসবাহ চাঁদপুর, হবিগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা সদরের উদাহরণ টেনে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে গিয়ে জেলা সদরে প্রতিষ্ঠার আবেদন করলেও এম এ মান্নান চতুরতার সঙ্গে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ লেখান।

এতে জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা দলীয় এমপিদের নিয়ে বৈঠক করে সুনামগঞ্জ জেলা সদরের দেখার হাওরের খাসজমিতে প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত প্রস্তাব নিয়ে মন্ত্রীকে ফোন করলে তিনিও সম্মতি দেন। একই সঙ্গে তারা কপি তার হাতে হস্তান্তর করেন। এভাবে শেষ মুহূর্তে এম এ মান্নান সোমবার বিকালে ভিডিও কনফারেন্সে জগন্নাথপুরের এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে গিয়ে তার সহজ সরল ভাবমূর্তি ফেলে দিয়ে ভদ্রতা শালীনতার পর্দা ছুড়ে ফেলে হিংস্র আক্রমণে বিষোদগার করেন সদরের এমপি পীর ফজলুর রহমানের প্রতি। তিনি শান্তিগঞ্জেই বিশ্ববিদ্যালয় করার ঘোষণা দেন। তার ভিডিও ভাইরাল হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পীর মিসবাহ এমপিও বলেন, তিনি যেখানে সম্মান করে বক্তব্য দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন, একটি বিরূপ মন্তব্যও করেননি মন্ত্রীর প্রতি সেখানে তার প্রতি এমন আক্রমণ, বিষোদগার দুঃখজনক। তিনি জনগণের দাবির সঙ্গে ছিলেন, আছেন। এটা তার অধিকার। প্রধানমন্ত্রীই তার চাওয়ার শেষ ভরসা।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বিগত নির্বাচন নিয়েও বিতর্কিত প্রশ্ন তোলেন। যা খুশি তাই বলেন। এম এ মান্নান একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে যাননি। খুনি মোশতাক থেকে জিয়া হয়ে সব সেনাশাসকের আমলে সরকারি কর্মচারী ছিলেন। ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ তাকে জেনেভা পাঠান। তার ছেলে উচ্চশিক্ষিত ব্যাংক কর্মকর্তা বিদেশিনী বিয়ে করে বাইরে সুখের সংসারে। শেখ হাসিনাকে বলে এম এ মান্নানকে আওয়ামী লীগে যোগদান করান। আজ তোফায়েলরা ঘরে, মান্নানরা দাম্ভিক মন্ত্রী! সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বাড়িতে বসে থাকতেন নিরীহ চেহারায় ওয়ান ইলেভেনকালেও। সুরঞ্জিতের কুকুরের জন্য বিস্কুট নিয়ে যেতেন। এত মানতেন নেতাকে। বিএনপি শাসনামলে আবদুস সামাদ আজাদ ইন্তেকাল করলে শূন্য আসনে উপনির্বাচনে আসেন। মানুষের আবেগ তখন সামাদ আজাদ ঘিরে। আওয়ামী লীগ তখন নির্বাচন বর্জনে। সামাদ আজাদপুত্র আজিমুস সামাদ আজাদ ডন দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রার্থী হননি। মান্নান প্রার্থী হয়ে পরাজিত হলেন। ২০০৮ সালে শেখ হাসিনার ইমেজে জয়ী হন। ২০১৪ সালের নির্বাচন বিএনপি বর্জন করে। আজিজুস সামাদ আজাদ ডন স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। সামাদ আজাদের তৈরি নেতা-কর্মীরাও মান্নানের সঙ্গে অথচ ভোটে কি লড়াই! মানুষ কেন এখনো বলতে চায় ভোটের এমপি ডন, প্রশাসনিক লুটের এমপি মান্নান? এটা রহস্যময়। পীর মিসবাহ কেন এখনো এমপি শেখ হাসিনা জানেন।

তবে তার জনপ্রিয়তা, জনশক্তি আপনার জানা নেই। বা ভুলে গেছেন। আপনাকে অপমানের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন ভুলে গেছেন? সামরিক শাসকদের সরকারি কর্মচারী হিসেবে আপনার বয়স অনেক। রাজনীতিতে জেলা সভাপতি মতিউর রহমান, মহিবুর রহমান মানিক এমপি, জগন্নাথপুরের সিদ্দিক আহমেদের কাছে নবজাতক শিশু। আপনার চাঁদকপাল। গায়ে কাদা লাগেনি রাজনীতির। পুলিশের লাঠি, জেল, মামলা কিছুই না। এলেন ক্ষমতা পেয়ে এখন বেহুঁশ। আপনার বয়স বেশি হলেও পীর মিসবাহ বঙ্গবন্ধুর আদর্শে ও সুনামগঞ্জের স্বার্থে যত মিছিল-সভা করেছেন এত দিন রাজনীতি করেননি। পীর মিসবাহর বড় ভাই অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান পীর বঙ্গবন্ধু হত্যার পর অন্ধকার সময়ে জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক, দুবার জেলা সভাপতি। তার সেদিনের অবদান আপনি আবার জন্ম নিলেও রাখতে পারবেন না। সময়টা এখন আপনাদের। তাই জেলা সভাপতি মতিউর রহমান নয়, আপনিই দাপুটে মন্ত্রী। মানুষকে মানুষ মনে করেন না। কীভাবে একজন মন্ত্রী হয়ে পীর মিসবাহকে গালিগালাজ করতে গিয়ে বললেন সে কখনো বিশ্ববিদ্যালয় চায়নি? তিনি তো আপনাকে সব সময় সম্মান করেন। সবাইকে সম্মান করেন। আপনার ভিডিও ভাইরালের পর সংসদে দেওয়া তার ভিডিওও ভাইরাল হয়েছে। সংসদের প্রসিডিংস দেখে নিন। আপনি সংসদের অমনোযোগী এমপি ও মন্ত্রী জানতে পারলাম। তার প্রতিটি বক্তৃতায় সুনামগঞ্জ, দেশ ও মানুষের কথা। তিনি কত দিন দাঁড়িয়েছেন আর আপনি কদিন দাঁড়িয়েছেন? তিনি সুনামগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, সুরমা নদীর ওপর আরেকটি সেতু, রেললাইন, শিক্ষক সংকট, হাসপাতাল সমস্যা নিয়ে বলেই গেছেন। মানুষ জানে, আপনি জানেন না? একজন সৎ সিভিল সার্জনকে আপনি ২০ দিনের মাথায় কার স্বার্থে বদলি করেন? কেন মানুষ বলে আপনার এপিএস হাসনাত ইসলামী ছাত্রশিবির করত। কেন আজ অভিযোগ উঠেছে যেখানে আপনি সব মেগা প্রকল্প নিয়ে যাচ্ছেন সেখানে আপনার এপিএসের সমন্বয়ে জায়গার বাজিকররা অনেক জায়গা কিনেছে? কবে কিনেছে? আপনাকে সৎ-সরল-বিনয়ী জানতাম। চতুরতা ও ক্ষমতার দম্ভ দেখছি এখন। অনেকে বলেন, কেউ কেউ নাকি অর্থ ও ক্ষমতার দম্ভ সইতে পারে না। সুনামগঞ্জ শহরে সরকারি জায়গাও আপনি লিজ নিলেন। আমরা খুশি হলাম। এখন আপনি কাপুরুষ, মোসাহেব ও সুবিধাবাদীদের দেয়ালে আটক। জনবিচ্ছিন্ন। প্রশাসনকে অপরাধীদের জন্য ব্যবহার হতে বলবেন না। নিজেও প্রতিহিংসায় এমপিদের সঙ্গে অসহযোগিতা করার কথা বলবেন না। জন-অসন্তোষ জনরোষ নিয়ে শান্তির জনপদ সুনামগঞ্জকে অশান্ত করবেন না। সামাদ আজাদ বেঁচে থাকলে দল ও সব এমপির সঙ্গে পরামর্শ করতেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হলেও করতেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের শিষ্য হয়েও শিখলেন না। রাজনীতি কঠিন পথের সাধনা। দেখবেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমপি-কর্মী-নেতারা যান। ধমক খান। তবু তারা বলেন। তিনিও শোনেন এবং তাদের আবদারও রাখেন। এটা নেতার সঙ্গে কর্মীর সম্পর্ক। কেউ নেত্রী, কেউ আপা ডেকেই দীর্ঘ পথ হাঁটছেন। স্যার, স্যার, ইয়েস স্যার বলে বড় হননি। কর্মীবান্ধব গণমুখী চরিত্রে মানুষের মনের ভাষা পাঠ করে বড় হয়েছেন। সবাই পাওয়ার জন্য রাজনীতি করেননি। আপনার রাজনীতি ও রাজনীতিবিদদের প্রতি একদম পড়াশোনা নেই জানতাম না। রাজনৈতিক শিষ্টাচার কী তাও জানেন না?

২. অর্থনীতিবিদ বা অর্থনৈতিক গবেষক ড. নাজনীন আহমেদ এক অসাধারণ মেধাবী। যেমন তার স্টাডি, তেমন তার বলা। অর্থনীতি নিয়ে লিখতে গেলে আমি এই উচ্চশিক্ষিত, জাতির মেধাবী সন্তানের সাহায্য নিই। তিনি যা জানতে চাই প্রাঞ্জল ভাষায় জলের মতো পরিষ্কার করে দেন। এই ব্যক্তিত্বসম্পন্ন বিদুষী মানুষকে জিজ্ঞেস করেছিলাম আচ্ছা নাজনীন বলেন তো, পশ্চিমা দেশ যেখানে মুখ থুবড়ে পড়েছে অর্থনীতিতে সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনার ভয়াবহতায় কীভাবে সামাল দিলেন? নাজনীন বললেন, প্রথম তিনি গরিব মানুষকে খাবার দিয়েছেন। এ দূরদর্শিতা পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে দেয়নি। তিনি শুরুতেই গার্মেন্ট মালিকদের স্বল্প সুদে শ্রমিকের অ্যাকাউন্টে প্রণোদনার টাকা দেওয়ায় বড় ধরনের কর্মসংস্থান হারানোর ঝুঁকি থেকে রক্ষা পেলেন গার্মেন্ট শ্রমিকরা। ৫০ লাখ পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা দিলেন। বড় শিল্পকারখানার জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা দিলেন। ব্যাংককেও সুদ দিতে হবে। তাই তারাও যারা প্রকৃত ব্যবসায়ী খেলাপি হবেন না তাদের প্রাধান্য দিলেন। কৃষকসহ গরিবের জন্য ৫০০ কোটি টাকা ক্ষুদ্র ঋণ পাঁচটি ব্যাংকের মাধ্যমে দেওয়ায় তৃণমূলের মানুষ রক্ষা পেল। আমরা লকডাউনে গিয়ে স্বাস্থ্যব্যবস্থার দুরবস্থা দেখেছি। প্রথম দিকে চিকিৎসকরাও মারা গেছেন অনেক। প্রস্তুতি ব্যবস্থাপনা জানা ছিল না। পরে তা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখন লন্ডনে লকডাউন চলছে। আমাদের সতর্ক হতে প্রধানমন্ত্রী বলছেন। ভেবেছিলাম বিপদ গেল। যায়নি। মোকাবিলা করতে হবে। আতঙ্ক কমে যাওয়ায় অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। শেখ হাসিনার বড় সাফল্য, দারিদ্র্য সামাল দিয়েছেন। হাওরের বোরো ধান সময়মতো কৃষকের ঘরে তুলে দেওয়ায় চার দফা বন্যা হলেও দুর্ভিক্ষের যে আশঙ্কা ছিল তা দেখতেই হয়নি। সারা পৃথিবী যেখানে প্রবৃদ্ধির নেতিবাচক হিসাব দেখছে, বাংলাদেশ সেখানে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির চেহারা দেখেছে। আমরা কর্মসংস্থানের বিপর্যয়ে পড়িনি যদিও অনেকে কাজ হারিয়েছে। খাদ্য সহায়তায় আমরা খাবার না খেয়ে থাকিনি। করোনা শেখ হাসিনার বহুমুখী পদক্ষেপে চারদিকে হাহাকারের বদলে শক্তভাবে জীবন ও জীবিকার লড়াইয়ে মুখোমুখি করেছে। এখন তৃণমূল বা প্রান্তিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা বাড়ানো উচিত বলে মনে করেন ড. নাজনীন আহমেদ।

৩. গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ নিঃসন্দেহে একজন দেশপ্রেমিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। বঙ্গবন্ধুই তার স্বপ্নের স্রষ্টা। নিরাভরণ সাদামাটা জীবন ও মানুষের কল্যাণে কাজ করেন। তাকে আমি পছন্দ করি। কিন্তু তার রাজনৈতিক অবস্থান ও মাঝেমধ্যে এমন কথা বলেন যেখানে একমত দূরে থাক, হোঁচট খাই। সম্প্রতি তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির এক সংগঠনের সভায় বলেছেন, মানুষ রোগে যৌন নিপীড়নে ও ধর্ষণে ভালো নেই। তবে সরকারের অনেকে সুস্থ। এটা কীভাবে বললেন! আমরা কি সুস্থতা চাই না? প্রধানমন্ত্রী তো করোনার ভয়াবহতার মুখেও অর্থনীতিসহ সামাজিক অবস্থা মোকাবিলা করছেন দক্ষতার সঙ্গে। জাফরুল্লাহ সমস্যার সমাধানে গণতন্ত্র ও মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি তুলেছেন। মধ্যবর্তী নির্বাচন হলে কি ধর্ষণ কমে? ২০০১ সালের নির্বাচনের পর শাহ এ এম এস কিবরিয়াসহ কত ভয়ংকর সব রাজনৈতিক হত্যাকান্ড ঘটল। তখন কোথায় ছিলেন? একুশের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে উড়িয়ে দিতে গিয়ে ২৪ জনকে হত্যা করা হলো। কত শত পঙ্গু হলো। ১০ ট্রাক অস্ত্র এলো। কত সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদের উন্মুক্ত বেপরোয়া তৎপরতায় গ্রেনেড বোমায় দেশ ক্ষতবিক্ষত। কোথায় ছিলেন? নির্বাচনের বিজয়ের পরই সরকারি দল বিএনপির ধর্ষণ, হামলা নির্যাতন, বিরোধীদের বাড়িছাড়া, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন? বিএনপি-জামায়াত কোনো অপরাধের বিচার করেছিল নাকি অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়-শক্তি দিয়েছিল? শেখ হাসিনা কি অপরাধী, খুনি, ক্যাসিনো বাজিকরসহ দুর্নীতিবাজদের ধরছেন না? ধরা কি অব্যাহত রাখেননি? সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ মুক্ত করেননি? তাহলে বিএনপি-জামায়াতকে আবার আনতে চান কেন? তারা কি নির্বাচন আন্দোলনে উপযুক্ত? আপনার দেওয়া কটি পরামর্শ নেতৃত্বহীন বিএনপি গ্রহণ করেছে? জাফরুল্লাহ অনেকবার তার অফিসে ডেকেছেন। যাই যাই করে যাইনি। সামরিক শাসকরা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করেছিল। গণতন্ত্র অবরুদ্ধ করেছিল। প্রহসন মিডিয়া ক্যুর নির্বাচন করেছে। আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছে। কোথায় ছিলেন সেদিন? অতিবাম নুরুল ইসলাম ছোটন যে ফরহাদ মজহারকে নিয়ে হেফাজতের ভা-বে ভূমিকা রাখে সেটি গ্রহণযোগ্য? আমিও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। সিইসি নুরুল হুদার বিচারপতি আজিজের মতো ভাঁড়ের সংলাপ অসহ্য। সব প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী চাই। কিন্তু অস্থিরতা সৃষ্টি করে শেখ হাসিনার বিকল্প বিএনপি-জামায়াতকে এনে দেশটাকে রক্তগঙ্গায় বইতে দেখতে চাই না। অস্থিরতা ষড়যন্ত্র করে শেখ হাসিনাকে সরালে দেশ রক্তগঙ্গায় ভাসবে। যে যাই বলুক এটি আমার পর্যবেক্ষণ। কেউ রক্ষা করতে পারবে না। রাজনীতিতে ধৈর্য দরকার। ভুলের সুযোগ নেই। ২০১৪ নির্বাচন বর্জনে বিএনপি পঙ্গু। ২০১৮ সালে নেতৃত্বহীন ঐক্যফ্রন্টের প্রহসনের অংশগ্রহণ। উপনির্বাচনে করছে তামাশা। সরকারের অধীনে প্রশাসনযন্ত্রের বিরুদ্ধে কখনই বিরোধী দল জেতে না। বিএনপি বিরোধী দলে জায়গা নিতে হলে সেভাবে দল গোছাক। দল কই? কার্যক্রম কই? নেতৃত্ব কই? বিএনপি নেতারা কি বললে শোনেন? ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের বীরত্ব নিয়ে একা কথা বলেন। বিএনপি-জামায়াত জোটের পক্ষে গেলে কি আর সতীত্ব থাকে মুক্তিযোদ্ধার? লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn