বার্তা ডেস্ক :: ভারতের মুম্বাইয়ের একটি ফ্ল্যাট থেকে বাংলাদেশি তরুণীর পচেগলে যাওয়া মৃতদেহ প্রায় তিন সপ্তাহ পর উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ। তাকে হত্যার অভিযোগে বাংলাদেশি এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে তারা। এ ঘটনা ঘটেছে নাভি মুম্বাইয়ে। ওই তরুণ ও তরুণী লিভ টুগেদার করছিল। ভারতীয় গণমাধ্যম অনলাইন মুম্বাই মিররের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, নিহত বাংলাদেশি তরুণীর নাম লিপি সাগর শেখ ওরফে রিনা শেখ। তবে তার প্রেমিক তরুণের নাম জানা যায়নি। তারা দুজন নাভি মুম্বাই এলাকায় একত্রে বসবাস করছিলেন। তারা দুজনেই ছিলেন অবৈধ অভিবাসী। কিন্তু অন্য পুরুষের সঙ্গে রিনার সম্পর্ক থাকার সন্দেহে তার প্রেমিক তাকে প্রায় তিন সপ্তাহ আগে হত্যা করে এবং লাশ বাসার ভেতর রেখে বাইরে থেকে তালা আটকে দেয়।

রিনা ও অন্য দুই বাংলাদেশি নারী একই বাসায় বসবাস করছিলেন। কিন্তু করোনাভাইরাস সংকটে তারা কর্মহীন হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় অন্য দুই নারী বাংলাদেশে চলে আসেন। তারা নাভি মুম্বাইয়ে সেবা খাতে কাজ করতেন। তারা দেশে ফিরে আসার পর রিনা ও তার প্রেমিক শুরু করেন লিভ টুগেদার। একই বাসায়, একই ছাদের নিচে বিবাহ ছাড়াই বসবাস শুরু করেন রিনা ও তার প্রেমিক।

একপর্যায়ে বাংলাদেশি ওই দুই নারী আবারও মুম্বাই ফিরে যান নতুন কাজ পাওয়ার আশায়। তারা বাসায় ফিরেই দেখতে পান দরজার বাইরে থেকে তালা দেওয়া। রিনাকে ফোন করেন। কিন্তু তার ফোন তখন বন্ধ ছিল। এ অবস্থায় তারা যোগাযোগ করেন বাড়ির মালিকের সঙ্গে। তার কাছে চাবি চান। কিন্তু রিনা শেখ সেখানে বসবাস করছিলেন বলে ওই বাসার চাবি বাড়িওয়ালার কাছে ছিল না। এ অবস্থায় তারা বাড়িটির ব্রোকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাদের কাছে দরজা খোলার বিকল্প চাবি ছিল। এরই মধ্যে যোগাযোগ করা হয় পুলিশে। পুলিশ গিয়ে দরজা খুলে দেখতে পায় রিনা শেখের অর্ধগলিত লাশ।

প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, বাংলাদেশি ওই তরুণের সঙ্গে প্রেম ছিল রিনার। তার সঙ্গে থাকা অন্য দুই নারী দেশে ফিরে যাওয়ার পর তার সঙ্গে বসবাস শুরু করে তার প্রেমিক। রিনাকে হত্যার জন্য তাকে সন্দেহ করছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে তারা। বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে এই মামলা।

একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি ভারত ছেড়ে যায়নি। সে তার নিজের দেশ বাংলাদেশেও নেই। এ অবস্থায় আমাদের সব তথ্যদাতার সঙ্গে যোগাযোগ করি। জানতে পারি সে কোথায় আছে। একটি টিম পাঠানো হয়। তারপর গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সে বলেছে, রিনার সঙ্গে তার প্রেম ছিল। সে জানতে পেরেছে, প্রেমের নামে রিনা তার সঙ্গে প্রতারণা করছে। তার অন্য একটি সম্পর্ক আছে। তাই রাগে ক্ষোভে সে রিনাকে গলা টিপে হত্যা করেছে। এরপর দরজায় তালা দিয়ে পালিয়ে এসেছে। ওই বাসাটি তিন সপ্তাহ ধরে যেহেতু বাইরে থেকে তালাবদ্ধ ছিল, তাই কেউ-ই এ বিষয়ে খোঁজ করেনি। কিন্তু তিন সপ্তাহ পর গত সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) সেখানে পুলিশ হাজির হয়ে উদ্ধার করেছে রিনার মৃতদেহ। অন্য দুই নারী অবৈধভাবে ভারতে অবস্থান করার কারণে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। -মুম্বাই মিরর

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn