জগন্নাথপুরে বোরো ফসল হারানোর পর এবার হাওরের মাছ মরে যাচ্ছে দেখে নির্বাক হয়ে পড়েছেন। হাওরের ফসল পচে এক ধরনের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। এতে এক ধরনের বিষাক্ত গ্যাসে সৃষ্টি তা ছড়িয়ে পড়ে হাওরে। এতে আক্রান্ত হয়ে মাছগুলো মরে পানি ভেসে উঠে। গতকাল রোববার ভোরে লোকজন মাছ মরে পানি ভাসছে দেখে হতাশ হয়ে পড়েন। অনেকেই মৃত মাছ শিকারে ব্যস্ত পড়ে পড়েন। ফসলহানির পর এবার মাছ হারানোর আশংকায় হাওবাসীর কষ্টের যেন শেষ নেই। জানা যায়- সাস্প্রতিকালে জগন্নাথপুর উপজেলার সর্ববৃহৎ নলুয়ার হাওরসহ উপজেলার ছোটবড় ১৫টি হাওরের কাঁচা আধা পাকা সোনালি ফসল সর্ম্পূন পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। অসময়ে ফসলহানির ঘটনায় কৃষকরা চোখে সর্ষেফুল দেখছেন। এর মধ্যে নলুয়া, মইয়া, পিংলারহাওরসহ উপজেলার সবক’টি হাওরে রুই, কাতলা, বোয়ালসহ ছোট-বড় দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছগুলো মরে পানিতে ভেসে যাচ্ছে। কেউ কেউ মাছ ধরে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেকে বেশি বেশি মাছ ধরে বাজার বিক্রি করেছেন।

নলুয়ার হাওরপাড়ের ভূরাখালি গ্রামের বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন জানান- ফসল হারানোর পর বেঁচে থাকার কিছুটা আশা ছিল হাওরের মাছ। কারণ, বছরের ছয় মাস মাছ শিকার করে জীবন-জীবিকা চলে হাওরবাসীর। কিন্তু এবার ধানও গেল মাছও গেল। এর মধ্যে শনিবার কালবৈশাখী ঝড়ে আমার বসতঘর বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। চোখে কোন পথ খুঁজে পাচ্ছিনা। পরিবার পরিজন নিয়ে কী করে বেঁচে থাকব।  উপজেলা হাওর উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ভুরাখালি গ্রামের বাসিন্দা সিদ্দেকুর রহমান জানান- হাওরপাড়ের বাসিন্দার বোরো ফসল ও হাওরের মাছের ওপর নির্ভরশীল। এবারে কৃষকের ঘরে নেই ফসল। কৃষকদের জীবন-জীবিকার একমাত্র অবম্বল ছিল হাওরের মাছ। এবার মাছও গেল মরে। তার ওপর কালবৈখাশী ঝড়। সবকিছু মিলে হাওরবাসীর মহাসংকটে পড়েছেন।

নলুয়া হাওরবেষ্টিত উপজেলার চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আরশ মিয়া জানান- ভাল নেই হাওরপাড়ের মানুষ। কষ্টার্জিত ফসল হারানোর শোক সইতে না-সইতে এখন হাওরের মাছগুলোও মরে যাচ্ছে। পুরো বর্ষা মৌসুমে  মাছ শিকার করে সংসারের আহার যোগান হাওরবাসী।  জগন্নাথপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ওয়াহিদুল আবরার জানান- পানিতে ফসল পচে যাওয়ায় অ্যামোনিয়া গ্যাস সষ্টি হওয়ায় মাছগুলো গ্যাসের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মরে পানি ভেসে উঠেছে। ওই সব মাছ আহার করলে কোন জনসাধারনের কোন ধরনের ক্ষতি হবে না। আমরা অ্যামোনিয়ামুক্ত করতে নলজুীর নদীতে বিকেলে ঔষধ প্রয়োগ করা হয়েছে।  জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ জানান- রোগজীবাণু থেকে মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণে প্রশাসনের উদ্যোগে নদ-নদী, জলায়শ ও হাওরের বিল বাদলে ঔষধ দেয়া হচ্ছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn