আজ ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। দিবসটি কেন্দ্রীয়ভাবে মেহেরপুরের মুজিবনগরে পালিত হবে। এ উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও মেহেরপুর জেলা প্রশাসন ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছে।দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে দেশের তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানার পাশাপাশি দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতিগঠনমূলক কাজে অবদান রাখবে বলে প্রত্যাশা করেন। প্রধানমন্ত্রী বাণীতে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে ১৭ এপ্রিল একটি অবিস্মরণীয় দিন। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার ১৯৭১ সালের এ দিনে মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে শপথ গ্রহণ করে। দিবসটি স্মরণে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও মেহেরপুর জেলা প্রশাসন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হবে। অন্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সকাল ৯টায় মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিজিবি, পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি, বিএনসিসি, স্কাউট ও স্কুলের শিক্ষার্থীদের কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ এবং গার্ড অব অনার প্রদর্শন।

সকাল সাড়ে ১০টায় মুজিবনগর শেখ হাসিনা মঞ্চে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন মুজিবনগর দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একই স্থানে বিকাল ৫টায় অনুষ্ঠিত হবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে দেশবরেণ্য শিল্পীদের নানা পরিবেশনা থাকবে। এছাড়া রাতে বিশেষ আতশবাজির কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।

মুজিবনগর আলোয় আলোকিত : মেহেরপুর প্রতিনিধি জানান, দিবসটি উপলক্ষে মুজিবনগরকে আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। মেহেরপুরের প্রবেশ মুখ থেকে মুজিবনগর আম্রকানন পর্যন্ত করা হয়েছে অসংখ্য তোরণ। রাস্তার দু’পাশের গাছ রং করা হয়েছে। ভাঙাচোরা সড়ক মেরামত ছাড়াও দু’পাশের আবর্জনা পরিষ্কার এবং অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মুজিবনগর কমপ্লেক্সজুড়ে নানা রঙের আলোয় আলোকিত করা হয়েছে।

মুজিবনগরবাসীর প্রত্যাশা : ২০১০ সালে শেষবারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিবনগর এসেছিলেন। জেলাবাসীর দাবির মুখে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুজিবনগর কলেজ জাতীয়করণ ও রেল যোগাযোগ চালুর। মুজিবনগর কলেজটি জাতীয়করণ হলেও প্রতিশ্রুতির রেললাইন বাস্তবায়ন হয়নি। বর্তমানে মুজিবনগরবাসীর প্রত্যাশা মুজিবনগরে একটি স্থলবন্দর, একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণ, গ্যাস সংযোগ, একটি আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম নির্মাণ, মুজিবনগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অথবা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালকে মুজিবনগর মেডিকেল কলেজে রূপান্তরসহ মেহেরপুর জেলাকে একটি আধুনিক মানের জেলা হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

এবারের মুজিবনগর দিবসে এখানে দ্বিতীয় সংসদ ভবন স্থাপনসহ বছরে অন্তত একবার মন্ত্রিপরিষদের সভাসহ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিবালয়ের ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন জেলার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। এছাড়াও মুজিবনগরে শুল্কবন্দর স্থাপন, দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ মেহেরপুরের বারাদি হর্টিকালচার সেন্টার, বারাদি বীজ উৎপাদন খামার, আমঝুপি বীজ উৎপাদন খামার ও চিৎলা বীজ উৎপাদন খামারকে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি জানিয়েছেন তারা।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn