মহী জামান(ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে)– গত সোমবার থেকে সামাজিক মিডিয়া গরম হয়ে আছে। “অল দ্যা প্রাইমিনিস্টারস ম্যান’ শিরোনামে কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন আল-জাজিরা একটি ইনভেস্টিগেশন (তাদের ভাষায়) সর্বস্ব ডকুমেন্টারী প্রচার করেছে। গণ ফোরাম নেতা ডঃ কামাল হোসেনের মেয়ের জামাই ডেভিড বার্গম্যান যার মেইন হোতা।
মায়ানমারে সামরিক হস্তক্ষেপের ঠিক পরের দিন বাংলাদেশ নিয়ে নির্মিত এই ডকুমেন্টারি প্রচারের পিছনে রহস্য আছে। একশ্রেনী আছে যারা বাংলাদেশকে মায়ানমার বানাতে চায়। অস্থিতিশীল করতে চায়। আর তা হচ্ছে “পাপরা”( পাকিস্তান পন্থী রাজাকার) দের বাংলাদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্রের আরেকটি নমুনা।
সামরিক বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল আজিজ এর ভাইদের নিয়ে এই প্রোপাগাণ্ডা মুলক ডকুমেন্টারি প্রচার করার পিছনে আল-জাজিরার যে কুমতলব কাজ করছে তা বুঝতে হলে বেশী জ্ঞানী হতে হয় না।
বিতর্কিত সাংবাদিক এই ডেভিড বার্গম্যান হচ্ছেন এর আসল হোতা। অতীতে ও এই ডেভিড বার্গম্যান বাংলাদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছেন। তিনি একটি বিশেষ শ্রেণীর তাবেদারি করেন তা স্পষ্ট। হেফাজতের আন্দোলনের সময় এই বার্গম্যানের প্ররোচনায় আল-জাজিরা উদ্ভট সংবাদ প্রচার করে। পরবর্তীতে যা মিথ্যা প্রমানিত হয়। লাশ নিয়ে বাকপ্রতিবন্ধি গোর খোদকের মিথ্যা সাক্ষাৎকার প্রকাশ ছিল এর অন্যতম।
আমেরিকার ওটারগেইট কেলেংকারী নিয়ে ‘অল দ্যা প্রেসিডেন্টস ম্যান’ এর নকলে “অল দ্যা প্রাইমিনিস্টারস ম্যান” নাম দিয়ে ডকুমেন্টারি প্রচার করে ডেভিড বার্গম্যান কি প্রমান করতে চেয়েছেন তা স্পষ্ট নয়। ডকুমেন্টারিতে যেনতেন প্রকারে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিযুক্ত ও জড়িত করার ব্যর্থ চেষ্টা করেছেন। তার ব্যর্থ অপচেষ্টা শিরোনামের সার্থকতাতো প্রমানিত হয়নি বরং কাহিনীর সাথে নামের সামঞ্জস্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
কাহিনি সাজানো হয়েছে আর্মি চীফ মেজর জেনারেলে আজিজকে বিতর্কিত করার জন্য। অপ্রাসঙ্গিক ভাবে সেখানে তার ভাইদের টেনে আনা হয়েছে। জেনারেল আজিজের সাথে ভাইদের দেখা। উনার ছেলের বিয়েতে তাদের উপস্থিতি। উনার এক ভাই হারিস আহমদের কিছু অসংলগ্ন মন্তব্য নিয়ে মুখরোচক গল্প সাজানো হয়েছে। যার সাথে জেনারেল আজিজ বা বাংলাদেশের কোন দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। সংবাদে যা প্রমানিত করার চেষ্টাও করা হয়নি।
জেনারেল আজিজের ভাইরা আওয়ামী, ছাত্রলীগ করতেন। আওয়ামীলীগের দুর্দিনে দলের প্রতি তাদের ত্যাগ ও আস্থা অস্বীকার করার নয়। আওয়ামীলীগ করার কারনে সে সময় বানোয়াট তদন্তের মাধ্যমে ফ্রিডম পার্টির এক নেতা হত্যা মামলায় তাদেরকে ফাসিয়ে দেয়া হয়। খুনের আসামি হিসাবে হারিস আহমদ পলাতক। ছোট ভাই জোসেফ জেলে ছিলেন। ২০ বছর জেল কেটে মেয়াদ শেষ হবার দেড় বছর আগে রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় মুক্তিপান। দেশের সাংবিধানিক আইনে আছে রাষ্ট্রপতি কারন বসত ইচ্ছে করলে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে মুক্তি দিতে পারেন। সয়ং আমেরিকাতেও এ রকম আইনে বহু সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে ক্ষমা করে দেবার নজির আছে।
আইন সম্মতভাবে জেনারেল আজিজের সেই ভাইকে মুক্তি দেয়া হলেও এ নিয়ে বিভ্রান্ত ছড়ানো হচ্ছে। সুক্ষ ভাবে আল-জাজিরা তাই করছে। এক শ্রেনীর সরকার বিরুধী চক্র আল- জাজিরার প্রচারিত ডকুমেন্টারী নিয়ে উল্লাস প্রকাশ করছে। তাদের উল্লাস দেখে মনে হচ্ছে বাংলাদেশ মায়ানমার হয়ে গেছে। কেউকেউ এই খুশিতে মিষ্টি বিতরন করছেন। অনেকে আবার সোশ্যাল মিডিয়াতে এসে উলঙ্গ নৃত্য করছেন। ইউটিউব বিশেষজ্ঞরা নিজনিজ চ্যানেলে এসে গবেষণালব্ধ সারগর্ভ বক্তব্য দিচ্ছেন। ভাবখানা এ রকম মনে হচ্ছে শেখ হাসিনার সরকারের কয়েক ঘন্টার মধ্যে পতন হতে যাচ্ছে। আল-জাজিরা ইতিমধ্যে একখানা বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেছে।
জেনারেল আজিজের ভাই একজন মানুষ।ডকুমেন্টারিতে আল-জাজিরা স্বীকার করেছে সে অস্তির চিত্তের ব্যক্তি। তার মতো অস্থির চিত্তের মানুষের কথায় কি আসে যায়? সে কাকে কি বলেছে? কোথায় কি করেছে তাতে কি?
জেনারেল আজিজের ভাই পরিচয়ে সে যদি প্রধানমন্ত্রী কিংবা আর্মি চীফের কাছ থেকে বিশেষ কোন সুবিধা নিয়ে থাকে তা হলে না কেউ অপরাধী। আল-জাজিরা তার কোন প্রমাণ দেখাতে পারেনি। প্রমান দেবা চেষ্টাও করেনি। উল্লাসের তা হলে আমাদের প্রয়োজনটা কি? শুধুশুধু মিষ্ট বিতরণ করে মানুষকে বোকা মানানো যায় না? জনগন সচেতন। পাপরা’দের বুঝা উচিত অখাদ্য কে সুখাদ্য বলে চালানোর দিন শেষ। মহী -৩/২/২১
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১৫২ বার