হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ‘বর্ষায় নাও আর হেমন্তে পাও’ই ভরসা। হাওর পাড়ের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবার প্রায় দশ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার দেন একটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স। কিন্তু গত দশবছরে একদিনের জন্য চালু করা হয়নি নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকার পর অযত্ন আর অবহেলায় জরাজীর্ণ নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি এখন আছে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুকুর পাড়ে।
তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, হাওরবেষ্টিত উপজেলাগুলোর অসহায় দরিদ্র মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রায় ১০ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নৌ অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেন। এই নৌ অ্যাম্বুলেন্সের তৎকালীন মূল্য ছিল প্রায় দশ হাজার টাকা। তবে শুরু থেকেই চালক না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি চালু করতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বছরের পর বছর হাসপাতালের কর্মকর্তা বদল হলেও নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি চালু করার ব্যাপারে সবাই ছিলেন উদাসীন।
শুরুতে অব্যবহৃত অবস্থায় কয়েক বছর তাহিরপুর থানায় সম্মুখে রাখা হয় এই নৌ অ্যাম্বুলেন্স। এরপর থেকে প্রায় পাঁচ বছরের অধিক সময় ধরে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুকুরে নিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র খুলে পুকুরেই ফেলে রাখেন দায়িত্বশীলরা। সরেজমিনে দেখা যায়, তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন অরক্ষিত অবস্থায় থাকার কারণে রোদ, বৃষ্টি, ঝড় ও বহিরাগত মানুষের অপব্যবহারে নৌ অ্যাম্বুলেন্সটির বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে গেছে। নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুকুর পাড়ে আছে। তাহিরপুরের এই নৌ অ্যাম্বুলেন্সটির বেহাল অবস্থার কারণে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
হাওর পাড়ের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, হাওর পাড়ের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি হলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে সদরে আসতে পারত। হাসপাতালে নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি কোন কাজেই আসেনি আমাদের। একদিনের জন্যও ব্যবহার করতে পারিনি। জলযান কিনে টাকা জলে ফেলা হয়েছে দায়িত্বশীলদের দায়িত্বহীনতার কারণে। তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সৈয়দ আবু আহমদ শাফী জানান, আমি এই হাসপাতালে নতুন যোগদান করেছি। অনেক কিছু আমার অজানা। এই বিষয়ে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন শামস উদ্দিন জানান, এই বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে জানানো হয়েছে। শুরু থেকেই নৌ অ্যাম্বুলেন্স চালানো জন্য চালক ছিল না। যার জন্য এগুলো এভাবে পড়ে আছে। আমি গত বছর ও এবছর ও এগুলোকে মেরামত করার জন্য বলেছি।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
৭৬ বার