বৈশ্বিক উষ্ণতায় কানাডা-কুয়েত-সৌদি পুড়ছে দাবদাহে

গত ৭ বছর ধরে ধারবাহিকভাবে বেড়েছে বিশ্বের উষ্ণতা, যার চুড়ান্ত প্রকাশ দেখা গেছে ২০২১ সালের জুন মাসে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার অধিভুক্ত সংস্থা গোডার্ড ইনস্টিটিউট অব স্পেস স্টাডিজ (জিআইএসএস)-এর সাম্প্রতিক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। জিআইএসএস-এর পরিচালক গ্যাভিন শ্মিথ এ সম্পর্কে বলেন, ‘বিশ্ব ক্রমশ উষ্ণ হয়ে উঠছে। আমাদের গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ বছর উষ্ণতম সময় পার করেছে পৃথিবী।’ বিশ্বের অন্যতম শীতল আবহাওয়ার দেশ কানাডায় গত ২৬ জুন থেকে শুরু হওয়া অসহনীয় তাপপ্রবাহে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে জনজীবন। দেশটির ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের লিটন শহরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া, দেশটির বিভিন্ন অংশে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে ৪০ থেকে ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।

কানাডার জাতীয় আবহাওয়া দফতর ‘এনভায়র্নমেন্ট কানাডা’-এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে দেশের ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, অ্যালবার্টা, সাসকাচুয়ান, নর্থওয়েস্টার্ন টেরিটোরিস এবং ইউকন রাজ্যের কিছু এলাকায় অতিরিক্ত তাপমাত্রাজনিত সতর্কতা জারি করেছে। কানাডার প্রতিবেশী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি অঙ্গরাজ্যেও সম্প্রতি ব্যাপক উচ্চ তাপমাত্রা লক্ষ্য করা গেছে। জুনে দেশটির অরিগন অঙ্গরাজ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা রাজ্যের পূর্বের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। ১৯৬৫ সালে অরিগনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলিসিয়াস এবং চলতি বছর জুনের আগ পর্যন্ত এটিই ছিল রাজ্যটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড।

নাসার জিআইএসএস জানিয়েছে, ২০২১ সালের জুন মাসে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অন্তত ২৩ টি দেশে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি ছিল। গত ২২ জুন কুয়েতের নুয়াইসিব শহরে তাপমাত্রা উঠেছিল ৫৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলিসিয়াসে। কুয়েতের প্রতিবেশী দেশ ইরাকের কয়েকটি এলাকায় এ সময় তাপমাত্রা ছিল ৫১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর কাছাকাছি সময়ে, ইরানের ওমিদিয়াহ এলাকায় তাপমাত্রা উঠেছিল ৫১ ডিগ্রিতে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমানের বিভিন্ন এলাকায় জুন মাসে তাপমাত্রা ছিল ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। এশিয়ার মরুপ্রধান অঞ্চল মধ্যপ্রাচ্যের জলবায়ু অবশ্য এমনিতেই অনেক বেশি উষ্ণতাপ্রবণ ও শুষ্ক; কিন্তু জুন-জুলাই মাসে এই অঞ্চলের বেশিরভাগ দেশে তাপমাত্রা সাধারণত ৪০-৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি ওঠে না।

এদিকে, বিশ্বের বরফাচ্ছাদিত মহাদেশ এন্টার্কটিকাতেও তাপমাত্রা দিন দিন বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা ডব্লিউএমও (ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন)-এর তথ্য অনুযায়ী, গত ৫০ বছরে এন্টার্কটিকার তাপমাত্রা অন্তত ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে এবং ২০২০ সালে মহাদেশের সেইমুর দ্বীপে রেকর্ডকৃত তাপমাত্রা ছিল ২০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এন্টার্কটিকায় এর আগে কখনও এত বেশি তাপমাত্রা দেখা যায়নি। গ্যাভিন শ্মিথ বলেন, ‘জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে। ধীরে ধীরে আমরা একটি উষ্ণতর বিশ্বে প্রবেশ করছি। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী ব্যাপার এবং আমাদের আশঙ্কা, সামনের বছরগুলোতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।’ সূত্র : ঢাকাপোস্ট

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn

এ বিভাগের আরো খবর

একজন খোকন মাষ্টার- সুপ্ত বাসনা যার হৃদয়ে

একজন খোকন মাষ্টার- সুপ্ত বাসনা যার হৃদয়ে

শিক্ষা গুরু বাবু সুবোধ রঞ্জন দাস

শিক্ষা গুরু বাবু সুবোধ রঞ্জন দাস

মোদিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর

মোদিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর