উজ্জ্বল মেহদীর ফেসবুক পোষ্টঃ ডাকসাইটে ছাত্রনেতা। কিন্তু তাঁরা বক্তৃতা দিতেন না, বক্তৃতা দেওয়াতেন। মিছিলের আগে থাকতেন না, শেষভাগে থেকে মিছিল কতটা হৃষ্টপুষ্ট, তা দেখতেন, তাতেই ছিল সন্তুষ্টি। সভা-সমাবেশের আয়োজন নিয়ে দিনমান ব্যস্ত থাকতেন। কখনো মঞ্চে ওঠে মুখ দেখাতেন না, মঞ্চে বসতেন না, মাইক্রোফোনও হাতে নিতেন না। তবে সংকটে, সাহসে অগ্রভাগে ঠিকই থাকতেন। প্রগতিশীল রাজনীতির তীর্থস্থান প্রিয় শহর সুনামগঞ্জে এ রকম কিছু ছাত্রনেতা ছিলেন, আছেনও। যাঁরা মূল ধারার রাজনীতিতেও সক্রিয়। সেই ছাত্রনেতৃত্বের ধারায় বেড়ে ওঠা প্রিয় সুফিয়ান ভাইকে হারালাম। করোনাকাল, প্রিয় মানুষটির মুখটিও শেষবারের মতো না দেখার যন্ত্রণা, কাতরতা থাকবে আজীবন। সুফিয়ান নামটি কমন। তাই ছাত্রনেতৃত্বের সময়ে ‘আরপিননগরের সুফিয়ান ভাই’ নামে পরিচিত ছিলেন। বিখ্যাত লক্ষণশ্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন একাধিকবার। আঞ্চলিক আন্দোলনেও সক্রিয় ছিলেন। সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক পদটি ছিল সর্বশেষ রাজনৈতিক পদ। ছিলেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান। শেষবার চেয়ারম্যন পদে স্রোতের বিপরীতে ‘বাঘ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন। এ জন্য আড়ালে তাঁকে ‘বাঘ সুফিয়ান’ ডাকতেন অনেকে।
বুক ভরা সাহস, মুখে অমলিন হাসির সুফিয়ান ভাই ছিলেন অসীম সাহসী। তাঁর চিরবিদায়ে সুনামগঞ্জের আকাশ থেকে মস্ত একটা সাহস খসে পড়ল!
পুনশ্চ। এই প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে ২০০২ সালের একটি ছবি ও ২০০৪ সালের পত্রিকা ক্লিপিং যুক্ত করলাম। ইউপি চেয়ারম্যানগিরি করেছেন সাহসের সঙ্গে। জনপ্রতিনিধির অধিকার খর্ব হলে প্রশাসনকে ছাড় দিতেন না। ২০০৪ সালে প্রথম আলোর ‘আলোকিত সিলেট’ নামের আঞ্চলিক প্রকাশনায় ‘জনপ্রতিনিধির জবাবদিহিতা’ পর্বের একটি সাক্ষাৎকারে সাহস করে সেই কথাই বলেছিলেন। রাজনীতি-জনপ্রতিনিধিত্বের পাশাপাশি আঞ্চলিক আন্দোলনেও সোচ্চার ছিলেন।
‘সুনামগঞ্জ বাঁচাও’ আন্দোলনে ২০০২ সালের দিকে হাসপাতালের নৈরাজ্য বন্ধের দাবিতে একটি গণমিছিল থেকে দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে ট্রাকে তুলে এনে সমস্যার সমাধানের অঙ্গীকার করেছিলেন। ছবিতে সুফিয়ান ভাইয়ের ডান পাশে করোনায় প্রবাসে সদ্য প্রয়াত আরেক সাহসী মুখ জসিম উদ্দিন ফারুক ও সর্ব বাঁয়ে প্রয়াত কবি ও জনপ্রতিনিধি মমিনুল মউজদীন।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১৪৭ বার