বলিউড কিংবদন্তি দিলীপ কুমার না ফেরার দেশে চলে গেছেন। কিন্তু মৃত্যুর পরও রয়ে গেছে সেই প্রশ্ন, মোহাম্মদ ইউসুফ খান কেন হিন্দু নাম নিয়ে দিলীপ কুমার হয়েছিলেন? আনন্দবাজার জানিয়েছে, তার নাম বদলের পেছনে দুটি কারণ শোনা যায়। একটি ভয়, একটি প্রেম। তবে আরও একটি কারণ ছিল বলে মনে করা হয়। যেটি অবশ্য দিলীপ কুমার কখনও নিজের মুখে স্বীকার করেননি।
যদিও তৃতীয় কারণটিকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বিভিন্ন সময়ের আলোচনায়। বলা হয়, হিন্দু দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় হওয়ার জন্যই এই নাম বদল। বাস্তবের ইউসুফকে বলিউড চিনতে পারে স্বাধীনতার বছর ১৯৪৭ সালে ‘জগনু’ ছবিতে অভিনয়ের পর। তবে তার অনেক আগেই ১৯৪৪ সালে প্রথম ছবি। সেই ‘জোয়ার ভাটা’ ছবির প্রযোজক ছিলেন দেবিকা রানি। দেবিকাই নাকি, ইউসুফ খানকে ‘দিলীপ কুমার’ নাম নিতে বলেছিলেন। তাই অভিনেতা জীবনের শুরু থেকেই তিনি নতুন নামে পরিচিতি পেতে থাকেন।
তবে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসা ইউসুফ অভিনয় শুরু করার পরে বাবা যাতে জানতে না পারেন তার জন্য নাম বদলেছিলেন বলেও শোনা যায়। এমনটা নাকি কোনো একটি সাক্ষাৎকারে নিজেই বলেছিলেন দিলীপ। তবে দেবিকা রানির ইচ্ছার কথাই লিখে গেছেন দিলীপ। তার আত্মজীবনী ‘দ্য সাবস্টেন্স অ্যান্ড দ্য শ্যাডো’-তে দিলীপ লিখেছেন, ‘তিনি (দেবিকা রানি) বলেছিলেন, আমি ভাবছি তোমার একটা স্ক্রিন নাম হলে ভালো হয়।’ বইতে এমন লিখলেও ১৯৭০ সালে এক সাংবাদিককে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, বাবার ভয়েই নাম বদল করতে হয়েছিল। কারণ বাবা অভিনয় পেশাকে পছন্দই করতেন না। বুধবার সকালে মুম্বাইয়ের পি ডি হিন্দুজা হাসপাতাল অ্যান্ড মেডিকেল রিসার্চ সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান দিলীপ কুমার। তার বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর।
১৯৫০ ও ৬০ এর দশকে বলিউডের ‘ট্র্যাজেডি কিং’ হিসেবে খ্যাতি পাওয়া এই অভিনেতা বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন। মাস খানেক আগেও একবার তাকে এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল। প্রায় ছয় দশকের ক্যারিয়ারে ‘আন্দাজ’, ‘আন’, ‘ক্রান্তি’, ‘শক্তি’, ‘কারমা’, ‘সওদাগর’, ‘দেবদাস’ এবং ‘মুঘল-এ-আজম’সহ বহু জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন দিলীপ কুমার। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার। সবচেয়ে বেশি পুরস্কারপ্রাপ্ত ভারতীয় অভিনেতা হিসেবে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও তার নাম রয়েছে। চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য ভারত সরকারের পদ্মভূষণ খেতাবও পেয়েছেন তিনি। সূত্র : যুগান্তর