শেখ শহীদুল ইসলাম-
কবি নজরুল ইসলাম তাঁর নারী কবিতায় নারীর সত্তা সম্পর্কে বলেছেন, ‘প্রেরণা দিয়েছে শক্তি দিয়েছে বিজয় লক্ষ্মী নারী।’ আমাদের বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এরকমই একজন শক্তিমান ও প্রেরণাদায়ক বিজয় লক্ষ্মী নারী বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। তিনি বঙ্গবন্ধুকে জাতির জনক পর্যায়ে নিয়ে আসতে যে ভূমিকা পালন করেছিলেন তা ইতিহাসে খুব কমই লেখা হয়েছে। বঙ্গমাতা বেগম মুজিব কেবল একজন গৃহবধূ ছিলেন না, ছিলেন রাজনীতিবিদ, ছিলেন সুযোগ্য সহধর্মিণী, ছিলেন একজন রাজনৈতিকবোদ্ধা। ছিলেন একজন ধৈর্যশীল মাতা, ছিলেন একজন যোগ্য সহযোগী। বঙ্গবন্ধুকে শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু পর্যন্ত নিয়ে যেতে যদি কারও একক সর্বোচ্চ অবদান থেকে থাকে, তিনি হচ্ছেন ফজিলাতুন নেছা মুজিব।
খুবই অল্প বয়সে তার বিয়ে হয়েছিল। ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু তাঁর পরিবারকে টুঙ্গিপাড়াতেই রেখেছিলেন। কারণ, তিনি ব্যস্ত থাকতেন রাজনীতিতে। বারবার কারাগারে গিয়েছেন। তিনি কলকাতা থেকে ঢাকা এসেছেন। ঢাকায় এসে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ছাত্র হিসেবে তিনি ঢাকার রাজনীতি শুরু করেন। তিনি ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠা করেন ছাত্রলীগ। ওই বছর ১১ মার্চ তিনি গ্রেফতার হয়ে যান। এই যে পাকিস্তান আমলে তাঁর গ্রেফতার শুরু হলো, তারপর জাতির পিতার সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে ১৬টি বসন্ত পাকিস্তানের কারাগারের অন্তরালে কেটেছে। এই ১৬টি বছরই বেগম মুজিব বঙ্গবন্ধুকে কারাগারের অভ্যন্তরে শক্তি জুগিয়েছেন, সাহস দিয়েছেন, প্রেরণা দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের তথ্যও বঙ্গবন্ধুকে জানিয়ে বক্তব্য পালন করেছেন।
বেগম মুজিব ছিলেন একজন অত্যন্ত রুচিশীল মানুষ। যার জ্ঞান ছিল অত্যন্ত গভীর। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা হয়তো তার ছিল না। কিন্তু তিনি প্রচুর পড়াশোনা করতেন। এর মধ্য দিয়ে দেশের রাজনীতি, সমাজ ও অর্থনীতি সম্পর্কে তার একটি সুস্পষ্ট ধারণা জন্ম হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু সহচার্যে থেকে রাজনীতি এবং রাজনীতির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তিনি খুব সহজেই অনুমান করতে পারতেন। আগামীতে কী ঘটবে বা কী ঘটতে পারে? কোনটা করলে বঙ্গবন্ধু ও বাঙালির জন্য ভালো হবে? কোনটা করলে ভালো হবে না, তা অনুমান করতে পারতেন।
রাজনৈতিক নেতাকর্মী- বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অনেক কথাই বঙ্গবন্ধুর কাছে বলতে পারতেন না, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বেগম মুজিবের কাছে তারা গোপনে এসে বলে যেতেন। বেগম মুজিবও সেগুলো শুনে বুঝতে পারতেন এরমধ্যে কোনটি বঙ্গবন্ধুকে জানানো প্রয়োজন, কোনটি জানানোর প্রয়োজন নেই।
দুটো ঘটনা এখানে তুলে ধরলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। প্রথমত, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা চলছিল। বঙ্গবন্ধু কারাগারে ছিলেন। তখন ছয় দফা ভিত্তিক ১১ দফার আন্দোলন তুঙ্গে। পাকিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে আইয়ুববিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে উঠে যায়। ওই সময় আইয়ুব খান একটি গোলটেবিল বৈঠক আহ্বান করেন। তখন আওয়ামী লীগ নেতারা বললেন বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া (অবশ্য তখনও বঙ্গবন্ধু হননি শেখ মুজিব) গোলটেবিল বৈঠক করবেন না। ওই সময় বলা হলো বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে নিয়ে যাবেন আলোচনার বৈঠকে। ওই সময় ফজিলাতুন নেছা মুজিব এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। প্যারোলের কথা উঠলে তিনি সামরিক ছাউনিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে হুঁশিয়ার করে বলেন, গোলটেবিল বৈঠকে প্যারোলে যাওয়া ঠিক হবে না। প্যারোলে গেলে সেটা জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা হয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধু কিন্তু বেগম মুজিবের কথা মেনে নিয়েছিলেন এবং পাকিস্তানি শাসকচক্রকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন তিনি প্যারোলে যাবেন না। দেখা গেলো পরে পাকিস্তানি শাসকচক্র নতি স্বীকার করে ১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা তুলে নিয়ে বঙ্গবন্ধুসহ সব রাজবন্দিকে মুক্তি দেয়। এরপর ২৩ জানুয়ারি এ দেশের ছাত্রসমাজ রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক সংবর্ধনা দেন এবং জাতির পক্ষ থেকে তোফায়েল আহমেদ তাকে বঙ্গবন্ধু খেতাবে ভূষিত করেন।
দ্বিতীয় ঘটনা হচ্ছে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের সময়কার। ওই সময় বঙ্গবন্ধু একের পর এক বৈঠক করছিলেন, ৭ মার্চে ভাষণে কী বলবেন তা নিয়ে। তিনি রাজনৈতিক শীর্ষ নেতাদের সাথে একাধিকবার বসলেন। কী বক্তব্য দেবেন তার ড্রাফট তৈরির জন্য একটি কমিটিও করা হলো। তারা একটি ড্রাফট বঙ্গবন্ধুকে দিয়েও ছিলেন। পাশাপাশি ছাত্রনেতারা বঙ্গবন্ধুর সাথে সাক্ষাৎ করে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। ওই সময়টা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পুরো রেসকোর্স ময়দান ঘিরে রেখেছিল। ওপরে হেলিকপ্টার উড়ছিল, সেখানে বক্তৃতার এদিক-ওদিক হলে হামলা চালাবে। স্বাধীনতার ঘোষণা এলে হামলা চালাবে এমন পরিকল্পনা ছিল। লক্ষ লক্ষ লোকের সমাবেশে হামলা হলে তা আরেকটা জালিয়ানাবাগের ঘটনা ঘটবে। ৭ মার্চ সমাবেশে আসার আগে সবার সঙ্গে আলোচনা শেষ করে বঙ্গবন্ধু তাঁর বাসার দোতলায় গেলেন। তার গায়ে সামান্য জ্বর ছিল। দুপুরে খানা খেয়ে একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। বেগম মুজিব তাঁর সেবা করলেন।
সেই সময় বঙ্গবন্ধু বেগম মুজিবকে জিজ্ঞাস করলেন, ‘বলো তো কী করি?’ তখন বেগম মুজিব স্পষ্ট বললেন, দেশের মানুষ তোমার দিকে তাকিয়ে আছে। সারা দেশ আজ তোমার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ অফিস ছেড়ে বেরিয়ে আসছে। শত শত মানুষকে পাকিস্তানিরা গুলি করছে। মানুষ মারা যাচ্ছে। ঠিক তুমি তাদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য তাদের মনের কথার প্রতিফলন ঘটিয়ে তোমার বিবেক যা বলে তাই বলবে। তোমার কারও কথা শোনার দরকার নেই। তোমার বিবেকের কথা তুমি শুনবে এবং সেভাবে বক্তৃতা দেবে।
আপনারা দেখবেন বঙ্গবন্ধু কোনও ড্রাফট বা স্লিপ নিয়ে যাননি। তিনি মঞ্চে উঠলেন এবং ভাষণ দিলেন। সেই ভাষণটি আজ ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ৭ মার্চের ভাষণটি বঙ্গবন্ধুর একান্তই নিজের কথা, বিবেকের কথা। সহধর্মিণী বেগম মুজিবের কথামতো সেই বিবেকের কথাগুলো বলেছিলেন। সেই ভাষণেই তিনি দেশের মুক্তি-সংগ্রামের সমস্ত গাইডলাইন দিয়েছিলেন।
বেগম মুজিব ছিলেন অত্যন্ত ধৈর্যশীল নারী। মা-বাবা এবং দাদা তিন জনকে হারিয়েছেন শিশুকালেই। খেলাধুলা করার বয়সে তার বিয়ে হয়েছে। বালিকা অবস্থায়ই তার বিয়ে হয়। ওই সময়ই তিনি সবার মন জুগিয়ে চলেছেন। সবার স্নেহ পেয়েছেন। তিনি আস্তে আস্তে বড় হয়েছেন। তিনি ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত টুঙ্গিপাড়ায় থেকেছেন। বঙ্গবন্ধু সেখানে মাঝে মাঝে আসতেন। সেই সময় অত্যন্ত ধৈর্যশীলভাবে বেগম মুজিব পরিবার-পরিজন নিয়ে সময় কাটিয়েছেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার তিনটি সন্তানের জন্ম সেখানে হয়েছে। তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে যখন কারাগারে দেখা করতে গিয়েছেন, তাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন ত্যাগ স্বীকারের। আর নিজে ত্যাগ স্বীকার করেছেন সংসার চালাতে গিয়ে। সংসারের যে উত্তাপ তিনি তা বঙ্গবন্ধুর গায়ে লাগতে দেননি। যার জন্য বঙ্গবন্ধু সংসারের দুশ্চিন্তা ছাড়াই কারাবরণ করতে পেরেছিলেন। দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে পেরেছিলেন।
খালাম্মার (বেগম মুজিব) সঙ্গে টুঙ্গিপাড়া ছিলাম ’৫৪ সাল পর্যন্ত। আবার ১৯৬২ সাল থেকে পঁচাত্তর পর্যন্ত ঢাকায় ৩২ নম্বরের বাড়িতে তার সঙ্গে থেকে লেখাপড়া করেছি। রাজনীতি করেছি। বঙ্গবন্ধুর পদপ্রান্তে থেকে রাজনীতি করার যে দুর্লভ সুযোগ আমি পেয়েছিলাম সেটা আমার খালার জন্যেই। এই সময় আমি দেখেছি বেগম মুজিব ছিলেন ধৈর্য ও বিশ্বস্ততার প্রতিমূর্তি। তিনি ছিলেন সহযোগিতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। তিনি একাধারে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী, অন্যদিকে ছিলেন স্বার্থ বিসর্জনকারী নারী। ছিলেন আদর্শ মা। আবার রাজনৈতিক অঙ্গনেও রেখেছিলেন ভূমিকা।
আমি এভাবে দেখি যে বেগম মুজিব না থাকলে শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গবন্ধু ও পরবর্তীতে জাতির জনক হতে পারতেন কিনা তা বিরাট প্রশ্ন, উপলব্ধির বিষয়। আমরা দেখেছি তার দুটি সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের অনুমতি দিয়েছেন। যে মা তার দুটি সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধে পাঠাতে পারেন– তিনিও তো বীর।
তার মধ্যে মানবিক গুণাবলির স্ফুরণ ঘটেছিল। বেগম মুজিব কেবল নিজের পরিবারকে দেখেছেন তা নয়। আমরা যারা তার আত্মীয়-স্বজন ছিলাম, আমাদের সবার তিনি খোঁজ নিতেন। তিনি ঈদের আগে সবার জন্য কিছু না কিছু সামগ্রী পাঠাতেন। এমনকি তিনি টুঙ্গিপাড়ায় আমাদের বাড়ির কাজের লোকজনদের জন্যও জামাকাপড় ও সামগ্রী নিয়ে আসতেন। যতদিন পিতামাতা বেঁচে ছিলেন ততদিন সাধারণত বঙ্গবন্ধু ঢাকায় থাকলেও ঈদ করতেন টুঙ্গিপাড়ায়। এই সময়ে বেগম মুজিব আমাদের সবার জন্য ঈদের উপহার নিয়ে আসতেন। আমাদের গরিব আত্মীয়-স্বজনদের একটা আশ্রয়। শেষ ভরসাস্থল ছিলেন বেগম মুজিব। তিনি সবাইকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করতেন। এমনকি কোনও কোনও ক্ষেত্রে সন্তানদের বঞ্চিত করে গরিবদের দিয়েছেন।
বেগম মুজিব ছিলেন বঙ্গবন্ধুর যোগ্য সহধর্মিণী। এ রকম একজন সহধর্মিণী কোনও রাজনীতিবিদের পাওয়া একান্তই ভাগ্যের ব্যাপার। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই মহীয়সী নারীর কথা খুব কমই এসেছে। অবশ্য এখন মানুষ আস্তে আস্তে কিছুটা জানতে পারছেন। বঙ্গবন্ধুর ভাগ্যের সঙ্গে একদিন যে শিশু জড়িত হয়েছিল, সেই অবুঝ শিশু, অবলা ও অনাথ মেয়েটি কালের চক্রে মহাকালের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রধান চালিকা শক্তিরূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন। নীরবে এই নারী তার স্বামীর, দেশের, সন্তানদের, শ্বশুর-শাশুড়িসহ সবার পরিচর্যা করেছেন। তিনি সন্তানদের জন্য ছিলেন স্নেহময়ী মাতা, আমার জন্য ছিলেন স্নেহময়ী খালা। আমি তার অকৃপণ স্নেহ পেয়েছি। সেই স্নেহ পেয়েছিলাম বলেই আমার রাজনীতি ও শিক্ষাদীক্ষা করতে পেরেছি।
বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তিনি পাড়ি দিয়েছেন দুর্গমগিরি। পার করেছেন অত্যন্ত কঠিন দিন। তীক্ষ্ণ বুদ্ধি ও দক্ষতার অধিকারী এই মহীয়সী নারী পরিণত বয়সে পরিণত হয়েছিলেন কেবল বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী’ই নন তার একজন পরামর্শদাতা, সাহায্যকারী ও সহযোগী হিসেবে। তিনি ছিলেন অত্যন্ত নিরহংকার। ছিলেন নিজেকে গুটিয়ে রাখার পক্ষে। তিনি জানতেন তার কর্তব্য কী? জানতেন তার সীমারেখা কী? সীমারেখার বাইরে তো তিনি কোনও দিন যাননি। বরং তিনি অধিকার ও প্রাপ্যটা নেওয়ার চিন্তা করেননি।
প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী হয়েও ৩২ নম্বরের বাড়িতে তিনি থেকেছেন। গণভবনে যাননি। প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী হিসেবে যেভাবে দেখার প্রত্যাশা করা হয় তার ক্ষেত্রে তা দেখা যায়নি। তার পতিপ্রেম, সহনশীলতা, একাগ্রতা, দূরদর্শিতা, সাহসিকতা, তীক্ষ্ণবুদ্ধিতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, বিচক্ষণতা এবং দেশপ্রেম তাকে প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধুর মতোই অমরত্ব দান করে গেছে। সম্পদের প্রতি তার কোনও লোভ ছিল না। তিনি ছিলেন প্রচারবিমুখ। তার লোভ ছিল না আত্মপ্রচারের। তিনি সব সময় নিজেকে গুটিয়ে রাখতেন। তিনি অতি সাধারণ জীবনযাপন করতেন। তিনি আটপৌরে শাড়ি পরতেন। তার ব্যবহার্য জিনিসপত্র সবই ছিল এ দেশীয়। খুবই পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন। তিনি অল্প দামের একটি পোশাক গায়ে জড়ালে সেটা দামি হয়ে উঠতো ব্যক্তিত্বের কারণে। তিনি চিন্তাচেতনা ও কর্মে ছিলেন খাঁটি বাঙালি নারী। একজন বাঙালি গৃহবধূ হিসেবে তিনি পান খেতেন। পান ছিল তার খুবই প্রিয়।
এই খাঁটি বাঙালি নারী ঘরে থাকার কারণেই বঙ্গবন্ধু সম্ভবত বাঙালিকে উদ্বুদ্ধ করে সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জাতিরাষ্ট্র তৈরি করতে পেরেছিলেন। সবাই যদি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তার সহধর্মিণীর মতো দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয় তাহলে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গুণগত পরিবর্তন আসবে। জীবনে বেগম মুজিব ছিলেন বঙ্গবন্ধুর সহযাত্রী- মরণেও হলেন তার সহযাত্রী। জন্ম ও শাহাদাৎবার্ষিকীতে এই মহীয়সী নারীকে স্মরণ করছি। আমার খালাকে স্মরণ করছি। তাকে স্মরণ করছি জাতির একজন ত্রাণদাতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর যোগ্য সহধর্মিণী রূপে। স্মরণ করছি জাতীয় জীবনে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে। আজকের এই দিনে বঙ্গবন্ধু ও তার সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ তাদের পরিবারের সদস্য ও ১৫ আগস্ট শাহাদাৎবরণকারী সবার রুহের মাগফিরাত কামনা করি। আল্লাহ যেন তাদের জান্নাতবাসী করেন।
লেখক: সাবেক ছাত্রলীগ নেতা; মহাসচিব, জাতীয় পার্টি (জেপি); (শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ভাগ্নে) অনুলিখন: এমরান হোসাইন শেখ
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১৩১ বার