পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের ডিও লেটারে সায় দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। নগরের আরও ১১টি রাস্তার প্রায় ১৫ কিলোমিটার সড়কের ওপরে ঝুলন্ত বিদ্যুতের লাইন ভূগর্ভে যাবে। এর আগে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলেন। দেশের কোথাও নেই ভূগর্ভে বিদ্যুৎ লাইন। কিন্তু সিলেট নগরীতে ২০১৯ সালের প্রথম দিকে এ কার্যক্রমের শুরু করা হয়েছিল। এক বছরের মাথায় হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার এলাকার সড়কের ওপরে থাকা খুঁটি সরিয়ে মাটির নিচ দিয়ে সংযোগ চালু করা হয় বিদ্যুতের। জঞ্জালবিহীন হয় নগরীর আম্বরখানা থেকে বন্দরবাজার এবং পূর্ব-পশ্চিম জিন্দাবাজার এলাকার রাস্তা। রাস্তাটি এখন গোটা দেশের মধ্যে মডেল।
এ দুটি রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার পর আরও ১১টি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার নিচ দিয়ে লাইন নিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। কিন্তু প্রস্তাবটি ঝুলে ছিল মন্ত্রণালয়ে। গত সোমবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের এমপি ড. একে আবদুল মোমেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে এ সংক্রান্ত আরেকটি চিঠি পাঠান। ওই চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে পিডিবি কর্তৃক সিলেট মহানগরীতে চলমান আন্ডারগ্রাউন্ড বিদ্যুৎ কেবল স্থাপন প্রকল্পের ডিপিপি রিভাইসড করা হচ্ছে এবং রিভাইসড ডিপিপিতে মহানগরীর প্রধান প্রধান ১১টি সড়ক (যার দৈর্ঘ্য ১৪.৬৬ কিলোমিটার) অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রস্তাব প্রেরণ করেছেন।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে গত ৪ঠা জুলাই পুরো সিলেট মহানগরের বিদ্যুৎ লাইন মাটির নিচ দিয়ে স্থাপন করার জন্য প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদকে আমি পত্র প্রেরণ করেছিলাম। এই অবস্থায়, আমার নির্বাচনী এলাকা সিলেট মহানগরীর সংযুক্ত তালিকায় উল্লিখিত এলাকাসমূহে মাটির নিচ দিয়ে বৈদ্যুতিক তার সংযােগ স্থাপন এবং পরবর্তীতে পুরো সিলেট মহানগর এলাকার বিদ্যুৎ লাইন মাটির নিচে আনার জন্য আপনাকে বিশেষভাবে অনুরােধ করছি।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চিঠি অনুযায়ী- প্রথম পর্যায়ে সিলেটের সাড়ে ১৫ কিলোমিটার রাস্তায় টানা হবে ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক লাইন। এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ডিও লেটারের পর গতকাল মঙ্গলবার বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প (বিউবো) বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সিলেটের ওই প্রকল্প বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের নজরে আনা হয়েছে প্রকল্পটি। এ বিষয়ে বিউবোর প্রকল্প পরিচালক পল্লবী জামান জানিয়েছেন, বৈঠকে ১১টি রাস্তার প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বিষয়টি এখনো প্রক্রিয়াধীন আছে। তবে ইতিবাচক ফলাফল আসার সম্ভাবনা বেশি। ঊর্ধ্বতনদের সিদ্ধান্তের আলোকে পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো যাবে বলে জানান তিনি।
তিনি জানান, প্রথম সিলেট নগরীতে ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭ কিলোমিটার রাস্তার ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন টানার প্রকল্প শুরু হয়। পরবর্তীতে কাজের এলাকা বেড়ে যাওয়ায় বাজেটের চাইতে খরচ বেশি হওয়ায় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছিল। এসব বিষয় নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে- ২০১৯ সালের জুলাইয়ে ‘সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন’ শীর্ষক ২ হাজার ৫৩ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এ প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিকভাবে ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর কিছু এলাকার বিদ্যুৎ লাইন ভূগর্ভে স্থানান্তরের কাজ শুরু হয়। বিউবোর অর্থায়নে ও সিলেট সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে প্রায় ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে পরীক্ষামূলক প্রকল্পে নগরীতে ১১ কেভি ২৫ কিলোমিটার, শূন্য দশমিক ৪ কেভি ১৮ কিলোমিটার ও ৩৩ কেভি ২ সার্কিট কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করা হবে।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
৮৭ বার