তারিক চয়ন-বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মধ্যে নিঃসন্দেহে ফেসবুকই সবচেয়ে জনপ্রিয়। তরুণদের একটি বড় অংশ দিনের অনেকটা সময় ফেসবুকে কাটান। সুতরাং তরুণরা কি চান বা কি চান না তা বুঝতে ফেসবুক হলো গুরুত্বপূর্ণ এক প্ল্যাটফরম।
প্রত্যেক ফেসবুক ব্যবহারকারীকে তার প্রোফাইলে নিজের সম্পর্কে কিছু তথ্য দিতে বলা হয়। সেগুলোর মধ্যে একটি হলো রাজনৈতিক দর্শন, অর্থাৎ ওই ব্যবহারকারী রাজনৈতিকভাবে কোনো মতাদর্শে বিশ্বাস করেন। ফেসবুকে বেশির ভাগ তরুণই নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শ গোপন করে রাখেন। যারা গোপন করেন না তাদের একটি বড় অংশই লিখেন ‘আমি রাজনীতি পছন্দ করি না’ কিংবা ‘রাজনীতি আমার কাজ নয়’। সেখানে অনেকে ‘আদার ব্যাপারীর জাহাজের খবর নিয়ে লাভ কি?’ জাতীয় মন্তব্য যেমন লিখেন, আবার অনেকেই রাজনীতি নিয়ে বাজে মন্তব্যও করে থাকেন। সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত এমন অনেক তরুণকেই কেবল ‘আমি এই (নিজের পছন্দের দলের নাম) দল করি’ জাতীয় মন্তব্য লিখতে দেখা যায়। সুতরাং সাধারণভাবে দেখা যায়, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম রাজনীতি নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন।
অতীতে যেমন তরুণদের অনেকেই রাজনীতিতে আসতে চাইতেন হাল আমলে সে রকম সক্রিয় রাজনীতিবিদ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। হালুয়া রুটির ভাগ নিতে আসা তথাকথিত তরুণ রাজনীতিবিদদের অবশ্য গোনায় ধরে লাভ নেই। সবচেয়ে ভয়ানক বিষয় রাজনীতিতে আসা দূরে থাক, অনেক তরুণই রাজনীতিকে এবং রাজনীতিবিদদের ঘৃণা করেন। আরও ভয়ানক তারা সেটা প্রকাশ্যে স্বীকার করতেও কুণ্ঠাবোধ করেন না!
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী এ প্রসঙ্গে ২০১৫ সালে তার এক কলামে লিখেছিলেন, ‘সহিংস কর্মকাণ্ডের কারণে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে তরুণ সমাজ দুই দল এবং রাজনীতির প্রতি বিমুখ হয়ে উঠছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তরুণেরা সে রকম মন্তব্যই করে যাচ্ছে। বিষয়টি দেশের রাজনীতির জন্য ভালো কোনো সংবাদ বহন করে না। সবচেয়ে বড় কথা, আমাদের রাজনীতিতে বর্তমানে অনুকরণীয় কেউ নেই। সেই অবস্থায় দুই দলের সংঘাত দেশকে আরও বেশি করে নেতৃত্বশূন্যতার দিকে ঠেলে দেবে।’
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও নেতৃত্বসহ রাজনীতির সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও অনেক নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে অনেক অলঙ্ঘনীয় বাস্তবতাকে জনগণ মেনে নিলেও তাদের হতাশার জায়গাও কম নয়। মানুষ দেখতে পাচ্ছে, নব্বইতে স্বৈরাচার উৎখাতের পর দেশে গণতান্ত্রিক চেতনা ও সংস্কৃতি বিকাশের সম্ভাবনা সৃষ্টির পরও ইতিবাচক ধারায় পরিবর্তনের গতি অত্যন্ত ধীর। এ ব্যাপারে রাজনীতিবিদ ও সামাজিক নেতৃত্বের উদাসীনতা ও উদ্যোগের অভাবে তারা অনেক বেশি আশাহত। এতে অধিকাংশ মানুষ দেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। আত্মপ্রচারের সংস্কৃতি, দ্বি-দলীয় বিভাজন, ক্ষমতাকেন্দ্রিক মানসিকতা, রাজনীতিতে ধর্মীয় প্রভাব, আদর্শহীনতা, দুর্বৃত্তায়ন ও পৃষ্ঠপোষকতার সংস্কৃতি এই শঙ্কার পেছনে অন্যতম কারণ।
একথা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই যে, নির্বাচন সুষ্ঠু কিনা তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকলেও নব্বইয়ের পর (এক এগারো বাদে) প্রতি ৫ বছর পরপর দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং সেগুলোর সবগুলোতেই বড় দলগুলো (২০১৪ বাদে) অংশ নিচ্ছে। কিন্তু এসব নির্বাচন নিয়েও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে তেমন এমটা উত্তেজনা কাজ করে না যতোটা না কাজ করে বহুদূরের দুই অপরিচিত দেশের মধ্যে ৪ বছর পর পর অনুষ্ঠিত ফুটবল ম্যাচ নিয়ে!
এই রসায়ন বুঝতে হলে, তরুণ প্রজন্মকে ঢালাওভাবে দোষারোপ না করে এর মূলে যেতে হবে। কারণ তরুণেরা ধরেই নিয়েছেন, নির্বাচনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জীবনমানের তেমন কোনো বড় ধরনের পরিবর্তন হবে না, হবে শুধু ক্ষমতার পালাবদল।
এ ছাড়া নির্বাচনকেন্দ্রিক কিংবা সাধারণ সময়ে অনুষ্ঠিত অনেক আন্দোলনের তিজ্ঞ অভিজ্ঞতাও তরুণ প্রজন্মের রাজনীতিবিমুখতার কারণ। উদাহরণস্বরূপ- এক/এগারোর আগের লগি-বৈঠা আন্দোলন, এক/এগারোতে সব বড় রাজনৈতিক দলের বাঘা বাঘা নেতাদের জেলে যাওয়া, ২০১৩ সালে শাহবাগে যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে সমাবেশ এবং শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশ, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনকেন্দ্রিক এবং পরের বছরের জ্বালাও পোড়াও, নিকট অতীতে ২০১৮ সালের নির্বাচনকেন্দ্রিক বিভিন্ন সহিংসতা দেখেও তরুণদের অনেকে ভীত হয়ে কিংবা বীতশ্রদ্ধ হয়ে রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
তরুণরা দেখতে পাচ্ছেন, আজ যাকে রাজনৈতিক দলগুলো হিরো বানাচ্ছে, কালই তাকে ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে! কাল যে ছিল তার কাছে রোল মডেল, আজ সে রীতিমতো বড় মাপের ভিলেন! আজ যে নেতা অমুক দলের আদর্শের কাছে ‘মাথা নত’ করে সেই দলে যোগ দিয়েছে, কালই সে ওই দল থেকে বেরিয়ে তাকে গালমন্দ করছে। নির্বাচনে আগে যে রাজনৈতিক দল বড় কোনো দলের সঙ্গে জোট বেঁধেছে, নির্বাচনের ফল ঘোষণার আগেই সেই দল তাকে খারাপ বলছে। সকালে যে নেতা নির্বাচনে যাবো বলছেন, বিকালে তিনি ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না’ বলে রাতেই আবার নির্বাচনের পক্ষে সাফাই গাইছেন। চোখের সামনে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর এমনকি অনেক ‘বরেণ্য’ বা বয়োজ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদদের ‘দুই নম্বরি’তে তরুণ প্রজন্ম এখন অভ্যস্ত। তাদের কাছে রাজনীতিবিদরা হয়ে যাচ্ছেন খল অভিনেতা কিংবা কমেডিয়ান। সে কারণেই অনেক রাজনীতিবিদদের ‘অনন্ত জলিল’ কিংবা ‘হিরো আলম’-এর সঙ্গে জড়িয়ে ব্যাপকভাবে ট্রোল করা হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
রাজনীতি বা রাজনীতিবিদদের উপর তরুণদের বিরক্তির উদ্রেক হওয়ার পেছনে অন্যতম আরেকটি কারণ রাজনীতিবিদদের অযাচিত, অশালীন কথাবার্তা। কেবল নিজ দলের শীর্ষ নেতাকে খুশি করার জন্য কিংবা কেবল ব্যক্তিগত আক্রোশের জায়গা থেকে কিংবা কেবলই আত্মপ্রচারের জন্য অনেক রাজনীতিবিদ ঢালাওভাবে মিথ্যা কথা বলে, মুখ খারাপ করেন। তারা বুঝেন না তরুণ প্রজন্ম এসব নিয়ে ফেসবুকে হাসিঠাট্টা করলেও প্রকৃতপক্ষে এসব ভালোভাবে নেয় না। তাছাড়া আজকাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কারণে সবাই জানেন সত্যটা কি। নিজ মুখে মনগড়া ইতিহাস রচনা করে দিলেই যে তরুণ প্রজন্ম তা মেনে নেবে- সেটা ভাবা আর বোকার স্বর্গে বসবাস করা একই কথা। গতকাল এক তথ্য দিয়ে আজ সম্পূর্ণ ভিন্ন তথ্য প্রচার করবেন, তাতেও লাভ নেই। সবকিছুরই রেকর্ড থেকে যাচ্ছে।
এতসবের পরও হাল আমলে তরুণ প্রজন্মের অনেকে রাজনীতিতে এসে আলোচিত হলেও তাদের প্রায় সবাই রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। কিন্তু তাদের অনেকেই তুমুল জনপ্রিয়তা লাভের পরও রাজনীতি থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন যা দেখে তাদের ভক্ত-অনুসারী অনেক তরুণ রাজনীতির প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলছেন। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলেও কিছুদিন পর পদত্যাগ করেন বা করতে বাধ্য হন। সাবেক মন্ত্রী নাজিউর রহমান মঞ্জুর ছেলে, সাবেক এমপি, তুমুল জনপ্রিয় বক্তা, ‘স্মার্ট রাজনীতিবিদ’ হিসেবে পরিচিত ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ প্রায় দুই দশক বিএনপি জোটের সঙ্গে থেকে এক পর্যায়ে নিজ দল নিয়ে জোট থেকে বেরিয়ে যান বা বেরিয়ে যেতে বাধ্য হন। বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামে যোগদানের দেড় বছরের মাথায় দলটি ছাড়ার ঘোষণা দেন বা দিতে বাধ্য হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে, বিশ্বব্যাংকের লোভনীয় চাকরি ছেড়ে দেশে রাজনীতি করতে আসা ড. রেজা কিবরিয়া।
বিএনপিতে ঢাকার সাবেক মেয়র, প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন প্রেস ক্লাব এলাকায় নিজ কর্মীকে পুলিশের হাত থেকে উদ্ধার করে ব্যাপক আলোচনায় এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলাল উদ্দীনের ছেলে শেখ তন্ময় বেশ অল্প বয়সে জাতীয় সংসদের সদস্য হয়েছেন। কিন্তু তাদের পথচলা শুরু মাত্র। দিতে হবে বহুপথ পাড়ি। তাছাড়া দু’ একটি ঘটনা দিয়ে তাদের জনপ্রিয়তা মাপতে রাজি নন রাজনৈতিক সচেতন মহলও।
তবে এটা ঠিক, অনেকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকটকে হঠাৎ সৃষ্ট কোনো সংকট বলে মনে করেন না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে মুক্তিযুদ্ধ ও এরপর ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার কারণে যেসব অমীমাংসিত ইস্যু রয়েছে সেসব ইস্যুর সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এই সংকট থাকবে বলে তাদের মত। আসলে এসব বিষয় নিয়ে দেশের শুধু রাজনীতিবিদ নন, সাধারণ মানুষের মধ্যেও দুটি ধারা লক্ষণীয়। কিন্তু রাজনীতিবিদরা এসব ইস্যু নিয়ে খুব একটা সৎ নন। তাদের কারও কারও অবস্থান যেমন অস্পষ্ট তেমনি কেউ কেউ নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে এসব ইস্যুকে ব্যবহার করছেন দিনের পর দিন। ফলে সংকট দীর্ঘায়িত হচ্ছে এবং এর সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সংকট বজায় থাকবে। আর সে সংকটের কারণে তরুণ প্রজন্মের একটা বড় অংশ রাজনীতিবিমুখ হয়েই থাকবে।
তাছাড়া এসব দেখে অনেক তরুণ মনে করছেন, রাজনীতি হলো ক্ষমতায় যাওয়ার প্রতিযোগিতার এক দৌড়। এর সঙ্গে সাধারণ মানুষের কোনো সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশের রাজনীতি কেবল নিজের জন্য, মানুষের জন্য নয়। নির্বাচন হলে হবে। কিন্তু তাতে সাধারণ মানুষের কিছু হবে না। হবে শুধু ক্ষমতার পালাবদল। কারণ রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে চিন্তার যে বন্ধ্যত্ব, তাদের মধ্যে ক্ষমতার যে মোহ এবং নির্বাচনকেন্দ্রিক যে রাজনীতি তাতে আশার কোনো জায়গা নেই।
তরুণদের অনেকেই মনে করেন, রাজনৈতিক চিন্তার বন্ধ্যত্বের কারণে দেশ আজ গভীর সংকটে। খুব সহজেই বা সহসাই এই সংকট থেকে উত্তরণ ঘটবে না। সেজন্য দেশের রাজনীতিতে যেমন প্রয়োজন গুণগত পরিবর্তন, তেমনি প্রয়োজন সৎ এবং যোগ্য নেতৃত্ব। দেশের রাজনীতির বর্তমান অবস্থা, তরুণ প্রজন্মের রাজনীতিবিমুখতার কারণ এবং এ থেকে উত্তরণের উপায় সম্পর্কে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দও মুখ খুলেছেন।
গেল বছর এক অনুষ্ঠানে প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি নেতা, বর্ষীয়ান আইনজীবী ও লেখক ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ দেশে সৎ রাজনীতিবিদের অভাব বলে মন্তব্য করে বলেছিলেন, ‘আজ দেশপ্রেমের যে অভাব, প্রতিবাদ করার যে শক্তি আমরা হারিয়ে ফেলেছি-এর চেয়ে চরম দুর্ভাগ্য একটি স্বাধীন দেশের জন্য হতে পারে না। আজকে যে জাতীয় সংকট- সৎ মানুষের অভাবের সংকট। সৎ রাজনীতিবিদের অভাবের সংকট। মিথ্যাচার এখন সত্যাচারে পরিণত হয়েছে। মিথ্যাচারের সংস্কৃতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রকট আকারে ধারণ করেছে।’
গেল বছরের শুরুতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘রাজনৈতিক দ্বিধাবিভক্তি এখন চরমে, যা রাজনীতি ও গণতন্ত্রের জন্য অশুভ। রাজনীতিতে সৌজন্যে বিল বোর্ড-পোস্টার- ফেস্টুন থাকলেও সৌজন্যবোধ হারিয়ে গেছে।
রাজনীতিতে খুবই খারাপ সময় চলছে, ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি। রাজনীতি ক্রমেই পক্ষপাতিত্ব হয়ে যাচ্ছে। রাজনীতি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। রাজনীতিকরা এখন সামাজিক অনুষ্ঠান এবং মৃত্যুর সংবাদ শুনেও সেখানে যেতে অনীহা প্রকাশ করেন। এটি রাজনীতি এবং গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। এ থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।’
২০১৭ সালে অন্য আরেকটি অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের অনেকটাই ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের সুরে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে সততার অভাব রয়েছে। সততার ঘাটতি পূরণ করতে হলে সৎ মানুষদের রাজনীতিতে নিয়ে আসতে হবে। ভালো মানুষ রাজনীতিতে আসলেই রাজনীতি ভালো হয়ে যাবে। ভালো মানুষ রাজনীতি না করে দূরে সরে গেলে খারাপ লোকেরা রাজনীতির মঞ্চ দখল করবে, এমপি-মন্ত্রী হবে। তারা দেশ চালাবে কিন্তু তাতে দেশের ভালো হবে না। রাজনীতিতে যত ভালো মানুষ আসবে, এমপি-মন্ত্রী হবে তখন রাজনীতি জনগণের কাছে আকর্ষণীয় হবে।’
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ইতিবাচক পরিবর্তনে রাজনীতিবিদদের যেমন দায়িত্ব রয়েছে, তেমনি নাগরিকদেরও রয়েছে করণীয়। তাছাড়া দেশের সংকট উত্তরণের জন্য মানুষ এখনো রাজনীতিবিদদের উপরই বেশি আস্থাশীল বলেও তারা মনে করেন।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১৪৩ বার