বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, চন্দ্রিমা উদ্যানে কী কারণে মাতম করেন? কাঠের বাক্সের মধ্যে জিয়াউর রহমানের লাশ ছিল সেটি প্রমাণ করুন? চট্টগ্রাম থেকে যে কাঠের বাক্সটি এসেছিল সেই বাক্স তার স্ত্রী খালেদা জিয়াকেও খুলে দেখানো হয়নি। একটি কাঠের বাক্স দাফন করা হয়েছিল শুধুমাত্র।

শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ আয়োজিত এক স্মরণ সভায় ওবায়দুল কাদের এ সব কথা বলেন। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব স্মরণে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

১৫ আগস্টকে খুঁজতে গেলে আমাদেরকে একাত্তরকে খুঁজতে হবে জানিয়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘সেদিন স্বাধীন বাংলা সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল কারা? সেদিন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে মুখ থুবড়িয়ে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছিল কারা? কারা সেদিন পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দাদের প্রতিযোগী হিসেবে ভিতরে ঢুকে পড়ে মুক্তিযুদ্ধকে বিপদগ্রস্ত করতে চেয়েছিল, সেই সামরিক অফিসার কারা? সেদিন বাংলাদেশকে পাকিস্তানের ফেডারেশন করতে চেয়েছিল এই জিয়া-মোশতাকরা।’

আগস্ট মাস এলে মির্জা ফখরুলদের বুকে থরথর কাঁপন আসে দাবি করে নানক বলেন, ‘থরথর করে কাঁপেন। এই আগস্ট মাস শোকাবহ মাস। এই মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ ‍মুজিবকে সপরিবারে হত্যা করে নির্বাচিত সাংবিধানিক সরকারকে উৎখাত করে সেদিন আপনাদের জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল। হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করেছিল। যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল তাদেরকে নিরাপদে বিশেষ বিমানযোগে গার্লফেন্ডসহ তাদের কারা বিমানযোগে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছিল? সেই জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিভিন্ন দূতাবাসে ফাস্ট সেক্রেটারি সেকেন্ড সেক্রেটারি হিসেবে পুরস্কৃত করেছিল।’

মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সব কিছু উন্মুক্ত হয়ে গিয়েছে। গতকাল একটি আলোচনা সভায় কী বলেছেন? এটি একটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ছিল? বাংলাদেশে ২১ শে আগস্টে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল এই খালেদা জিয়া, তার কুলাঙ্গার পুত্র তারেক রহমান আর মতিউর রহমান নিজামীরা, এটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট।’

২১ শে আগস্টে আর্জেস গ্রেনেড পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ব্যবহার করে। পাকিস্তানের ফ্যাক্টরিতে এটি তৈরি হয়। সেই গ্রেনেড কীভাবে বাংলাদেশে এলো তার জবাবও চান জাহাঙ্গীর কবির নানক।

তিনি আরও বলেন, ‘হত্যাকান্ড ঘটালেন, সারাদিন কোনো পুলিশ ছিল না। তারপর আমরা যখন উদ্ধার করতে গেলাম তখন আমাদের ওপর পুলিশ অতর্কিত টিয়ারগ্যাস লাঠিচার্জ করে হামলা করল কেন? কেন সেদিন লাশ গুম করতে চেয়েছিলেন? কিন্তু জনতার বাধায় আপনারা সেদিন লাশ গুম করতে পারেননি।’

জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘চন্দ্রিমা উদ্যানে মাতম করেন। কী কারণে মাতম করেন? এই লাশ কার ছিল? ওই কাঠের বাক্সের মধ্যে জিয়াউর রহমানের লাশ ছিল প্রমাণ করেন? আমি চ্যালেঞ্জ করছি ওই লাশ চট্টগ্রাম থেকে যে কাঠের বাক্সটি এসেছিল সেই বাক্স খুলে তার স্ত্রী খালেদা জিয়াকেও খুলে দেখানো হয়নি। একটি কাঠের বাক্স দাফন করা হয়েছিল শুধুমাত্র। চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের কোন লাশ আছে বলে আমরা বিশ্বাস করি না।’

ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয় ছাত্রলীগের অতীতের বিভিন্ন ভূমিকার প্রশংসা করে নানক বলেন, ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে গেরিলা বাহিনীর দায়িত্ব পালন করেছে বঙ্গবন্ধুর ছাত্রলীগ। এই ছাত্রলীগ শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরে আনার অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এক/এগারোর সময় বঙ্গবন্ধু কন্যাকে গ্রেফতারের সময় সবচেয়ে প্রথম প্রতিবাদী হিসাবে দাঁড়িয়েছিল। স্বৈরাচারি জিয়াউর রহমানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দেয়নি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টচার্য।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn