আল-হেলাল,সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : হিন্দুদের সর্ব বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজায় উৎসব বোনাস ও ছুটি প্রদানের দাবিতে মঙ্গলবার বেলা ১২টার সময় রেজিষ্ট্রার্ড ট্রেড ইউনিয়ন সুনামগঞ্জ জেলা হোটেল রেস্টুরেন্ট মিস্টি বেকারী শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে জেলা প্রশাসকের কার্য্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি লিলু মিয়া,সাধারন সম্পাদক পিন্টু দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক সুরঞ্জিত সেন দাস, অর্থ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম প্রমূখ ।স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, হিন্দুদের সর্ব বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা আসন্ন। এই ধর্মীয় উৎসব স্ব স্ব ধর্মাবলম্বী সকল শ্রেণী পেশার জনগণের নিকট আনন্দের বার্তা নিয়ে আসলেও হোটেল শ্রমিকদের সব সময় এই আনন্দ থেকে বঞ্চিত করা হয়। কারণ দুর্গা পুজায় হিন্দু হোটেল-রেস্টুরেন্ট মিস্টি বেকারি শ্রমিকরা কোন উৎসব বোনাস পান না। এমন কি অধিকাংশ হোটেল-রেস্টুরেন্ট শ্রমিকদের পুজায় কোন ছুটিও প্রদান করা হয় না। বরং দুর্গা পূজায় অধিকাংশ হোটেল-রেস্টুরেন্ট মিস্টি কারিগর শ্রমিকদের অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। আর যে সকল শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয় তাদের ছুটির দিনের মজুরিও দেওয়া হয় না। এছাড়া বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী প্রত্যেক শ্রমিককে উৎসব বোনাস ও ছুটি প্রদান করা আইনত বাধ্যতামূলক। অথচ হোটেল মালিকরা সরকারী আইন লঙ্ঘন করে সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে এই সকল কর্মকান্ড চালালেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নির্বিকার থাকেন। শুধু আইনগতভাবে নয় ধর্মীয় মূল্যবোধ ও মানবাধিকারের দিক থেকেও হোটেল রেস্টুরেন্ট মিস্টি বেকারী শ্রমিকদের উৎসব বোনাস ন্যায্য অধিকার।

শুধু তাই নয় শ্রম আইনে নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র, সার্ভিস বই, প্রতিবছর চাকুরীর জন্য ৪৫ দিনের গ্রাচুইটি, চাকুরীচ্যূতি জনিত ৪ মাসের নোটিশ পে,  সপ্তাহে দেড়দিন সাপ্তাহিক ছুটি, দৈনিক ৮ ঘন্টা সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টা কাজ, অতিরিক্ত কাজের জন্য দ্বিগুণ মজুরি প্রদান,বছরে ১০ দিন নৈমিত্তিক ছুটি,  ১৪ দিন অসুস্থ্যতার ছুটি, প্রতি ১৮ দিন কাজের জন্য ১ দিন অর্জিত ছুটি,১১ দিন উৎসব ছুটি প্রদানের আইন থাকলেও শ্রমিকদেরকে এই সকল আইনগত অধিকার হতে বঞ্চিত করা হচ্ছে। অথচ হোটেল মালিকরা সরকারী আইন ও চুক্তি লঙ্ঘন করে সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে এই সকল কর্মকান্ড চালালেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নির্বিকার।

শ্রম আইনে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ ও বাসস্থানের বিধান থাকলেও শ্রমিকরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করতে ও থাকতে বাধ্য হন। শ্রমিকরা দৈনিক ১০/১২ ঘন্টা অমানবিক পরিশ্রম করে অর্ধাহারে-অনাহারে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়। এমতাবস্থায় হোটেল শ্রমিকদের আসন্ন শারদীয় দুর্গা পুজায় মাসিক বেতনের সমপরিমান উৎসব বোনাস প্রদানের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn