হাকালুকি হাওরে মাছ ও হাঁস মৃত্যুর পেছনে ভারতের ইউরেনিয়াম প্রধান কারণ এমন খবরে হাওরাঞ্চল জুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র আতঙ্ক। তবে অাদৌ কি হাওরের পানিতে ইউরেনিয়ামের আলামত রয়েছে সে বিষয়ে এখনও পরিষ্কার হওয়া যায়নি। হাকালুকিতে ইউরেনিয়ামের অবস্থান রয়েছে সে বিষয় মানতে নারাজ জেলার প্রাণিসম্পদ এবং মৎস্য কর্মকর্তারা। তবে পরীক্ষা না করা পর্যন্ত চূড়ান্ত করে কিছু বলা যাবে না বলেও জানান তারা। ইউরেনিয়ামের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পানিতে ইউরেনিয়াম মিশ্রণের ফলে ইউরেনিয়াম ট্রাই হাইড্রাইড উৎপন্ন হয়। সেখান থেকে ইউরেনিয়াম অক্সাইড উৎপাদন হয়, যা যেকোনো অক্সাইড প্রাণি জগতের জন্য ক্ষতিকারক। সিলেট এমসি কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রধান শেখ আবুল কাওসার ইউরেনিয়ামের বিষয়ে বলেন, ইউরেনিয়াম পানিতে মিশ্রণের ফলে মারাত্মাক তেজষ্ক্রিয়তা সৃষ্টি হয়, যা যেকোনো প্রাণির জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অন্য প্রসঙ্গে আবুল কাওসার বলেন, শুধু মাছ কিংবা হাঁস নয়, মানুষ, হাওরঞ্চলে ছোট ছোট পাখি, জলজ প্রাণিও তেজষ্ক্রিয়তা থেকে রক্ষা পাবে না। কিন্তু হাওরাঞ্চলে শুধু মাছ আর হাঁস মৃত্যুর কারণকে ইউরেনিয়ামের আলামত বলে চূড়ান্তভাবে বলা যাবে না। এসব মৃত্যুর পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ জন্য প্রয়োজন হবে হাওরাঞ্চলের পানি পরীক্ষার।

কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদের দাবি, ভারতের ইউরেনিয়াম হাকালুকিতে প্রবেশ করলে এতদিনে মাছসহ নানা পোকা-মাকড়ের মৃত্যু অব্যাহত থাকত। কিন্তু তা হয়নি। বর্তমানে মাছ ও হাঁস মৃত্যু বন্ধ রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাওরাঞ্চলের পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ অস্বাভাবিকহারে কমে যাওয়ায় মাছের মড়ক দেখা দিতে পারে। মাছের স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য প্রতি এক লাখ লিটার পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ থাকতে হবে ৫ থেকে ৮ মিলিলিটার। অক্সিজেনের পরিমাণ ৪ ভাগের নিচে কমে এলে জলজ প্রাণির মৃত্যুর কারণ ঘটতে পারে। এছাড়া এই এলাকায় মাছের মৃত্যুর অন্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে ধান গাছে পচনের ফলে উৎপাদিত এমোনিয়া গ্যাস, ধানের পানিতে আসা অতিমাত্রায় পলিমাটিসহ অন্যান্য আবর্জনা এবং মাছের খাদ্য সংকটের কারণেও এমনটি হতে পারে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে রয়েছে ওপেনপিট ইউরেনিয়াম খনি। বন্যার পানিতে বাংলাদেশে ইউরেনিয়াম প্রবেশের কারণে হাওরাঞ্চলে মাছ ও হাঁসের মৃত্যু হচ্ছে এমন সংবাদ মৌলভীবাজার জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn