জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়নে বাল্য বিবাহের প্রতিরোধে লিখিত অবিযোগ পাওয়া গেছে। একই ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড সদস্য মো: তহুর মিয়া সহ এলাকার বিশিষ্ট ১৬ জন ব্যক্তির স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ রবিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে দায়ের করেন। ইউপি সদস্যের লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২১ শে এপ্রির শুক্রবার হাওরের দূর্যোগপূর্ন অবস্থা থাকায় তিনি এলাকার লোকজন সহ হাওর রক্ষা বাঁধে পাকনার হাওরের ডালিয়ার স্লুইচ গেইটে চলে যান। সারা দিন হাওরের বাঁধ রক্ষা করে এলাকায় এসে জানতে পারেন তার ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইরান অবস্থানরত সাহাব উদ্দিন (৩৭), পিতা-মদরিছ আলী, গ্রাম-মাহমুদপুর, ইউপি-ভীমখালী, একই গ্রামের আব্দুল মন্নানের অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে সেলিনা আক্তার মনির সাথে নওয়াগাঁও বাজারে কাজী অফিসে ১ লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য করিয়া মোবাইলের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এ ব্যাপারে এলাকার লোকজনের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানতে পারেন ওয়ার্ড সদস্য হিসাবে জন্ম নিবন্ধন আবেদন ফরমে তার স্বাক্ষর ব্যতিত ভূয়া জন্ম নিবন্ধন কার্ড করে কাজী অফিসে জমা দিয়ে কাবিন করেছে। তিনি আজর আলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোছা: সাহেদা আক্তারের নিকট গিয়ে জানতে পারেন মোছা: শিল্পী বেগমের জন্ম তারিখ বিদ্যালয় রেজিষ্টার অনুযায়ী ১৪-০১-২০০১ ইং।

এ ব্যাপারে তিনি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো: দুলাল মিয়াকে জন্ম নিবন্ধনের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করিলে চেয়ারম্যান জানান আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানিনা। আমার ভগ্নিপতি মাহমুদপুরের আলা উদ্দিন উগ্যেক্তা আরিফ হাসান রেনুর মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন কার্ড করিয়াছে। পরবর্তীতে জানা যায় মোছা: শিল্পী বেগমের নাম পরিবর্তন করে সেলিনা আক্তার মনি নামে আরেকটি জন্ম নিবন্ধন কার্ড জালিয়াতি করা হয়েছে। যার জন্ম নিবন্ধন নম্বর-১৯৯৬৯০১৫০২৭১০৬৯৩৪, নিবন্ধন বহি নং-১৩, তারিখ-১৮-০৪-২০১৭ এবং একই ব্যক্তির শিল্পী বেগম যার নিবন্ধন নম্বর-১৯৯৯৯০১৫০২৭০০০৪৭৩, নিবন্ধন বহি নং-১, তারিখ-০১-০৭-২০০৪ ইং। তিনি কাজী সাহেবকে জিজ্ঞাসা করিলে কাজী সাহেব বিবাহের কথা স্বীকার করে জন্ম নিবন্ধন কার্ডে শুধু চেয়ারম্যান সাহেবের স্বাক্ষর আছে কিন্তু সচিবের স্বাক্ষর নেই বলে জানান। ইউপি সচিব গুনেন্দ্র কুমার তালুকদারকে মোবাইলে জিজ্ঞাসা করিলে তিনি জানান আমি সেলিনা আক্তার মনি নামের কোন জন্ম নিবন্ধনের কার্ডে স্বাক্ষর দেই নাই। চেয়ারম্যান সাহেবের ভগ্নিপতি আলা উদ্দিন সাহেব আমার বাসায় স্বাক্ষরের জন্য এসেছিলেন। আমি জন্ম নিবন্ধনের সঠিক তথ্য যাচাই না করে স্বাক্ষর করিতে অপারগতা প্রকাশ করি। তারপর তিনি আমাকে আমার বাসায় আত্মীয় স্বজনের সামনে হুমকি-ধামকি দিয়ে আমাকে দেখে নিবে বলে চলে যান। তিনি আরো বলেন তোমার স্বাক্ষর ছাড়া বিয়ে হবে কেউ আটকাতে পারবেনা। এব্যাপারে ভীমখালী ইউপি নিকাহ্ রেজিষ্টার (কাজী) আ:মুকিত বলেন, চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত জন্ম নিবন্ধন পেয়ে আমার সহকারী বিবাহ পড়িয়েছেন, বিয়ের পর জন্ম নিবন্ধন কার্ডটি আলাউদ্দিন সাহেব নিয়ে যান পড়ে দিবেন বলে জানান। ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল মিয়া বলেন, আমাদের কাছে অনেক মানুষেই আসে সব কিছু দেখার সুযোগ পাইনা। এটাও ভুলবষত হতে পারে। নিকাহ্ রেজিষ্টারের কাছ থেকে জন্ম নিবন্ধনটি নিয়ে আসা হয়েছে সচিবের স্বাক্ষরের জন্য। উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রসূন কুমার চক্রবর্তী জানান, অভিযোগ পেয়েছি, অভিযোক্ত চেয়ারম্যান, সচিব, নিকাহ্ রেজিষ্টার, পাত্র-পাত্রীর উভয় পক্ষকে শুনানির জন্য তলব করা হয়েছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn