ওয়েছ খছরু-1 সিলেট সিটি নির্বাচনে নতুন মুখ আনোয়ারুজ্জামানকে নিয়ে বিব্রত সিলেট আওয়ামী লীগের নেতারা। গত ক’দিনে আনোয়ারুজ্জামান সিলেট আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার বাসায় যান। তার প্রার্থিতার কথা বলেন। সহযোগিতাও চেয়েছেন নেতাদের। এ কারণে বিব্রত হয়ে পড়েছেন সিটি নির্বাচনে দৌড়ে থাকা প্রার্থীরাও। কেউ প্রকাশ্যে কিছুই বলছেন না। তবে- এরই মধ্যে ঢাকামুখী হতে শুরু করেছেন তারা। হাই কমান্ডের সঙ্গেও দেখা করতে আব্দার জানিয়েছেন কেউ কেউ। কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন; দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মুখ থেকে তারা এই বিষয়টি জানতে চান। এরপর তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।
এ কারণে তারা ঢাকামুখো হতে যাচ্ছেন। তবে- এরই মধ্যে সিলেট আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা দলের সিনিয়র পর্যায়ে দু’একজন নেতার ফোন পেয়েছেন। আনোয়ারুজ্জামান ইস্যুতে সিলেট আওয়ামী লীগের ক্ষোভ দমাতে তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে সিলেট আওয়ামী লীগের রাজনীতির দৃশ্যপট পরিবর্তনের আভাস মিলেছে। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
গত ২২শে ডিসেম্বর আনোয়ারুজ্জামান সিলেটে এসে নগর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন। তার এই ঘোষণায় ‘কম্পন’ শুরু হয় সিলেট আওয়ামী লীগে। এরপর নেতাদের মতামত নিজের পক্ষে নিয়ে আসতে আনোয়ারুজ্জামানও বাসায় বাসায় ছুটে যান। এখনো তার যাওয়া অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে তিনি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান, মহানগর সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন সহ একাধিক নেতারা বাসায় গেছেন। কবর জিয়ারত করেছেন সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট লুৎফুর রহমানের। সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২০০৩ সাল থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান।
কামরানের জীবদ্দশায় অনেকেই প্রার্থী হতে চাইলেও দলের মনোনয়ন পাননি। কামরানের মৃত্যুর পর থেকে অন্তত ৮ জন মেয়র পদে প্রার্থী হতে প্রচারণায় রয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, মহানগর সহ-সভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ, এটিএম হাসান জেবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক ও কামরানপুত্র ডা. আরমান আহমদ শিপলু, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা প্রিন্স সদরুজ্জামান। এ ছাড়া, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরীর নামও আলোচনায় রয়েছে।
এই অবস্থায় কেন্দ্রের গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে আনোয়ারুজ্জামানের মাঠে নামাকে এখনো গ্রহণ করতে পারেননি সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় থাকা নেতারা। তবে- এ প্রসঙ্গে মিডিয়ার কাছে তারা কোনো কথাই বলছেন না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন সম্ভাব্য প্রার্থী গতকাল বিকালে জানিয়েছেন, আনোয়ারুজ্জামান মাঠে নিজেকে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন। নেতাদের সঙ্গে কথা বলার সময় হাইকমান্ডের গ্রিন সিগন্যালের বিষয়টিও জানিয়ে দিচ্ছেন। ইতিমধ্যে সিলেটে তার অনুসারীরা নানা প্ল্যাটফরমে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এ নিয়ে ঝড় বয়ে যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। এজন্য সার্বিক বিষয় নিয়ে দলের সভানেত্রী ও সাধারণ সম্পাদক সহ সিনিয়র পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে চান সিলেটের নেতারা। তবে- এখনই তারা দলবেঁধে ঢাকায় যাবেন না।
ব্যক্তিগত ভাবে গিয়ে তারা দেখা করবেন। কেন্দ্রের মেজাজ-মর্জি তারা বুঝতে চেষ্টা করবেন। যদি হাইকমান্ড থেকে তাদের কাছে স্পষ্ট করা হয় তাহলে তারাও আনোয়ারুজ্জামানকে নিয়ে মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠবেন। নতুবা তারা আগের মতোই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় থাকবেন। বিগত সিটি নির্বাচনে কামরানের সঙ্গে নৌকার টিকিট নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছিলেন আসাদ উদ্দিন আহমদ ও অধ্যাপক জাকির হোসেন। হঠাৎ করে আনোয়ার মাঠে নেমে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার কারণে তারা বিব্রত হয়েছেন। একই ভাবে আজাদুর রহমান আজাদ, ডা. আরমান আহমদ শিপলু কামরানের মৃত্যুর পর থেকে ভোটের মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। তারা প্রতিদিনই বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগদান করছেন। ফলে তাদের এই কর্মকাণ্ডে ছন্দপতন হয়েছেন। সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি দলের কাছে এবার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার টিকিট চাইবেন। সিলেট নগর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, তারা দলীয় সভানেত্রী ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করতে ইতিমধ্যে প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। আগামী সপ্তাহে তারা ঢাকায় গিয়ে দেখা করার আবদার জানিয়েছেন। ডাক পেলেই তারা ঢাকা চলে যাবেন। তাদের বক্তব্যও হাইকমান্ডের কাছে তুলে ধরবেন বলে জানান।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
৯৩ বার