সাত মাস পর ‘ফিরলেন’ পরিপাটি হুম্মাম কাদের
বোরহান উদ্দীন ::
গত বছরের আগস্টে ঢাকার আদালত পাড়া থেকে ‘উধাও’ হুম্মাম কাদের চৌধুরী ঘরে ফিরেছেন। বুধবার রাতে তিনি তার ধানমন্ডির বাসায় ফেরেন বলে ছাত্রদলের দুই নেতা জানিয়েছেন। অবশ্য একাধিকবার চেষ্টা করেও হুম্মামের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
গত ৫ আগস্ট একটি মামলায় হাজিরা দেয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন হুম্মাম কাদের। বিএনপি এবং সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবার থেকে অভিযোগ করা হচ্ছিল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই তাকে তুলে নিয়েছে। তবে তারা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
প্রথম কয়েক দিন হুম্মামের বিষয়টি নিয়ে নানা কথা বললেও এরপর তার পরিবার এ নিয়ে কিছুই জানায়নি। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎ খবর আসে, হুম্মামকে পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ছাত্রদলের দুই জন নেতা হুম্মাম কাদের চৌধুরীর ছবি প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন। এই ছবিতে হুম্মামকে বেশ স্বাভাবিক দেখা যায়। ট্রাউজার পড়া হুম্মাদের চুল নিখোঁজ হওয়ার পরে অনেকটাই বড় হয়েছে। তার দাঁড়িও আগের তুলনায় বড় হয়েছে। তবে তা বেশ যত্ন করেই ছাঁটা।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ তথ্য-গবেষণা সম্পাদক মামুন খান ফেসবুকে হুম্মাম কাদেরের কয়েকটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ! রাখে আল্লাহ মারে কে? সবাই তার নিখোঁজ এর আগের ও পরের ছবি দেখলেই বুঝবেন সরকারের নাটক শেষ করতে তাকে দিয়ে কী পরিমাণ শুটিং করানো হয়েছে। এর বিচার একদিন হবেই হবে। আল্লাহ সকলকে হেফাজত করুন। আমিন!’
এর কিছুক্ষণ পর ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সদস্য সাইমুম চৌধুরী রিয়াদ ফেসবুকে হুম্মাম কাদেরের টি শার্ট ও ট্রাউজার পরিহিত একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘শুরু থেকে বীর চট্টলার সিংহ পুরুষ সাকা চৌধুরী পুত্র এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী স্বৈরাচারীর গুমশালা থেকে গতকাল রাতে ধানমন্ডি বাসায় ফিরে এসেছেন ।।। আলহামদুলিল্লাহ।’
মানবতাবিরোধী অপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর এই ছেলে এতদিন কোথায় ছিলেন, সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য দেননি এই দুই ছাত্রদল নেতা।
৫ আগস্ট ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত চত্বর থেকে উধাও হয়েছিলেন হুম্মাম। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় ফাঁসের মামলায় সেদিন আদালতে হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন তিনি। তার আইনজীবী হুজাতুল আল ফেসানী সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছিলেন, দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে কোর্ট এলাকা থেকে বের হওয়ার পর রায়সাহেব বাজার থেকে গাড়ির গতিরোধ করে হুম্মামকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়ে।
ওই আইনজীবী জানান, হুম্মামকে যারা তুলে নিচ্ছিলেন, তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা নিজেদেরকে ডিবির লোক হিসেবে পরিচয় দেন। বলেন, ‘পরে সব জানতে পারবেন।’
তবে হুম্মামকে তুলে নেয়ার অভিযোগ তখন থেকেই অস্বীকার করে আসছে পুলিশ। তার ফিরে আসার খবরের পর যোগাযোগ করা হলেও গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘হুম্মাম কাদের চৌধুরী কোথায় ছিলেন, এখন কোথায় আছেন সে বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।’
হুম্মামের সন্ধানের বিষয়ে জানতে তার মা ফরহাদ কাদের চৌধুরীর মোবাইলেও একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
বিএনপি চেয়ারপাসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনও কোনো খবর পাইনি। চেষ্টা করছি। কিছু জানতে জানাবো।’