সুনামগঞ্জে স্থাপন হচ্ছে টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট
সুনামগঞ্জে টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে হওয়া সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এই প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৭ কোটি টাকা। ৫ একর জমির উপর ইনস্টিটিউটটি স্থাপন হবে। গত প্রায় ১ বছর হয় হাওরাঞ্চলের এসএসসি মানের শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য সুনামগঞ্জে এ ধরনের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করার চেষ্টা করছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য নানাভাবে চেষ্টা করছিলেন সুনামগঞ্জের তরুণ শিল্পপতি শ্যামল রায়ও।
‘সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট স্থাপন’ নামে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রকল্প প্রস্তাবনা বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে গত ৬ এপ্রিল অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। প্রস্তাবনায় একটি পূর্ণাঙ্গ ও আধুনিক টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট স্থাপনের জন্য ৯৭ কোটি একুশ লক্ষ পঁচাশি হাজার টাকা অর্থায়নের প্রস্তাব করা হয়। মঙ্গলবার একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হলে, সভায় উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,‘ফসল ডুবে দুর্দশাগ্রস্ত সুনামগঞ্জবাসীর জন্য এটি ছোট্ট একটি সুসংবাদ হবে।’
দেশের তৈরি পোশাক খাতে মধ্যম মানের প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদের প্রচুর চাহিদা থাকায় দক্ষ জনবল তৈরি করে দেশের বস্ত্রখাতকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার জন্য এই ধরনের একটি ইনস্টিটিউট স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে গত বছরের শুরুতেই অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে একটি আধা-সরকারি পত্র লিখেছিলেন।
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন,‘একনেক সভায় আমি বিনয়ের সঙ্গে বলেছি, হাওরাঞ্চলের মানুষের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে। এজন্য তরুণদের প্রস্তুত করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হাওরবাসীর জন্য সহানুভুতিশীল। তিনি প্রকল্পটির অনুমোদন দিয়ে আমাদের কৃতজ্ঞতার বন্ধনে আবদ্ধ করেছেন।’ তিনি জানান, প্রকল্পটি এবছরেই শুরু হবে এবং ২০২০’এর জুনের মধ্যে শেষ করতে হবে। এসএসসি পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা ৪ বছরের কোর্স সম্পন্ন করে ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল বা বস্ত্র প্রকৌশলীর মর্যাদা লাভ করবে।’
গার্মেন্টস ব্যবসায়ী শিল্পপতি শ্যামল রায় বলেন,‘একজন পোশাক ব্যবসায়ী হিসাবে এই প্রকল্পটি সুনামগঞ্জে হওয়ায় আমরা কৃতজ্ঞ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি। বিশেষ করে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী সুনামগঞ্জের কৃতী সন্তান এমএ মান্নানের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা। তিনিই এর উদ্যোক্তা।’ শ্যামল জানান, প্রকল্পটির শুরু থেকেই তিনি সক্রিয় ছিলেন, যাতে এটি অবশ্যই সুনামগঞ্জে হয়। সুনামগঞ্জের তরুণরা এর মাধ্যমে বস্ত্র প্রকৌশলী হলে ঢাকায় তারা কাজে লাগাতে পারবেন, ভবিষ্যতে সুনামগঞ্জেও বস্ত্র শিল্পের উদ্যোক্তা তৈরি হবে।’
জানা যায়, টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটে ৪ টি কোর্স থাকবে। এগুলো হচ্ছে গার্মেন্টস টেকনোলজি, ডায়িং এ- প্রিন্টিং বা ওয়েভ প্রসেসিং, উইভিং ও স্পিনিং। প্রতি কোর্সে ৩০ জন করে ১২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হবে। ৪ বছরের কোর্সে ৪৮০ শিক্ষার্থী থাকবে। এই ইনস্টিটিউটে ১০০ ছাত্রী ও ১০০ ছাত্রের জন্য আলাদা আলাদা আবাসন ব্যবস্থা থাকবে। একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, সভায় ২০ হাজার ৪০২ কোটি ৭৫ লাখ ৭৯ হাজার টাকার প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে।