চলতি মাসেই ইন্টারনেটের দাম পুনর্নির্ধারণ
আবু বকর ইয়ামিন : ইন্টারনেটের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে কাজ শুরু করেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়।
সব পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ইন্টারনেটের দাম ঠিক করা হবে। তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা সবার হাতে পৌঁছে দিতে চলতি মাসে ইন্টারনেটের দাম পুনর্নির্ধারণের কাজ শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার (বিটিআরসি) সিনিয়র সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন খান বলেন, বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। আমরা গত জানুয়ারি মাসে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) কাছে একজন কনসালট্যান্টের জন্য আবেদন করেছি। কনসালট্যান্টের কার্যক্রম শেষে পরবর্তীতে কস্ট মডেলিংয়ের মাধ্যমে ডাটা ট্যারিফ নির্ধারণ করা হবে বলে আমরা আশা করছি।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাজারে বর্তমানে ইন্টারনেটের যে দাম রয়েছে তা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। এই বিষয়টি চিন্তা করে নতুন দাম নির্ধারণ হবে। সরকারের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট একটি মূল্য থাকবে। যার মধ্যে থেকেই গ্রাহক ও ব্যবসায়ীদের চলতে হবে। দেশের সব প্রান্তে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল সংযোগের মাধ্যমে ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে। ইন্টারনেটের গতি বাড়ানোর জন্যও কাজ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) জানিয়েছে, দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কুয়াকাটা ল্যান্ডিং স্টেশন। দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযুক্ত হওয়ায় দেশে অতিরিক্ত ১ হাজার ৩০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ পাওয়া যাবে। ভবিষ্যতে আরো ২০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব হবে। বর্তমানে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারের পরিমাণ ৪০০ জিবিপিএসের বেশি। এই ৪০০ জিবিপিএসের মধ্যে ১২০ জিবিপিএস বিএসসিসিএলের প্রথম সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে আসছে। বাকি ২৮০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ আইটিসির মাধ্যমে ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে।
বর্তমানে কুয়াকাটা-ঢাকা ব্যাকহোল লিংক বা ক্যাবল স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। বিটিসিএলের এই ব্যাকহোল লিংক স্থাপনের কাজ সম্পন্ন এবং টেস্টিং সম্পন্ন হওয়ার পরে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের বাণিজ্যিক কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা হবে। ঢাকা থেকে কুয়াকাটা ল্যান্ডিং স্টেশনের ট্রান্সমিশন লিংক স্থাপনের কাজ শেষ পর্যায়ে। চলতি মাস থেকেই বাড়তি ইন্টারনেট সুবিধা সাধারণ মানুষ পেতে শুরু করবে।
চলতি মাসেই প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। তিনি বলেন, উদ্বোধনের পর এই ক্যাবলের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে ইন্টারনেট সেবা দেওয়া শুরু হবে। ফলে ইন্টারনেট ব্যবহারের বিকল্প পথ তৈরি হবে। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ কম মূল্যেই পাবেন ইন্টারনেট সেবা।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হয় বাংলাদেশ। কুয়াকাটা থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে মাইটভাঙা আমখোলাপাড়ায় দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের ল্যান্ডিং স্টেশন। আর কুয়াকাটা পর্যটন মোটেল এলাকায় রয়েছে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের বিচ ম্যানহোল।
তারানা হালিম বলেন, দুর্যোগকালে প্রথম সাবমেরিন ক্যাবলে কোনো সমস্যা হলে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল থেকে ইন্টারনেট সেবা পাবেন গ্রাহকেরা। চাহিদার অতিরিক্ত ব্যান্ডউইথ মালয়েশিয়া, ভুটান, মায়ানমার, শ্রীলংকা, ভারতের সেভেন সিস্টার নিতে চায় জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, অতিরিক্ত ব্যান্ডউইথ আমরা রপ্তানি করতে পারব।