রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ও বাঙালির অহংকার : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বকবির জন্মবার্ষিকীতে দেয়া বাণীতে শান্তিময় পৃথিবী গড়ার প্রত্যয়ের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, আমাদের মননে বিশ্বকবির ব্যঞ্জনাময় উপস্থিতি শোষণ, বঞ্চনা, সাম্প্রদায়িকতা, সহিংসতা ও অমানবিকতা প্রতিরোধের মাধ্যমে বাঙালির অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখবে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তিনি তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ও বাঙালির অহংকার। বিশ্বসাহিত্যের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র। অসাধারণ সব সাহিত্যকর্ম দিয়ে তিনি বিস্তৃত করেছেন বাংলা সাহিত্যের পরিসর।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কালজয়ী এ কবি জীবন ও জগৎকে দেখেছেন অত্যন্ত গভীরভাবে যা তাঁর কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক, গীতিনাট্য, প্রবন্ধ ও ভ্রমণ কাহিনী, সংগীত ও চিত্রকলায় সহ¯্রধারায় উৎসারিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথকে বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী উরেøখ করে তিনি বলেন, সাহিত্য, সংগীত ও শিল্পমাধ্যমের প্রতিটি শাখায় তাঁর অনায়াস বিচরণ সত্যিই বিস্ময়কর। বিশ্বকবির সমস্ত সৃষ্টির মূলে নিহিত মানবতাবাদ তাঁকে বিশিষ্টতা দান করেছে। শান্তি ও মানবতার কবি রবীন্দ্রনাথ ছিলেন প্রকৃতির চিরন্তন সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যের সাধক। ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জনের মাধ্যমে তিনি বাংলা সাহিত্যের বৈশ্বিক যাত্রাকে বেগবান করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ২৪ বছরের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রবী ঠাকুরের লেখনী আমাদেরকে উজ্জীবিত করেছে। তাঁর জাতীয়তাবোধ বাঙালির অনন্ত প্রেরণার উৎস। ‘কবির প্রতি অন্তহীন ভালবাসায় ১৯৬১ সালে পাকিস্তানি শাসকচক্রের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আমরা রবীন্দ্র জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন করেছি। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর কবিতা ও গান মুক্তিকামী বাঙালিকে উদ্দীপ্ত করেছে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে। জীবনের প্রতিটি সমস্যা-সংকট, আনন্দ-বেদনা এবং আশা-নিরাশার সন্ধিক্ষণে রবীন্দ্রসৃষ্টি আমাদের চেতনাকে আন্দোলিত করে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রবীন্দ্রনাথ ছিলেন জীবনমুখী শিক্ষাদর্শনের পথপ্রদর্শক। তাঁর শিক্ষাভাবনা আমাদের বিজ্ঞানভিত্তিক, আধুনিক শিক্ষায় অগ্রগামী হতে অনুপ্রাণিত করে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের তিনি একান্ত আপনজন। শিলাইদহ, শাহজাদপুর ও পতিসরে অবস্থানকালে এসব অঞ্চলের মাটি ও মানুষের জীবনমান উন্নয়নে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। শিলাইদহ ও পতিসর অঞ্চলেই তিনি রচনা করেছিলেন ‘ছিন্নপত্র’র সিংহভাগ এবং অসামান্য কিছু গান। গ্রামীণ দরিদ্র ও অন্ত্যজ শ্রেণির মানুষের জন্য তাঁর পল্লিউন্নয়ন প্রচেষ্টা আজও আমাদের কাছে অনুসরণীয় হয়ে আছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে কালোত্তীর্ণ এ কবির সৃষ্টিকে প্রেরণা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কবিগুরুর অমর সৃষ্টি ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি’ গানটি জাতির পিতা বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে গ্রহণ করেন যা দেশের মানুষের মনে সঞ্চারিত করেছে দেশপ্রেমের নতুন প্রেরণা।বাসস