রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর তিন কুঠিবাড়ি

২৫ বৈশাখ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী। যুগে যুগে আধুনিক এই কবি তার কালোত্তর্ণ রচনার আবেশে বেঁধে রেখেছেন আমাদের সবাইকে। মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাঁর গান শুনি আমরা, হারিয়ে যাই তাঁর কবিতায়, কখনো অবাক হয়ে দেখি তাঁর আঁকা ছবিগুলি। কবিগুরুকে আরও কাছ থেকে অনুভব করতে ঘুরে আসতে পারেন তাঁর কুঠিবাড়ি। তাঁর ব্যবহৃত আসবাবসহ স্মৃতিবিজড়িত অনেক কিছু দেখতে পাবেন এই বাড়িগুলোতে, এ যেন তাঁর সময়কেই ছুঁয়ে দেখা।

শিলাইদহ কুঠিবাড়ি-
১৮৮৯ সালে শিলাইদহ এসেছিলেন রবি ঠাকুর। ১৯০১ সাল পর্যন্ত অত্র অঞ্চলের জমিদারীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তাঁর আবাসস্থল কুঠিবাড়িটি এখনো সেই স্মৃতিতে উজ্জ্বল। এখানে বসেই তিনি রচনা করেন তার বিখ্যাত গ্রন্থ সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালী, ইত্যাদি। গীতাঞ্জলী কাব্যের অনুবাদ কাজও শুরু করেন।
কীভাবে যাবেন:
সড়ক পথে গাবতলি ও সায়দাবাদ বাস-স্ট্যান্ড থেকে কুষ্টিয়ার বাস পাবেন। কমলাপুর থেকে ট্রেনেও যেতে পারবেন কুষ্টিয়া।
কুষ্টিয়া শহর থেকে আলাউদ্দিন মোড় পর্যন্ত বাসে গিয়ে স্থানীয় যানবাহন রিক্সা-ভ্যান ও নসিমন যোগে যাওয়া যায় কুঠিবাড়ি।
 পতিসর-
সুন্দর ছিমছাম এই গ্রামে কবির আগমনের হেতুও তাঁর জমিদারী। পতিসরের নির্মল সৌন্দর্য মুগ্ধ করেছে কবিকে। এখানে বসে তিনি লিখেছেন অসংখ্য গল্প, কবিতা, উপন্যাস। প্রিয় স্ত্রী মৃণালিনীকে লিখেছেন চিঠি, সেইসব চিঠিতে উঠে এসেছে পরিসরের রূপের বর্ণনা, নদীর কথা, সবুজ প্রকৃতির কথা, অদ্ভুত মুগ্ধতার কথা। এখানে বসেই কবি লিখেছিলেন তার বিখ্যাত কবিতা ‘দুই বিঘা জমি’।
কীভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে আন্তঃনগর ট্রেন নীলসাগর, লালমনি এক্সপ্রেসে চড়ে প্রথমে আত্রাই আসতে পারেন। এছাড়া দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে বাস কিংবা ট্রেনে নওগাঁ/শান্তাহার বা নাটোর এসে পরে আত্রাই আসতে পারেন। নাটোর থেকে আত্রাই বাস, ট্রেন ও নদীপথে নৌকায় আত্রাই আসা যায়। আত্রাই থেকে পতিসর কাচারিবাড়ি যেতে হবে নসিমনে চড়ে।
শাহজাদপুর কুঠিবাড়ি-
রবি ঠাকুরের স্পর্শে সিক্ত হয়েছিল সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর। ১৮৯০ সালে প্রথম এখানে আসেন তিনি। ১৮৯৭ সাল পর্যন্ত সময়কালে বার বার এখানে এসেছেন তিনি। বাড়িটিতে তাঁর সকল স্মৃতি যতটা সম্ভব সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। তাঁর ব্যবহৃত খাট, সোফা, আলনা, আরাম কেদারা, পালকি, শ্বেত পাথরের বিরাট টেবিল, একজোড়া খড়ম, নলসমেত হুঁকো, ফুলদানি, রান্নাঘরে ব্যবহৃত তৈজসপত্র, কাপ পিরিচ, হট ওয়াটার পট, হট ওয়াটার ট্রে, লণ্ঠন, দ্রব্যসামগ্রী ইত্যাদি এখানে রয়েছে । ছোটগল্প ‘ছুটি’ রচনা করেছিলেন কবি এখানে বসেই। রচনা করেছেন আরও অনেক গান, কবিতা।
 কীভাবে যাবেন:
ঢাকার কল্যাণপুর, গাবতলী থেকে পাবনার বাসে উঠুন। নেমে পড়বেন শাহজাদপুরে। বাস স্ট্যান্ডের পাশেই বাজার। সেখান থেকে রিকশা বা অটোরিকশায় যেতে পারবেন কুঠিবাড়ি।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn

এ বিভাগের আরো খবর

একজন খোকন মাষ্টার- সুপ্ত বাসনা যার হৃদয়ে

একজন খোকন মাষ্টার- সুপ্ত বাসনা যার হৃদয়ে

শিক্ষা গুরু বাবু সুবোধ রঞ্জন দাস

শিক্ষা গুরু বাবু সুবোধ রঞ্জন দাস

রইছ সাহেব আমাদেরে স্বপ্ন দেখিয়ে গেছেন-নুরুজ্জামান চৌধুরী শাহী-

রইছ সাহেব আমাদেরে স্বপ্ন দেখিয়ে গেছেন-নুরুজ্জামান চৌধুরী শাহী-