বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আলোচনা আগামী বুধবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তি তথা টিকফা বলে পরিচিত এই আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল যোগ দেবে। বর্তমান ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে এটাই হবে দুই দেশের মধ্যে প্রথম দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তরের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী প্রতিনিধি আর্ক লিনস কট এতে নেতৃত্ব দেবেন। প্রতিনিধ দলে থাকবে পররাষ্ট্র দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-সহকারী মন্ত্রী সিয়ান স্টেইন। বাংলাদেশের পক্ষে টিকফা আলোচনায় নেতৃত্ব দেবেন বাণিজ্য সচিব সুভাশীষ বসু মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট রবিবার বিকালে আসন্ন বাণিজ্য বিনিয়োগ আলোচনা তথা টিকফা বৈঠক নিয়ে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেন। দেড় ঘণ্টা স্থায়ী বৈঠক শেষে রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, টিকফা বৈঠকের প্রস্তুতি এগিয়ে চলেছে। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ইস্যুতে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। কিভাবে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো যায় কিংবা দুই দেশের সব ধরনের বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা হবে।

রাষ্ট্রদূত আরো জানান, আগামী বৃহস্পতিবার তৈরি পোশাক শিল্পের মানোন্নয়নে ‘সাসটেইনেবেলিটি কমপ্যাক্ট’ এর পর্যালোচনা বৈঠক ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। তৈরি পোশাকের রপ্তানি দ্বিগুণ করতে শ্রমিকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ বৈঠকে শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও অধিকার ইস্যু প্রাধান্য পাবে। তৈরি পোশাক নিয়ে এই পর্যালোচনা বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি, ট্রেড ইউনিয়ন, মালিক পক্ষের প্রতিনিধিরা যোগ দেবেন।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটসহ পশ্চিমা অন্তত ৮ জন কূটনীতিক জোটবদ্ধভাবে রাষ্ট্রাচার প্রধান এ কে এম শহীদুল করিমের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দূতাবাসের সামনের ফুটপাতের নিরাপত্তা বেষ্টনীসহ অন্যান্য অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে উদ্বেগ জানান। ওই বৈঠকে অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার হাইকমিশনার ছাড়াও ঢাকাস্থ বৃটিশ হাইকমিশনের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বার্নিকাটের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, আমরা (বিদেশি মিশন ও কূটনীতিকরা) আপনাদের অতিথি। আমাদের নিরাপত্তাসহ অন্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হোস্ট কান্ট্রির দায়িত্ব। এখানে আমাদের নিরাপত্তা এবং সুযোগ-সুবিধার যেসব উদ্যোগ রয়েছে তা অক্ষত রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সবার নিরাপত্তার বিষয়টি সরকারের দৃষ্টিতে এনেছি। আমরা একটি কার্যকর নিরাপত্তাব্যবস্থা দেখতে চাই। এটাই আমরা সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনায় জানিয়েছি।

রিয়াদ বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন ট্রাম্প-হাসিনা: আগামী ২১ মে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন। সৌদি আরবের আয়োজনে আমেরিকা-অ্যারাব ও মুসলিম ওয়ার্ল্ড সামিট শীর্ষক ওই বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়ে আমেরিকা এবং মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর শীর্ষ নেতাদের আরও ঘনিষ্ঠতার ঘোষণা আসতে পারে। এ বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নতুন এ উদ্যোগ অবশ্যই উত্সাহব্যঞ্জক। তিনি এর সফলতা কামনা করেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn