লন্ডনে সন্দেহভাজন জঙ্গি হামলার পর যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের মধ্যে তিন ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। একদিকে তারা যুক্তরাজ্যবাসী হিসেবে অন্যান্য ব্রিটিশদের মতো করেই নিজেদের হামলার লক্ষ্যবস্তু মনে করছেন। অন্যদিকে ‘হেইট ক্রাইমের’ শিকার হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন তারা। অভিবাসন নীতি আরও কঠোর হওয়ার ভয়ও পাচ্ছে বাংলাদেশিরা।

এক: যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি কমিউনিটি নিজেদেরকেও ওইসব সন্ত্রাসী হামলার লক্ষ্যবস্তু বলে মনে করছে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা জানান, হামলার সময় তারাও হয়তো ওই স্থানে থাকতে পারতেন। আর এসব হামলায় যে কেউ যে কোনও সময় আক্রান্ত হতে পারে। যুক্তরাজ্যে থাকা যে কোনও মানুষ আক্রান্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা বাংলাদেশিদের।

দুই. হামলার পর বিদ্বেষী হামলার সংখ্যা ও পরিমাণ বাড়ার আশঙ্কা জানিয়েছে প্রবাসীরা। ম্যানচেস্টারের প্রবাসীরা জানিয়েছেন, দুই সপ্তাহ আগে সেখানে জঙ্গি হামলার পর বাংলাদেশিসহ এশীয় কমিউনিটির কেউ কেউ হেইট স্পিচ এবং শারীরিকভাবে হেনস্তার শিকারও হয়েছেন। সাম্প্রতিক ওই ঘটনার পর ঘৃণাজনিত হামলার পরিমাণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বাংলাদেশি কমিউনিটির কেউ কেউ।

তিন. বাংলাদেশিদের আরেকটি আতঙ্কের কারণ হলো অভিবাসী আইন কঠোর করা। ক্রমাগত যুক্তরাজ্য এবং তার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হামলার ফলে অভিবাসী আইন কঠোর করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বাংলাদেশিরা। অভিবাসী আইন কঠোর করলে তা যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস, ব্যবসা এবং যাতায়াতে বিধিনিষেধ আরোপ হতে পারে বলে আশঙ্কা যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের।

এবারের হামলার পর সেখানে সে মাপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা গত বারো বছরে দেখেনি লন্ডনবাসী। কেউ কেউ একে ‘যুদ্ধাবস্থা’ বলেও উল্লেখ করছেন। এর আগে ২০০৫ সালে লন্ডনে জঙ্গি হামলার পর এমন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা গিয়েছিল। এক বিবৃতিতে লন্ডন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের সহকারি পরিচালক পিটার রোডস লন্ডন ব্রিজের এ হামলায় হতাহত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এ ঘটনায় ৪৮ জন আহত ব্যক্তিকে লন্ডনের পাঁচটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেছি।’ পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলেই ছয়জন নিহত হয়েছেন। লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারি কমিশনার মার্ক রোলি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, হামলাকারীরা অন্তত ছয়জনকে হত্যা করেছে। পুলিশ তিন হামলাকারীকে গুলি করে হত্যা করেছে। এখন মেট্রোপলিটন পুলিশের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে ব্রিটিশ ট্রান্সপোর্ট পুলিশ, সিটি অব লন্ডন পুলিশ, লন্ডন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস এবং লন্ডন ফায়ার ব্রিগেড।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn