সৈয়দপুরে গাছের কসকে রক্ত বলে কেরামতি প্রচার
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুরে একটি গাছ থেকে লাল রঙের ‘কস’ বা রসকে রক্ত বলে কেরামতি প্রচার করে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে। ‘সৈয়দপুরে গাছ থেকে রক্ত ঝরার খবরে উৎসুক মানুষের ভীড়’ শিরোনামে এই খবরটি দৈনিকসিলেটডটকমে ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ হলে দেশ-বিদেশ থেকে আমাদের পাঠকরা ফোন করে প্রকৃত বিষয়টি জানতে চান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সৈয়দপুরের শাহ মজির উদ্দিন কুরেশী (রহ.) ও মনফর উদ্দিন কুরেশীর (রহ.) মাজার সংলগ্ন পুকুর ভরাট করার সময় শ্রমিকরা হঠাৎ লক্ষ করেন পুকুরপাড়ের একটি গাছের কয়েকটি অংশের কাটা দাগ দিয়ে এক ধরনের লাল তরল পদার্থ বের হচ্ছে ।
আর যায় কোথায় সাথে সাথে এটাকে গাছ থেকে রক্ত বের হচ্ছে বলে কেরামতি প্রচার শুরু হয়ে যায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে এক ধরনের ধর্ম ব্যবসায়ী নানা কেরামতি সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচার করে এবং মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে পুজি করে ব্যবসা করে। সৈয়দপুরের তথাকথিত গাছ থেকে ‘রক্ত’ বের হওয়ার এই কেরামতি এ ধরনের একটি ঘটনা বলে অনেকেই মনে করছেন। তারা বলছেন জীব জগতে যাদের পঞ্চইন্দ্রীয় আছে তাদের দেহেই রক্ত নামক পদার্থ রয়েছে। আর বৃক্ষের পঞ্চইন্দ্রীয় নেই।আধুনিক বিজ্ঞান বলছে বৃক্ষের মাত্র ত্রিইন্দ্রীয় আছে। আমেরিকা এবং আফ্রিকায় এমন অনেক গাছ আছে যা কাটার সাথে সাথে চল্লিশ-পঞ্চাশ লিটার খয়রি বা লাল রংগের রস বা কস বের হয়। এটাকে কেউ রক্ত বের হবার কেরামতি হিসেবে প্রচার করেনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে চলছে তুমুল বিতর্ক। কেউ কেউ বলছেন এটা ‘মানুষের ধর্মীয় অনুভুতি নিয়ে নতুন ভন্ডামী! অন্য একজন বলেছেন- ‘মবনু ভাই দেশে পুরোপুরি সেটেল্ড, নানার পিরাকী ব্যাবসা চালু রাখতে নানার মুরিদানদের গ্রামে গ্রামে অনেক দৌড় ঝাপ হয়েছে,, এখন নানী, মামা, বাড়ীতে গিয়েছেন মোক্কম সময় নানার খানকা আবার জমজমাট করে চালু করার…’
তবে সৈয়দপুর দরবার শরীফের বর্তমান পীর সৈয়দ মবনু পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতের ব্যখ্যা দিয়ে বলেন, এটা অবশ্যই কেরামতি। পাঠকদের সুবিধার জন্য আমেরিকার একটি গাছের ভিডিও লিংক এখানে দেয়া হলো। যে গাছ কাটার পর খয়রি রংগের রস কয়েক লিটার বের হতে দেখা যাচ্ছে। তবে এই ভিডিওটিও ইউটিউবয়ে যিনি প্রকাশ করেছেন তিনি কেরামতি না বলে বলেছেন “অলৌকিক ব্যাপার, গাছ কাটার পরে গাছ থেকে বের হচ্ছে রক্ত” এই শিরোনামে। যাতে বাংলাদেশি দর্শকরা এটি বেশি করে দেখেন।