আল আমিন-ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভাড়ায় লাগেজ টানা পার্টির সদস্য ছিলেন গোল্ডেন মনির। সেখানে বিমানের এক ক্রুর সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে। ওই ক্রু সোনা চোরা-চালানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। একপর্যায়ে তিনিও সোনা চোরাকারবারে জড়িয়ে পড়েন। দুইভাবে চোরাচালান করতেন তিনি। এক লোকের মাধ্যমে আরেক হচ্ছে অনলাইনের মাধ্যমে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে মনির অনলাইনে স্বর্ণের ব্যবসায়ে বেশি মনোযোগী হয়েছিলেন। অর্থ পরিশোধ করতেন হুন্ডি চ্যানেলের মাধ্যমে।

 যেসব অনলাইনে স্বর্ণ চোরাকারবারি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছিল তাদের নাম মনিরের কললিস্টে পাওয়া গেছে। তাদের অধিকাংশের বাড়ি একটি প্রতিবেশী দেশে। চক্রটি বিভিন্ন রুট থেকে পাশের দেশ হয়ে বাংলাদেশে স্বর্ণ নিয়ে আসতো। তবে চক্রটি বেশি সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে পাশের দেশ হয়ে বাংলাদেশে সোনা নিয়ে আসতো। পরে হাত বদল হয়ে আসতো মনিরের কাছে। এরপর মনিরের গ্যাং চক্র রাজস্ব ফাঁকি দেয়া ওই সোনা সরবরাহ করতো দেশের কালো বাজারে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দেয়ার জন্য তার চক্রের সদস্যরা আকাশ পথ ছাড়াও রেল ও নৌ-রুটকে ব্যবহার করতো। গত ২১শে নভেম্বর সকালে রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় মনিরের বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় বিপুল পরিমাণের অস্ত্র, সোনা এবং মদসহ র‌্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে।  মামলার তদন্তের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, তিন মামলায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে দীর্ঘ ১৮ দিনের রিমান্ড চলছে মনিরের। তাকে তদন্তকারী কর্মকর্তারা অব্যাহতভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে সোনা চোরাকারবারিরা অনলাইনে স্বর্ণ চোরাকারবারে জড়িয়ে পড়ছে।  তারা তাদের মোবাইল ফোনে একাধিক বিভিন্ন অ্যাপস খুলে তথ্য লেনদেন করছে। সেই পথ অনুসরণ করা শুরু করেছিলেন মনির। অনলাইনে স্বর্ণ চোরাকারবারে দুইজন কর্মচারী দেখভাল করতো। তারা গাঢাকা দিয়েছে। সূত্র জানায়, মনির ছাড়াও ৪ জন সোনা চোরাকারবারি অনলাইনে চোরাকারবারিতে জড়িত। চারজনের নাম জানতে পেরেছেন মামলার তদন্তকারী  কর্মকর্তারা। তারা আত্মগোপনে রয়েছে। পুলিশ তাদের খুঁজছে।

সূত্র জানায়, উত্তরার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে নিয়মিত আড্ডা দিতেন মনির। সেখানে আরব আমিরাতের একাধিক নাগরিকের সঙ্গে মিটিং করেছেন তিনি। তার মধ্যে একজন নারী ছিলেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তিরা সোনা চোরাকারবারে জড়িত বলে তিনি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন। সূত্র জানায়, মনির অ্যাপসের মাধ্যমে সোনা লেনদেনে চুক্তি করতেন। এরপর চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট রুট দিয়ে সোনাগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ করতো। যেসব দেশে সোনার দাম বেশি ওঠে সেসব দেশেও তারা সোনা পাচার করতো।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn