যানজটের কবলে পড়ে অবরুদ্ধ এখন সিলেট মহানগরী। অপরিকল্পিত নগর উন্নয়নের প্রভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন নগরবাসী। এর জন্য সিটি কর্পোরেশন ও সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) একে অপরকে দোষারোপ করছে। আর এই দোষারোপের যাতাকলে পড়ে পিষ্ঠ হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সিলেটের, জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, শিবগঞ্জ, মীরাবাজার, দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন চত্বর থেকে শুরু করে সর্বত্রই চলছে রাস্তা বর্ধিত করণের কাজ। দিনে এবং রাতে রাস্তার উন্নয়ন কাজের জন্য অধিকাংশ রাস্তায় রাখা হয়নি বিকল্প রাস্তা। ফলে বিকল্প পায়ে হাঁটার পথ না থাকায় সাধারণ পথচারীরা যেমন দুর্ভোগে পড়েন, একই সাথে সিএনজি অটোরিস্কা, রিক্সা, প্রাইভেটকারসহ মোটরযান চলাচল পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে দীর্ঘ হতে তাকে যানযটের লাইন। এমন অবস্থায় স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীম এসএসসি পরিক্ষার্থী থেকে অফিসগামী সরকারি এবং বেসরকারি লোকজনকে বেকায়দায় পড়তে হয়। সিলেট নগরীর ব্যস্ততম একটি এলাকার নাম হুমায়ুন রশীদ স্কয়ার। সবার কাছে হুমায়ুন চত্বর হিসেবে স্থানটি বেশি পরিচিত। আন্তঃনগর ও জেলার চারটি সড়কের মিলনক্ষেত্রও এই চত্বর। সড়ক ও জনপথের অপরিকল্পিত উন্নয়ন কাজের খোড়াখোড়ির কারণে চারমূখী এ রাস্তার পরিধি একেবারে ছোট হয়ে গেছে। ফলে দিনরাত চব্বিশ ঘন্টাই এ চত্বরে লেগে থাকে অসনীয় যানজট। ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটের কবলে পড়ে মৃত্যুকোলে ঢলে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে এ্যাম্বুলেন্সে থাকা রোগীদের। বিশেষ করে প্রসব ব্যাথায় থাকা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এমন অবস্থা বিরাট আতঙ্কের। অনেক পরীক্ষার্থী সময়মত পৌছাতে পারেনা পরীক্ষা কেন্দ্রে। স্কুল কলেজ মাদ্রসার পাঠ সময় চলেযায় ছাত্রছাত্রীর। অফিস আদালতে পৌছাতে দেরী হয় কর্মকর্তা কর্মচারীর। ফলে ব্যত্যয় ঘটে সরকারী কর্মকান্ডের।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)সিলেট-এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী আতাউর রহমান সিলেট প্রতিদিনকে জানান, রাস্তার উন্নয়ন কাজে দেরী হওয়ায় যানজটে জনভোগান্তি হচ্ছে ঠিকই। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে রাতে ও দিনে কাজ করার চুক্তি রয়েছে সওজের। কিন্তু ঠিকাদাররা নৈশকালীন শ্রমিক না পাওয়াতে তারা শুধুমাত্র দিনের বেলায়ই কাজ করাচ্ছে। ফলে কাজে দেরী হচ্ছে বলেই ভোগান্তির শিকার জনগন। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আলী আকবর খান সিলেট প্রতিদিনকে জানান, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সড়ক ও জনপথের এ উন্নয়ন কর্মকান্ড দিনক্ষণ ঠিক করে হচ্ছে কি না, তা আমাদের জানা নেই। আমার মনে হচ্ছে- সওজের ঠিকাদারী কাজে সুষ্টু পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। ফলে জনভোগান্তি হচ্ছে। নগরীর ব্যস্ততম এলাকায় উন্নয়ন কাজের যে পরিকল্পনা প্রয়োজন তা সুষ্টুভাবে করা হলে এমন যান জট হতো না। যানজটের আরো অন্যতম কারণ হচ্ছে অবাধে বৈধ-অবৈধ যান চলাচল। সিলেট নগরীতে রকমফের যানবাহন চলাচলে কোন বিধি-নিষেধ না থাকায় এমন টা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বিআরটিএ’র কোন হাত নেই বলে জানান সহকারী পরিচালক সানাউল হক। তিনি বলেন-নগরীতে বৈধ-অবৈধ গাড়ির কোনো সংখ্যা আমাদের জানা নেই। পুলিশের ট্রাফিক বিভাগই এটা বলতে পারে। ট্রাফিক পুলিশ বিধি মোতাবেক যানবাহন নিয়ন্ত্রন করলে এমন যানজট হতো না বলে জানান তিনি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn