বার্তা ডেক্সঃঃবন্ধুদের হাতেই খুন হয়েছেন সিলেটের তরুণ নাঈম আহমদ। ঘর থেকে ডেকে নিয়ে খামারের নির্জন স্থানেই তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয়। এরপর লাশ তারা খামারের ভেতরে রেখেই চলে যায়।  নাইম হত্যার ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে নিহতের দুই বন্ধু প্রিন্স হিমেল ও অলি আহমদ।

গত ১৯ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় খাদিম বিআইডিসি এলাকার কৃষি গবেষণা খামারের সড়কের পাশ থেকে নাঈম আহমদের (২০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় নাঈমের শরীরে ছুরিকাঘাতের ৮টি চিহ্ন ছিলো। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে দুজন শনিবার (২৩ জানুয়ারি) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

পুলিশ জানায়, লাশ উদ্ধারের পরদিন ২০ জানুয়ারি নিহত নাঈমের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে নাঈমের বন্ধু সবুজ, রাব্বি, জুনেদসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে মামলা দায়েরের আগেই বিকালে নাঈমের বন্ধু দেলোয়ার হোসেন সবুজকে শাহপরাণ এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ। এরপর তাকে তিনদিনের রিমান্ডে  নেয়া হয়।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ জানায়, নাঈমের লাশ উদ্ধারের সময় তার হাতে ‘নাম্মি’ নামে এক মেয়ের নাম সংবলিত ট্যাটু পাওয়া যায়। ফলে হত্যাকান্ডটি প্রেমঘটিত বলে প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু তদন্তে প্রেমঘটিত কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। একটি আইফোনকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল বলে জানতে পারে পুলিশ।

তদন্তের এক পর্যায়ে গত শুক্রবার রাতে শাহপরান থানা পুলিশ নিহত নাঈমের বন্ধু প্রিন্স হিমেল ও অলি আহমদকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত হিমেল নগরীর শিবগঞ্জ সেনপাড়া এলাকার ফুলিয়ার ছেলে ও অলি আহমদ একই এলাকার হেলাল উদ্দিনের ছেলে।

গ্রেপ্তারের পর রাতে পুলিশ তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। এক পর্যায়ে তাদের কাছ থেকে খুনের রহস্য উন্মোচিত হয়। পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃত প্রিন্স হিমেল ও অলি আহমদ খুনের ঘটনা স্বীকার করে এবং আইফোন নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে নাঈমকে খুন করা হয়েছে বলে জানায়।  পুলিশ জানায়, একটি আইফোন নাঈমের বন্ধুরা ‘হারিয়ে গেছে’ জানিয়ে গোপনে বিক্রি করে দিয়েছিলো। বিষয়টি জানতো নাঈম। এনিয়ে বিরোধের শনিবার বিকালে পুলিশ তাদের আদালতে পাঠালে আদালতেও তারা খুনের ঘটনা স্বীকার করে। ঘটনার সঙ্গে আর কারো সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা পুলিশ তদন্ত করছে।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) মো. আশরাফ উল্লাহ তাহের বলেন, গ্রেপ্তারকৃত হিমেল ও অলি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।  তিনি জানান, ঘটনার সামগ্রিক বিষয় জানতে পুলিশ তদন্তে রয়েছে। নিহত নাঈমের স্বজনরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার নাঈম বাসাতেই ছিল। দুপুরে ভাত খাওয়ার আগে তাকে মঙ্গলবার সবুজ ও রাব্বি নামের দু’জন জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা বলে ফোন করে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর নাঈমের লাশ পাওয়া যায়।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn