ম্যানচেস্টার হামলাকারী সালমান আবেদির পিতা রমাদান আবেদি ও ছোটভাই হাশেম আবেদিকে আটক করেছে লিবিয়া। ভাই সালমানের হামলার কথা পুরোপুরি জানতো হাশেম আবেদি। সেও আরেকটি হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। নিরাপত্তা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মিরর। এতে বলা হয়, হাশেম আবেদির বয়স ২০ বছর। নাটকীয়ভাবে মঙ্গলবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে। লিবিয়ার নিরাপত্তা সূত্রগুলো বলেছে, সে আইএস-এর সদস্য। তার ভাই সালমানের হামলার বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানতো সে। হামলা চালানোর আগে হাশেমের একাউন্টে টাকা পাঠায় সালমান। এর পরিমাণ ৪৫০০ লিবিয়ান দিনার বা আড়াই হাজার পাউন্ড। সেই অর্থ উত্তোলন করতে যায় হাশেম আবেদি। এ সময়ই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওদিকে রাজধানী ত্রিপোলি থেকে পরের দিন গ্রেপ্তার করা হয়েছে সালমান আবেদির পিতা রমাদান আবেদিকে (৫০)। গ্রেপ্তার করার পর পরই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ সময় হাশেম স্বীকার করেছে তার ভাইয়ের হামলা পরিকল্পনা সম্পর্কে সে জানতো। ভাইয়ের সঙ্গে সব সময়ই তার যোগাযোগ হতো। এ ছাড়া নিজেও নিজের মতো করে একটি হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছিল। বিন সালেম নামের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, হাশেম আবেদি ও তার ভাই ইসলামিক স্টেট বা আইএসের সদস্য এ বিষয়ে আমাদের কাছে প্রমাণ আছে। হাশেম আবেদিকে আমরা দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে খুঁজছিলাম। উল্লেখ্য, হামলার পরদিনই ম্যানচেস্টার থেকে বৃটিশ পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে সালমান আবেদির বড় ভাই ইসমাইল আবেদি (২৩) কে। ওদিকে লিবিয়াতে একটি টেলিভিশনে সাক্ষাতকার দিচ্ছিলেন তাদের পিতা রমাদান আবেদি। এ সময় সেখানে উপস্থিত হয় মুখোশধারী কিছু মানুষ। তারা তাকে তুলে নিয়ে যায়। তার আগে রমাদান আবেদি বলেন, সালমান আবেদি (২২) ম্যানচেস্টারে হামলা চালালেও সব সময়ই সে এমন সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে ছিল। তিনি ব্লুমবার্গ’কে বলেন, ওই হামলার খবর দেখে আমি হতবাক হয়ে গিয়েছি। এটা যে ঘটেছে তা আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না। এর আগে আমরা একই রকম সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে যখনই কথা বলেছি তখনই সালমান ওইসব হামলার বিরোধিতা করেছে। সে বলেছে, এমন হামলার পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য কোন ধর্মীয় অনুমোদন নেই। রমাদান আবেদি আরো বলেন, সে কেন এমন একটি হামলায় জড়িত হলো তা আমি বুঝতে পারছি না। সব পিতাই তার সন্তানকে চেনেন এবং মনে করেন তার মধ্যে কোন সন্ত্রাসী চিন্তাভাবনা নেই। উল্লেখ্য, ১৯৯০ এর দশকে নিজের দেশ ছেড়ে বৃটেনে পাড়ি জমান রমাদান আবেদি। সেখানেই জন্ম হয় তার ছেলে সন্তানদের। এক পর্যায়ে তিনি চলে যান নিজের দেশে। বৃটেনে থাকা অবস্থায় সালমান আবেদি একবার নাকি তার মাকে বলেছিল, সে পবিত্র রমজানের সময় মক্কা শরীফে যাবে। ওদিকে আবেদি পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা আছে এমন এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছেন প্রফেসর হামিদ আল সাঈদ। তিনি সন্ত্রাস ও উগ্রাপন্থার বিষয়ে জাতিসংঘকে পরামর্শ দেন। তিনি হামিদ আল সাঈদকে বলেছেন, সালমান আবেদি সব সময় পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতো না। তাকে তার পিতামাতা অনেকবার লিবিয়া নিয়ে যেতে চেয়েছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে তারা সফল হননি।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn