এম জসীম উদ্দীন-বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান এম এ আজাদের (৪৫) লাশ উদ্ধারের ১১ দিন পরও মৃত্যুর কারণ উদ্‌ঘাটিত হয়নি। তাঁর পরিবার এটাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলছে। আর পুলিশ জানিয়েছে, সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে এবং শিগগিরই রহস্য উন্মোচিত হবে। চিকিৎসক এম এ আজাদ গত ২৭ এপ্রিল বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ২৮ এপ্রিল সকালে নগরের কালীবাড়ী সড়কের বেসরকারি মমতা স্পেশালাইজড হাসপাতালের লিফটের নিচ থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার হয়। চিকিৎসক এম এ আজাদ অবসর সময়ে ওই হাসপাতালে ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখতেন এবং ১০ তলা হাসপাতাল ভবনটির সপ্তম তলায় একা বসবাস করতেন। এম এ আজাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের পর শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মসজিদে জানাজা শেষে ওই দিনই পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। পরদিন ঢাকার কেরানীগঞ্জে তাঁর লাশ দাফন হয়। এম এ আজাদের বাড়ি পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলায়, কিন্তু ছোটবেলা থেকেই তিনি কেরানীগঞ্জের জিনজিরা এলাকায় বেড়ে ওঠেন এবং পরিবার নিয়ে সেখানে বসবাস করেন। তাঁর স্ত্রী, দুই ছেলেমেয়ে, ভাই ও মা সেখানেই থাকেন।  এ ঘটনায় নিহত চিকিৎসক এম এ আজাদের ছোট ভাই চিকিৎসক শাহরিয়ার উচ্ছ্বাস বাদী হয়ে ২৮ এপ্রিল রাতেই বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি মামলা করেন।

চিকিৎসক আজাদের স্ত্রী কোহিনুর বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে গতকাল শুক্রবার দুপুরে বলেন,‘আমার স্বামী একজন পরোপকারী, ধর্মপরায়ণ মানুষ ছিলেন। আমার জানতে ইচ্ছা করে, কেন কী অপরাধে তাঁকে এমন নির্মমভাবে হত্যা করা হলো।’ কোহিনুর বেগম বলেন, তিনি যদি দুর্ঘটনার শিকার হবেন, তবে কেন তাঁর বুকের পাঁচটি হাড়, বাঁ পা হাঁটু থেকে ভেঙে যাবে। পায়ের দুই গোড়ালি থেঁতলে যাবে, দুই হাতে রক্ত জমাট হবে, বাঁ গালে আঘাতের মতো চিহ্ন থাকবে, দুই কাঁধ ভাঙা থাকবে? তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা, লিফট থেকে নামার সময় তাঁকে কেউ ধরে নিয়ে কোনো রুমে আটকে হত্যার পর লিফট থেকে নিচে ফেলে দিয়েছে।’ মামলার তদন্ত কর্মকতা এম আর মুকুল গতকাল দুপুরে বলেন, ‘আমরা ভিসেরা প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করছি। এ ছাড়া বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি, সেগুলো যাচাই করছি। তবে আমরা কাউকে হয়রানি করতে চাই না। প্রকৃত অপরাধীকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে চাই। এ জন্য সময় লাগছে।’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn