যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ১২০০ কোটি ডলারের বিনিময়ে ৩৬টি এফ-১৫ জঙ্গিবিমান কিনছে কাতার। এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে জানিয়েছে কাতারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। খবরটি এমন এক সময়ে এলো যখন সৌদি আরবসহ উপসাগরীয় কয়েকটি দেশের কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ফলে এ অঞ্চলে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। এদিকে উত্তেজনার মধ্যেই ২ মার্কিন যুদ্ধজাহাজ কাতারের বন্দরে এসে পৌঁছেছে। এর আগে সন্ত্রাসবাদে মদদ দেয়ার অভিযোগে কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সৌদি উদ্যোগকে প্রশংসা করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সব পক্ষকে একসঙ্গে বসে সমস্যা সমাধানের ওপর জোর দেয়। উপসাগরীয় অঞ্চলের মধ্যে কাতারে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি। এবার সম্পন্ন হল ১২০০ কোটি ডলারের এই অস্ত্র চুক্তি। কাতার সংকটে যুক্তরাষ্ট্র এখন কোন দিকে মোড় নেয় তা দেখার বিষয়। রয়টার্স জানিয়েছে, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস ও কাতারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খালিদ আল আতিয়াহ বুধবার ওয়াশিংটনে ওই চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

বুধবার পেন্টাগন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। চুক্তির আগে জিম ম্যাটিস ও কাতারের প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী খালিদ আল আতিয়াহ আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন। পাশাপাশি বর্তমানে কাতারকে কেন্দ্র করে যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে সে বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে। উত্তেজনার মধ্যেই কাতারের বন্দরে ২ মার্কিন যুদ্ধজাহাজ: কাতারের নৌবাহিনীর সঙ্গে যৌথ মহড়া চালানোর জন্য দুটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ দোহায় পৌঁছেছে। কাতারের বার্তা সংস্থা কিউএনএ জানিয়েছে, কাতারের নৌবাহিনীর সঙ্গে যৌথ মহড়ায় অংশগ্রহণের জন্য দুটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ দোহার নিকটবর্তী হামাদ বন্দরে নোঙর করেছে। কাতারের নৌবাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তারা বন্দরে মার্কিন নাবিকদের স্বাগত জানান। কাতারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ নৌমহড়ার কর্মসূচি চলমান উত্তেজনার আগেই নির্ধারিত ছিল নাকি চার আরব দেশের বিপরীতে দোহার প্রতি ওয়াশিংটনের সমর্থন প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে দুটি মার্কিন জাহাজ এসেছে- সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। নৌজাহাজ দুটির নাম বা এগুলোর ধরন সম্পর্কে কিউএনএ কিছু জানায়নি।

কাতারের আল-উদেইদ বিমানঘাঁটিতে মোতায়েন রয়েছে প্রায় ১১ হাজার মার্কিন সেনা। মঙ্গলবার এই ঘাঁটি কাতার থেকে সরিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ওয়াশিংটনে নিযুক্ত আমিরাতি রাষ্ট্রদূত ইউসেফ আল-ওতাইবা। সংকট নিরসনে কাতারে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী: মধ্যপ্রাচ্যে চলমান কূটনৈতিক সংকটের সমাধান খুঁজতে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসোগলু বুধবার কাতার সফর করেছেন। কাতারের আমির সঙ্গে এক বৈঠকের পর কাতার সংকটের সমাধানে পক্ষগুলোর মধ্যে সংলাপের আহ্বান জানান তিনি। কাতার সংকটের সমাধানে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে তুরস্ক। এরই অংশ হিসেবে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী চাভুসোগলু কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদল রহমান আল থানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা গালফ কাউন্সিলে কাউকে পার্থক্য করে দেখি না। সবাই আমাদের ভাই। আমরা চাই চলমান সংকট সমাধান করতে। তুরস্ক চায় আরব দেশগুলোর ভ্রাতৃত্ব বজায় থাকুক। এই সংকট আমাদের অবশ্যই অতিক্রম করতে হবে। আর সেটা করতে হবে সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায়।’ চলমান পরিস্থিতিকে অপ্রত্যাশিত বর্ণনা করে তিনি আরও বলেন, আল্লাহ চাইলে এ সংকট আমরা অতিক্রম করবই এবং সেটা করার জন্যই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এটাই এ সফরের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn