একটি পরিবারে ৬টি সন্তান। আর এ ৬জনই হচ্ছে মেয়ে। তাদেরও স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করে বাবা-মায়ের ছেলে সন্তানের অভাব দূর করার। কয়েক বছর আগে হারায় বাবাকে। তিন আগে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় মাও। মাথার উপর থেকে যেনো শেষ ছায়াটুকু সরে যায়। এখন কী হবে অভিভাবকহীন এই ৬ বোনের? ট্রাকচাপা পড়ে পার্বতীপুরের ফ্যাক্টরি পাড়া মোড়ে ওই বিধবা মা আরজিনা বেগম (৪৫) নিহত হন। পার্বতীপুর থেকে দিনাজপুরগামী একটি ট্রাক তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এ সময় তিনি তার একটি গাভী নিয়ে ওই পথে বাড়ি ফিরছিলেন। নিহত আরজিনা মন্মথপুর ইউনিয়নের ছোট হরিপুর মুন্সীপাড়া গ্রামের মৃত মোফাখখারুল ইসলামের স্ত্রী।

প্রতিবেশীরা জানায়, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল স্ত্রী ও ৬ কিশোরী কন্যাকে রেখে মারা যান পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মোফাখখারুল ইসলাম। তার মৃতুর পর লেখাপড়া ছেড়ে সংসারের হাল ধরতে বাধ্য হন বড় দুই মেয়ে মুক্তা ও রিক্তা। তারা দুজনেই কাজ নেন ঢাকার দুই গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে। বর্তমানে মুক্তা (২৪), রিক্তা (২২) ও মোমিনা (১৮) তিনজনেই বিবাহযোগ্যা। এছাড়া ছোট বোন লিপি (১৩) ৮ম, মমতাজ ( ১৫) নবম শ্রেণি ও মুসরাত জাহান ইতি ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ছে। ৩ জনেই মেধাবী ছাত্রী। প্রতিবেশী মেনহাজুল হক বলেন, পরিবারটির ৫ শতক বসত ভিটা ছাড়া তাদের আর কোনো আবাদি জমি নেই। মায়ের মৃত্যুর পর ছোট ৪ বোনকে বাড়িতে রেখে বড় দুই বোন আবার চাকরিস্থলে ফিরে যাবে, নাকি চাকরি ছেড়ে বোনদের সাথে বাড়িতে থাকবে এ নিয়ে উভয় সঙ্কটে পড়েছে বড় দুই বোন মুক্তা ও রিক্তা। মুক্তা ও রিক্তা কান্না জড়িত কণ্ঠে জানান, বাবা মার ইচ্ছা ছিল ৬ বোনকে শিক্ষিত করার। কিন্তু দারিদ্রতার কারণে তারা দু’বোন সংসারের হাল ধরেছিল। এখন অবিভাবকহীন হয়ে তারা কীভাবে বোনদের পড়ালেখা ও সংসার চালাবে তা ভেবে পাচ্ছে না।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn