প্রাচ্যের অক্সফোর্ড হিসেবে খ্যাত দেশের ঐতিহ্যবাহী উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭তম উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতার এই কৃতি শিক্ষক। সেশনজট দূর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম গতিশীল করায় সর্বমহলে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সংকট দূরীকরণকে সহজতর করতে নিজের প্রাপ্য কোটি টাকার সিটিং অ্যলাউন্স গ্রহণ না করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন তিনি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটে ঘাটতি মেটাতে গত সাত বছর ধরে কোন ধরনের সভা থেকে সিটিং অ্যালাউন্স বাবদ অর্থ গ্রহণ করেননি উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিক।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট অধিবেশনে উপাচার্যের এমন ত্যাগের বিষয়টি সবার সামনে তুলে ধরেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন। লিখিত বাজেটবক্তৃতায় ঢাবি কোষাধ্যক্ষ বলেন, ‘একটি বিষয় উল্লেখ না করে পারছি না যে, এখনও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক নরেশ সেনগুপ্তের মত ত্যাগী অধ্যাপক শিক্ষক আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ পদে অধিষ্ঠিত উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষসহ সকলেই বিভিন্ন পর্যায়ের সভাসমূহের জন্য ‘সিটিং অ্যালাউন্স’ অত্যন্ত আনন্দের সাথে গ্রহণ করেন। শুধুমাত্র আমাদের উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘাটতি কমানোর জন্য কোন সিটিং অ্যালাউন্স গ্রহণ করেননি। আমার হিসাবে গত সাত বছরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপক্ষে প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা সাশ্রয় করেছেন। উচ্চ নৈতিকতার জন্য এটা একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত নয় কি?’

এ প্রসঙ্গে ঢাবি কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক কামাল উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি উপাচার্যের যে ভালোবাসা এটি তারই বহিঃপ্রকাশ। ত্যাগ সবাই করতে পারে না, যাদের সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠানের প্রতি ভালোবাসা আছে তারাই এ ধরনের মহৎ কাজ করতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাতৃসম প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দেয়াকে তিনি কমিটমেন্ট হিসেবে দেখেন।

সিটিং অ্যালাউন্স প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটি কোটি টাকার উন্নয়নকাজ হয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে তিনি সর্বোচ্চ সময় দেন এসব পরিকল্পনার কাজে। অতিরিক্ত এসব কাজে সময় দেয়ার জন্য নির্ধারিত থাকে ভাতা। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়েও এ ধরনের ভাতা আছে। আর ভর্তি পরীক্ষায়ও প্রধান পরীক্ষকদের অনেক টাকা নির্ধারিত থাকে ভাতা হিসেবে। কিন্তু উপাচার্য কোনো ভাতা গ্রহণ করেননি। তিনি প্রথম থেকে এই বিষয়টির চর্চা করে আসছেন। তখন বিষয়টি সেভাবে কেউ খেয়াল করেননি। এখন হয়ত সবাই লক্ষ্য করছেন। এ বিষয়টি সবার সামনে আসায় অন্যরাও নিশ্চয় উৎসাহিত হবেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn