সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গন থেকে ‘গ্রিক দেবীর মূর্তি’ অপসারণের দুদিনের মাথায় সেটি সুপ্রিমকোর্ট এনেক্স ভবনের সামনে পুনঃস্থাপন করাকে অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী। রোববার বিকালে হেফাজত আমিরের প্রেস সচিব প্রেরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ হতাশা ব্যক্ত করেন। আল্লামা শফী বলেন, ‘দেবী থেমিসের ভাস্কর্য অপসারিত হয়েছে জেনে অসুস্থ শরীরেও আনন্দ পেয়েছিলাম এবং দেশবাসীর সঙ্গে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছিলাম। কিন্তু মাত্র দুদিনের মাথায় যখন সবাই পবিত্র রমজানকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখনই এনেক্স ভবনের সামনে সেটি পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। এমন সংবাদে সমগ্র দেশবাসীর সঙ্গে আমরা বিস্মিত, হতবাক এবং বাকরুদ্ধ।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আগেই জানিয়েছিলাম- গ্রিক দেবী থেমিসের এই প্রতীককে চিরতরে পরিত্যাগ করতে হবে। এই ভাস্কর্য যা জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্থাপিত হয়েছিল, তাকে বাংলাদেশের কোথাও স্থান দেয়া যাবে না।’ হেফাজত আমির বলেন, ‘থেমিস সুপ্রিম কোর্টের সামনে থাকবে, নাকি পেছনে থাকবে- এইটা কোনো ইস্যু কখনো ছিল না। নামাজের সময় কালো কাপড়ে মুড়ে দেয়া হবে কি হবে না- এইটাও ইস্যু ছিল না। ইস্যু ছিল থেমিস থাকবে কি থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘এখানে মধ্যপন্থা নেয়ার কোনো সুযোগ নাই। আমরা বার বার বলেছি- ইসলামে ইনসাফ বা ন্যায়ের ধারণা একটি মৌলিক ধারণা বা গুরুত্বপূর্ণ বিধান। এমনকি ইনসাফ কায়েম ছিল বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষিত লক্ষ্যও। সেই ন্যায়ের বা ইনসাফের কোনো প্রতীকায়ন যদি গ্রিক ঐতিহ্য থেকে ধার করা হয়, তবে প্রকারান্তরে এটাই ধরে নেয়া হয় যে, আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্যে ও ধর্মে ন্যায়ের কোনো ধারণা বা অবস্থান ছিল না। এটা উপনিবেশিক ভাবাদর্শ।’ আল্লামা শফী অভিযোগ করে বলেন, ‘ঈমান ও আক্বিদার জমিনে দাঁড়িয়ে এই উপনিবেশিক ভাবাদর্শের বিরুদ্ধেই বলেছি। অথচ সেক্যুলার মিডিয়া আমাদের যুক্তি বার বার উপেক্ষা করেছে। আমাদের এই যুক্তির কথা তাদরেকে বার বার জানানো হলেও তারা ছাপায় না।’
শিবালয় মন্দিরে হামলায় হেফাজতের উদ্বেগ-নিন্দা
অপর এক বিবৃতিতে জয়পুরহাটের বেল আমলার বারো শিবালয় মন্দিরে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর চালানোর খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী। তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলাম সংখ্যালঘুদের ওপর যেকোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলা ও তাদের যেকোনো ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে থাকে। হেফাজত মহাসচিব বলেন, ‘জয়পুরহাটের মন্দিরে হামলার যে ঘটনা গণমাধ্যমে বেরিয়েছে, বাস্তবিকই এমন কিছু ঘটে থাকলে সেটা অবশ্যই উদ্বেগের ও নিন্দনীয়। আমরা এ ধরনের ঘটনার নিরপেক্ষ ও সঠিক তদন্ত এবং দোষী দুর্বৃত্তদেরকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বিধানের আহ্বান জানাই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় যেকোনো সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানো, বিভেদ তৈরি এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের যেকোনো ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণ ও তাদেরকে হেয় করার ঘোরতর বিরোধী।’
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn