ভারতের বরেণ্য অভিনেতা, নাট্যকার ও সাহিত্যিক গিরিশ কারনাড মারা গেছেন। সোমবার (১০ জুন) সকালে বেঙ্গালুরুতে লাভেলি রোডে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১। সকালে বার্তা সংস্থা এএনআই টুইটারে এই খবর জানায়। বহুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন গিরিশ কারনাড। বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। অসুস্থতার কারণে এর মধ্যে কয়েকবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালক হিসেবে সুনাম অর্জন করেন তিনি। পেয়েছেন পদ্মশ্রী (১৯৭৪), পদ্মভূষণ (১৯৯২) ও জ্ঞানপীঠ (১৯৯৮) সম্মান। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ চারটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯৬০ সাল থেকে কন্নড় ভাষায় লেখক হিসেবে তিনি পরিচিতি পেতে শুরু করেন। ১৯৩৮ সালের ১৯ মে বর্তমান মহারাষ্ট্রের মাথেরানে জন্মগ্রহণ করেন গিরিশ কারনাড। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। তাঁর পড়াশোনার শুরুটা হয়েছিল কর্ণাটকে। অঙ্ক ও সংখ্যাতত্ত্বে স্নাতক করেছেন। এরপর অক্সফোর্ডে রাজনীতি ও অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেন। গিরিশ কারনাডের স্ত্রী সরস্বতী গণপতি। তাঁদের দুই সন্তান।

১৯৭০ সালে ‘সংস্কার’ ছবি দিয়ে বড় পর্দায় গিরিশ কারনাডের যাত্রা শুরু। অভিনয় করেছেন ‘নিশান্ত’, ‘মন্থন’, ‘স্বামী’, ‘পুকার’-এর মতো হিট ছবিতে। ২০০৫ সালে মুক্তি পায় ‘ইকবাল’। এই ছবিতে তাঁর অভিনয় পছন্দ করেন দর্শক। সালমান খানের দুটি আলোচিত ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন। ২০১২ সালে ‘এক থা টাইগার’ এবং ২০১৭ সালে ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’ ছবিতে গিরিশ কারনাডের অভিনয় দেখে মুগ্ধ হন দর্শক। অন্যদিকে ছোট পর্দায়েও গিরিশ কারনাড সমান জনপ্রিয় ছিলেন। ১৯৮৬-৮৭ সালে জনপ্রিয় টিভি ধারাবাহিক ‘মালগুড়ি ডেজ’-এ তিনি অভিনয় করেন। গিরিশ কারনাডগিরিশ কারনাডচার দশকের বেশি সময় ধরে নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন গিরিশ কারনাড। বহু নাটক লিখেছেন। হিন্দি ছাড়া আরও কয়েকটি ভাষায় অভিনয় করেছেন। পরিচালক হিসেবেও কাজ করেছেন। ১৯৭১ সালে কন্নড় ছবি ‘বংশবৃক্ষ’র হাত ধরে পরিচালক হিসেবে যাত্রা করেন গিরিশ কারনাড। এ ছবির জন্য তিনি সেরা পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।

শুধু নিজের কাজ নয়, বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক, সামাজিক নানা ঘটনায় বারবার সাহসী ভূমিকা রেখেছেন গিরিশ কারনাড। সমাজের অনেক সমস্যা তুলে ধরেছেন তাঁর লেখায়। তাঁর নাটকে বারবার বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছে। মৃত্যুর হুমকি দেওয়া হয় তাঁকে। সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করেন। ওই সময় নিজেকে ‘আরবান নকশাল’ বলে ঘোষণা দেন। নকশালদের উৎসাহ দিচ্ছেন, এই অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। বাংলাদেশেও তাঁর কয়েকটি নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn