আট দলের বিশ্বকাপ বললে কি খুব বেশি ভুল বলা হবে? আসল বিশ্বকাপের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দলের তালিকা অত লম্বা না হলেও ওয়ানডের সেরা আটটি দলই তো খেলছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে! সবার চোখ তাই এখন ইংল্যান্ডে। কিন্তু সেই চোখগুলো কিছু একটা খুঁজে পাচ্ছে না। কী যেন নেই এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে! সুরটা কোথায় যেন সামান্য কাটা, একটু ছন্দপতন, রঙের একটু অভাব। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো বর্ণিল একটা দল চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে উধাও হয়ে গেলে সে রকমই মনে হওয়ার কথা। ক্যালিপসোর ছন্দ আর ক্যারিবীয় ক্রিকেটের যুগলবন্দী খেলাটাকে চূড়ায় তুলে বিনোদন জোগায় সর্বোচ্চটুকু। এবার তা হবে না। হবে না ওয়েস্ট ইন্ডিজের কারণেই। ২০১৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আইসিসির ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে তারা ছিল আটের নিচে। আইসিসি আগেই ঠিক করে দিয়েছিল ওই দিনে যারা সেরা আটের মধ্যে থাকবে, তারাই কেবল খেলবে ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে।
সেই শোক হয়তো এত দিনে সয়ে গেছে ক্যারিবীয়দের। কিন্তু যাঁরা এখন চ্যাম্পিয়নস ট্রফি উপভোগের নেশায় কাতর হয়ে আছেন, তাঁদের শোকটা জাগছে এখন। ইশ্‌, ওয়েস্ট ইন্ডিজ যদি থাকত! ওয়েস্ট ইন্ডিজ নেই মানে ক্রিস গেইলের ব্যাটিং থাকবে না চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। ছক্কার বৃষ্টিতে ভিজবে না গ্যালারি, হবে না গ্যাংনাম নৃত্য। মারলন স্যামুয়েলসকেও মিস করবে এই চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। দর্শক বঞ্চিত হবেন তাঁর আক্রমণাত্মক ব্যাটিং দেখা থেকে, আর সাংবাদিকেরা সংবাদ সম্মেলনের নাটকীয়তা থেকে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার পর সংবাদ সম্মেলনে টেবিলে পা তুলে দিয়ে আলোচিত স্যামুয়েলস তাঁকে নিয়ে শেন ওয়ার্নের সমালোচনার জবাবে একবার বলেছিলেন, ‘জানি না আমাকে নিয়ে তার সমস্যা কোথায়। হতে পারে আমার চেহারাটা আসল, আর তারটা আসল নয় বলে।’
মারদাঙ্গা স্যামুয়েলসের ঠিক বিপরীত ড্যারেন স্যামি। তাঁর বিনয়ী আচরণ, সৌজন্যবোধ, মাঠে আনন্দময় বিচরণ আর হাসি মুখটাও অনুপস্থিত এবারের আসরে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই খেলোয়াড় খেলাটা খেলেন আবেগ থেকে। তাঁর ভাষায়, ‘আমি গৌরবান্বিত হতে খেলি না। আমি খেলি ক্যারিবিয়ানদের জন্য।’ গেইল-স্যামুয়েলস-স্যামিদের ওয়েস্ট ইন্ডিজ নেই মানে জনপ্রিয় বিজয়ীরা নেই। প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঝাঁজও একটু কম থাকবে ইংল্যান্ডের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। বিশ্বকাপে সর্বশেষ সেমিফাইনাল তারা খেলেছে ১৯৯৬ সালে, কিন্তু চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে শুরু থেকেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ দাপুটে দল। ১৯৯৮ ও ২০০৬ সালের রানার্সআপ। বিশ্বমঞ্চে শিরোপা জিততে না পারার বন্ধ্যাত্ব ঘুচিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ২০০৪ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছাড়া একমাত্র ভারতই তিনবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে উঠেছে।
তথ্যসূত্র: ক্রিকইনফো

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn