চান মিয়া::

ছাতক সিমেন্ট কারখানায় ৫হাজার টাকার চুনাপাথর বিক্রি হচ্ছে আঠার শ’ টাকায়। ফলে প্রত্যহ প্রায় ৩শ’মে.টন চুনাপাথর বিক্রিতে মধ্যস্বত্বভোগিরা মাসোহারা হাতিয়ে নিচ্ছে দেড়কোটি টাকা। শুধু নৌকা রদবদল করেই তারা হাতিয়ে নিচ্ছে এসব টাকা। এতে সরকারের পাশাপাশি বিপুল অংকের পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কারখানাটি। এব্যাপারে সিলেট কাস্টমস বিভাগ ছাতক রাজস্ব কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে প্রধান করে ৩সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, ছাতক সিমেন্ট কোম্পানী লিঃ ও লাফার্জ হোলসিম লিঃ এর সিমেন্ট তৈরীর প্রধান কাঁচামাল চুনাপাথর ভারত থেকে আমদানির ক্ষেত্রে কারখানাগুলো সরকারকে ১০% হারে সম্পূরক শুল্ক প্রদান করছে। কিন্তু বিক্রয়ের উপর তাদের কোন ভ্যাটও অগ্রিম আয়কর প্রদানের নিয়ম রাখা হয়নি। যেহেতু আমদানিকৃত চুনাপাথর বিক্রির জন্যে সরকার তাদেরকে কোন অনুমতি দেয়নি। এছাড়া কারখানা ব্যতিত সাধারণ চুনাপাথর আমদানীকারকদের সম্পূরক শুল্ক ২৫% ও মালামাল বিক্রয়ের উপর আরো ১৫% হারে ভ্যাটসহ মোট ৪০%হারে দেনা পরিশোধ করতে হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ আমদানিকারকদের চেয়ে ভারত থেকে কারখানাটি ৩০% রেয়াতে চুনাপাথর এনে বর্তমান বাজার মূল্য প্রতি মে.টন ৫থেকে সাড়ে ৫হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি করছে ১হাজার ৮শ’টাকায় বিক্রি করছে। কোন সরকারি আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে টেন্ডার ছাড়া মালামাল বিক্রয় বা সরবরাহ করার কোন নিয় নেই। কিন্তু সেনাকল্যাণ নামক একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিনা টেন্ডারে প্রত্যহ প্রায় ৩শ’ মে.টন চুনাপাথর বিক্রি হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে সেনা কল্যাণ নামক প্রতিষ্ঠানের সাইন বোর্ডের আড়ালে হাত বদল হয়ে চুনাপাথর যাচ্ছে রাঘব বোয়ালদের পেটে। প্রতি মেঃটন ৫হাজার টাকার মধ্যে ১হাজার ৮শ’টাকায় বিক্রি করায় মধ্যস্বত্বভোগিদের পকেটে যাচ্ছে প্রত্যহ ৩শ’ মেঃটন চুনাপাথর বিক্রির ৫থেকে ৬লাখ টাকা। এছাড়া কারখানা কর্তৃপক্ষের প্রতি মে.টন ৫হাজার টাকার চুনাপাথর অর্ধেকের ও কমমূল্যে কেন বেআইনীভাবে বিক্রি এবং সেনাকল্যাণের সাইন বোর্ডে কারখানা ঘাটে নৌকা বোঝাই করে পাশের ঘাটেই মালামাল অধিক মূল্যে খালাস করায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়িরা। এব্যাপরে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে সিলেট কাস্টমস্ এক্সাইজও ভ্যাট সার্কেলের কমিশনারেট বরাবরে ছাতক লাইমষ্টোন ইম্পোর্টার্স এন্ড সাপ্লায়ার্স গ্রুপের প্রেসিডেন্ট আহমদ সাখাওয়াত চৌধুরী সেলিম ও জেনারেল সেক্রেটারী আলহাজ্ব সৈয়দ তৌফিক আহমদ ইকবাল এবং ছাতক পাথর ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি জয়নাল চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই আজাদ গত ৫জুন একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এব্যাপারে ছাতক সিমেন্ট কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী আবু সাইদ বলেন, বিসিআইসির অধিনস্থ প্রতিষ্ঠানে আমদানিকৃত মালামাল সরবরাহের একটি আদেশ রয়েছে। এআদেশের প্রেক্ষিতে সেনাকল্যান সংস্থার নিকট তারা চুনাপাথর বিক্রি করছেন। তিনি বিসিআইসির পরবর্তী বোর্ড সভায় চুনাপাথরের মূল্য বৃদ্ধি করা হবে বলে জানান। তবে মধ্যস্বত্বভোগিদের বিষয়ে তাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। মূল্য বৃদ্ধি হলে এদের দৌরাত্ম্য থাকবেনা বলে তিনি দাবি করেন। সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে ব্যবসায়িরা উচ্চপর্যায়ের তদন্ত দাবি করছেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn