তিনি বলেন, কোনো ধরনের সংঘর্ষ যাতে না হয় তা কৌশলে এড়িয়ে চলছি। তবে দলের বৃহত্তর স্বার্থে হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান দেখিয়ে যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তারা বিবেচনা করবেন বলে প্রত্যাশা করছি। ছাত্রদলের সাবেক নেতারা জানান, দলের দুর্দিনে ‘ চেইন অব কমান্ড’ ঠিক রাখতে চাই। নেতৃত্বকে কলুষিত করার কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইছি না। তবে দলকে সঠিক পথে নিয়ে আসার জন্য সিন্ডিকেট আর দালাল প্রথা ভাঙাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। তা না হলে দলের রাজনীতি থাকবে না। ফলে ছাত্রদলের কমিটি গঠনে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। এজন্যই দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতাদেরকে সঙ্গে নিয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলা দরকার। এর মাধ্যমে আন্দোলনরত ছাত্রনেতারা তাদের সমস্যা আর ক্ষোভের কারণ ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে নিজেদের অভিযোগ জানাতে চাইছেন। টানা ১৬ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছে ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির নেতারা। বিভিন্ন সময়ে দলের সিনিয়র নেতাদের কাছে নিজেদের দাবিও উপস্থাপন করেছেন।

সূত্র জানায়, এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পক্ষে-বিপক্ষে বিএনপিতে দুটি গ্রুপ সক্রিয় থাকায় এখনও কোনো সমাধানে পৌঁছানো যায়নি। বৃহস্পতিবারও লাঠিসোটাসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে ক্ষুব্ধ নেতারা নয়াপল্টনে অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি নাগালের বাইরে যেতে পারে- এমন আশঙ্কায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতাদের শান্ত করার দায়িত্ব দেন তারেক রহমান। দু’নেতার হস্তক্ষেপে শান্ত হন তারা। পরে সাবেক নেতাদের নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দায়িত্বপ্রাপ্তরা গুলশান কার্যালয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেন। বৈঠকের পর শনিবার পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত এবং কাউন্সিলের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় যুগান্তরকে বলেন, আগামীকাল (শনিবার) দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পর সমাধানের পথ তৈরি হবে বলে আশা করছি। বৃহস্পতিবার রাতে আমরা ছাত্রদল নেতাদের বক্তব্য শুনেছি। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নিজেরা আলোচনা করে এবং মূল সমস্যা চিহ্নিত করে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে উপস্থাপন করা হবে। এরপর তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন।

এদিকে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের মধ্যে দুই ধরনের বক্তব্য পাওয়া গেছে। কোনো কোনো নেতা বলছেন, আমরা আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী করতে চাই না। দলের হাইকমান্ড এখন যে সিদ্ধান্ত দেবে আমরা তা মেনে নেব। আবার কেউ কেউ বলছেন, আমাদের সব দাবি মানতে হবে। না হলে আন্দোলন থেকে সরব না। ছাত্রদলের সাবেক এক সহসভাপতি যুগান্তরকে বলেন, দীর্ঘদিন একসঙ্গে রাজনীতি করার কারণে সহকর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনে আছি। এটা মানবিক বিষয়। তবে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে পারব না। আরেকজন সাবেক যুগ্ম সম্পাদক বলেন, দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আমাদের বৈঠকে চিহ্নিত সিন্ডিকেটের নামের তালিকা পর্যন্ত দিয়েছি। সিনিয়র নেতারাও তাদের বিষয়ে জানেন। এর বাইরেও হাওয়া ভবনের কয়েকজনের নাম বলার পর সিনিয়র নেতারা বলেছেন, কমিটি গঠনে আমাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে তারাই এখন ছাত্রদলের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বেশি তৎপর। ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ যুগান্তরকে বলেন, আমরা সংগঠনের সিন্ডিকেট প্রথাকে ভাঙতে চাই। তাদের জন্য দলের ত্যাগী ও যোগ্যরা মূল্যায়িত হন না। সাবেক সহসভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবির বলেন, আমরাও আন্দোলন করতে চাই না। তবে আমাদের দাবি বিবেচনায় নেয়া না হলে ফের আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn