সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্ব নিরসন ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে ঢাকায় বৈঠক আহবান করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের দলীয় একটি সূত্রে জানা গেছে। বিভিন্ন জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের দ্বন্দ্ব নিরসন করতে এ বৈঠকের আহবান করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গত ১ জুলাই প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর বৈঠকে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন ও এর আগে নেতাদের দ্বন্দ্ব নিরসনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। ওই বৈঠকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের আগে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের দ্বন্দ্ব নিরসন করতে আগামীকাল শনিবার ৮ জুলাই বৈঠকের আহবান করা হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন সাথে এ নিয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি তবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট জানিয়েছেন আগামীকাল শনিবার কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক বৈঠক হবে। তবে সুনামগঞ্জের নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠক নয়।
জানা যায়, দীর্ঘ ১৭ বছর পর গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে অতীতের ভারপ্রাপ্ত নেতৃত্বের কমিটি বিলুপ্ত করে সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মতিউর রহমানকে সভাপতি ও জেলা যুবলীগের তৎকালীন আহবায়ক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমনকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করেন দলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণার পর থেকেই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। জেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন  দলের সমর্থন পেলে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নেয়। নির্বাচনে জেলার সকল সংসদ সদস্যগণ ব্যারিস্টার ইমনের পক্ষে কাজ করেন। অন্যদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদা মুকুটের পক্ষে অবস্থান নেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান, পৌর মেয়র আয়ুব বখত জগলুল, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম শামীম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালামসহ আরো অনেকেই। নির্বাচনে বিজয়ী হন বিদ্রোহী প্রার্থী নুরুল হুদা মুকুট। এরপর থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরো প্রকট হয়।
জানা যায়, সম্প্রতি জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিলে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এক হতে পারেননি। তারা কেন্দ্রের দায়িত্বশীলদের কাছে পৃথক পৃথক কমিটি জমা দেন। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে পৃথক কমিটি পেয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। তাই জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন ও নেতাদের দ্বন্দ্ব নিরসনের বিষয়ে সাংগঠনিক বৈঠক করতে চান দলের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।   এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক এমপি মতিউর রহমান বলেন,‘ ৮ তারিখ কেন্দ্রের নেতৃবৃন্দ সাংগঠনিক বৈঠক করবেন বলে জানি। দলের সাংগঠনিক বৈঠক হলে সুনামগঞ্জ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে বৈঠকে আমি থাকব না। কারণ আমি এলাকায় আছি, এলাকার সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীদের সাথে আমি কথা বলছি। আমি ৯ তারিখ ঢাকায় ফিরব।’ তিনি বলেন,‘ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন বা কোন বিষয় নিয়েই সাধারণ সম্পাদকের সাথে আমার দ্বন্দ্ব নেই। সুনামগঞ্জের আওয়ামী লীগকে আমি নিজের হাতে গড়েছি। আমি নিজের হাতে ভাংতে পারব না। দলের সাধারণ সম্পাদকের সাথে আমার কথা হয়েছে। জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের বিষয়ে আমি নেত্রীর সাথে দেখা করে কথা বলব।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn