বার্তা ডেক্সঃঃ সিলেটের হাজার কোটি টাকার দেবোত্তর সম্পত্তি তারাপুর চা বাগান দখল করে নির্মিত রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল রক্ষায় রাগীব আলীর রিভিউ আবেদনও টিকলো না। রিভিউ রায়েও উচ্চ আদালতের রায় বহাল রেখে এই বাগানের সকল স্থাপনাকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে চা বাগান থেকে মেডিকেল কলেজ হাসাপাতাল স্থানান্তর করতেই হবে। তবে, রিভিউ রায়ে বাগানের ক্ষতিপুরণ বাদাদ পাঁচ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে তিন কোটি টাকা প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর রিভিউ এর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এর আগে ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে এক রায়ে ছয় মাসের মধ্যে মেডিকেল কলেজটি অন্যত্র স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ।

রিভিউ রায়ে মেডিকেল কলেজ স্থানান্তরের নির্দেশ বহাল রেখে বলা হয় মেডিকেল কলেজটি দেবোত্তর সম্পত্তির উপর নির্মিত হয়েছে। যে চুক্তির মাধ্যমে রাগিব আলীর পুত্র আব্দুল হাই তারাপুর চা বাগান ৯৯ বছরের লিজ অধিগ্রহণ করেছিলেন তা অবৈধ ঘোষণা করে লিজটি বাতিল করা হয়। আপিল বিভাগের এ রিভিউ রায়ে দেবোত্তর সম্পত্তিটির দেখভালের জন্য একটি ব্যবস্থাপনা পরিষদ গঠন করে নীতিমালা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। নির্দেশেনায় রাগীব আলী ও তার পুত্রকে দেবোত্তর সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা পরিষদের নিকট তিন কোটি টাকা ফেরত দিতে বলা হয়। এ রায়ের ফলে রাগীব আলী এবং তার পুত্রের বিরুদ্ধে জারিকৃত চুক্তি জালের ফৌজদারী মামলার রায় কার্যকরণে আর কোন বাধা থাকে না। এর আগে সিলেট মেট্রোপলিটন আদালত ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রাগিব আলী ও তার পুত্রকে যথাক্রমে ১৪ এবং ১৬ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন। চা বাগানের দেবোত্তর সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগের মামলায় সিলেটে দণ্ডিত শিল্পপতি রাগীব আলী ও তার ছেলে আব্দুল হাইকে ২০১৭ সালের ২৬ অক্টোবর আপিল বিভাগ জামিন দেন।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির সুশেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে হাই কোর্টের আপিল বিভাগের একটি বেঞ্চ তারাপুর চা-বাগান রাগীব আলীর দখল করাকে প্রতারণামূলক আখ্যা দিয়ে পুরো বাগান সেবায়েত পঙ্কজগুপ্তকে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে বাগান দখল করে গড়ে ওঠা সব স্থাপনা ছয় মাসের মধ্যে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। এই নির্দেশনার পর ২০১৬ সালের ১৫ মে চা-বাগানের বিভিন্ন স্থাপনা ছাড়া ৩২৩ একর ভূমি সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্তকে বুঝিয়ে দেয় জেলা প্রশাসন। ২৬ বছর পর রাগীব আলীর দখলমুক্ত হয় তারাপুর চা বাগান। তবে এখনো বাগান দখল করে গড়ে ওঠা স্থাপনা উচ্ছেদ করা যায়নি। বাগানের ভেতরে নিজের ও স্ত্রীর নামে নির্মাণ করা মেডিকেল কলেজ রক্ষায় রিভিউ আবেদন করেছিলেন রাগীব আলী। যা খারিজ হয়ে গেছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn