এম.এ রাজ্জাক, তাহিরপুর :: পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শর্তসাপেক্ষে দোকান-পাট খোলার সরকারী নির্দেশনা থাকলেও, ঈদের কেনাকাটায় এ নির্দেশনা মানছেন না ক্রেতা ও বিক্রেতারা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কড়াকড়ি নির্দেশনা থাকলেও উপজেলার বাজারগুলোতে করোনার ভয়কে উপেক্ষা করে ঈদের কেনাকাটায় দোকানগুলোতে উপচেপড়া মানুষের ভিড়। যদিও সরকারের নির্দেশনা বিকাল ৪টা পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দোকানপাট খোলার কথা। কিন্ত এসব নির্দেশনা মানছেন না কেউ। উপজেলার বাজারগুলোতে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি, জটলা বেঁধে দোকান গুলোতে চলছে ঈদের কেনাবেচা, বাজারগুলোতে প্রশাসনিক নজরদারিও তেমন একটা চোখে পড়ছেনা। রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাণিজ্যকেন্দ্র বাদাঘাট বাজার সহ ছোট বড় বাজারের দোকানগুলোতে পসরা সাজিয়ে বসে আছেন দোকানীরা। এসব দোকানে কেনাকাটায় ব্যাস্থ্য ক্রেতারা। অপরদিকে দীর্ঘদিনপর বাজারগুলোতে দোকান খোলার সুযোগ পেয়ে আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে একাট্টা ব্যবসায়ীরা।
বাদাঘাট বাজারের রয়েল ফ্যাশনের মালিক রয়েল আহমদ ও আলী ফ্যাশনের মালিক আলী হোসেন জানান, গত বারুণী মেলা ও শাহআরেফিন ওরসকে কেন্দ্র করে মালামাল এনেছিলেনে ঢাকা থেকে, কিন্তু করোনার পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশনা মেনে মেলা ও ওরস বন্ধ থাকায় এসব মালামাল তারা বিক্রি করতে পারেননি। ফলে অনেক লোকশান ঘুনতে হচ্ছে তাদের। তারা বলেন, টাকা ধার করে ঢাকা থেকে মালামাল এনেছিলেন, তা বিক্রি করে দেনা পরিশোধ করবেন। কিন্তু তা আর হলোনা। দোকান ভাড়া, কর্মচারীর বেতন, সংসারের খরচ সবমিলিয়ে তারা এখন মহা সংকটে পড়ে আছেন বলে জানান বাজারের ব্যবসায়ীরা। বালিয়াঘাট নতুন বাজারের জয় সু ষ্টোরের মালিক কদ্দুস মিয়া ও তাহিরপুর সদরের আলম বাদশা বলেন, বিকাল ৪টা পর্যন্ত দোকান খোলার অনুমতি থাকলেও রমজান মাস ও ঈদু উপলক্ষে সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখতে হচ্ছে। তারা বলেন, দীর্ঘদিন পর দোকান খুলেছেন, তারা চান সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কেনাকাটা করুক কিন্তু লোকজন হুমড়ি খেয়ে ভিড় জমাচ্ছেন অযতা। সামাজিক দূরত্বের কথা বললে, পাত্তা দিচ্ছে না ক্রেতারা। কাস্টমার হিসেবে এর বেশি কিছু বলাও যাচ্ছে না তাদের। জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোদাচ্ছির আলম সবুল জানান, লোকজন তো জটলা বেঁধে দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন, স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না কোথাও, এক্ষেত্রে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে সবার।
বাদাঘাট বাজার বণিক সমিতির সভাপতি সেলিম হায়দার এ বিষয়ে বলেন, উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী বিকাল ৪টার মধ্যেই সকল দোকানপাট বন্ধের জন্য বাজারে ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে। কিন্তু বেশীর ভাগ দোকানের মালিকেই মানছেন না। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জী বলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে দোকানগুলোতে লোকজনের জটলার দৃশ্য দুঃখজনক। সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে। উপজেলার ছোট বড় বাজারগুলো বিকাল ৪টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট খোলা রাখার নির্দেশনা কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn