দ্রুত বিচার আইনে সাজার মেয়াদ বাড়ছে
বিভিন্ন অপরাধের দায়ে দ্রুত বিচার আইনে সাজার মেয়াদ দুই বছর বাড়িয়ে আইন সংশোধনের প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ৫ জুন সোমবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এ অনুমোদনের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘এটা মূলত ২০০২ সালের আইন। ওই আইনের একটি ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যমান আইনের শাস্তির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।’
শফিউল আলম বলেন, ‘বিদ্যমান আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ করলে ২ থেকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় এবং একইসঙ্গে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এখানে সংশোধনী প্রস্তাব করে বলা হয়েছে, শাস্তি ২ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’ আইনে অর্থদণ্ড নির্দিষ্ট করা নেই বলেও জানান শফিউল আলম।
চাঁদাবাজি, যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা; যানবাহনের ক্ষতি সাধন করা; স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিনষ্ট করা; ছিনতাই, দস্যুতা, ত্রাস ও অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি; দরপত্র ক্রয়-বিক্রয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি; ভয়-ভীতি প্রদর্শনসহ গুরুতর অপরাধ দ্রুততার সাথে বিচারের জন্য এই আইনটি করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, ‘আইনে উল্লেখ করা নয়টি আইটেম আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ বলে গণ্য হবে।’ শাস্তি কেন বাড়ানো হলো- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘অনেকগুলো ফোরাম থেকে প্রস্তাব এসেছে এটা (শাস্তি) পর্যাপ্ত নয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সব ধরনের স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলাপ করা হয়েছে। তারা সবাই বলেছে, এটা বাড়ালে ভালো হয়। কত বাড়ালে ভালো হয়- ওই সাত বছরে সবাই একমত পোষণ করেন।’ আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দ্রুত বিচার আইনের শাস্তি বাড়ানো হলো কি না- এ বিষয়ে শফিউল আলম বলেন, ‘না না, এটা নিয়মিত একটা কাজ। এটার সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক নেই।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, ২০০২ সালে দ্রুত বিচার আইনটি প্রথম কার্যকর করা হয়। তখন বলা হয়েছিল, ২ বছর পর্যন্ত এটি বলবৎ থাকবে। পরে বিভিন্ন সময় কার্যকারিতার মেয়াদ বাড়ানো হয়। ২০০৪, ২০০৬, ২০১২, সর্বশেষ ২০১৪ সালে এ আইনের কার্যকারিতার মেয়াদ বাড়ানো হয়। ২০১৪ সালে আইনটির কার্যকারিতার মেয়াদ একসঙ্গে ৫ বছর বাড়ানো হয়। ২০১৯ সালের ৭ এপ্রিল পর্যন্ত দ্রুত বিচার আইনটি কার্যকর থাকবে। সরকারগুলোর বিরুদ্ধে এ আইনটি ব্যবহার করে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের দমনের অভিযোগ রয়েছে।