ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে লন্ডনে বিক্ষোভ করেছেন হাজারো মানুষ। ফিলিস্তিনিদের নাকবা বা ধ্বংসযজ্ঞ দিবসের ৭১তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শনিবার (১১ই মে) ওই বিক্ষোভ পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। নাকবার পাশাপাশি চলতি বছর প্রকাশিতব্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রা¤প প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্য শান্তিচুক্তির বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ করেন তারা। এ খবর দিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
খবরে বলা হয়, বিক্ষোভটির আয়োজন করেছিল প্যালেস্টেনিয়ান ফোরাম ইন বৃটেন (পিএফবি), প্যালেস্টাইন সলিডারিটি ক্যা¤েপইন (পিএস), মুসলিম এসোসিয়েশন অব বৃটেন (এমএবি) ও স্টপ দ্য ওয়ার ক্যা¤েপইন (এসটিডব্লিউ)। বিক্ষোভকারীরা ‘ফিলিস্তিন মুক্ত কর’ ও ‘গাজায় অবরোধ শেষ কর’ সেøাগান দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। সাথে ছিল ফিলিস্তিনপন্থি প্ল্যাকার্ড। এদিকে, বিক্ষোভটির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন। এক টুইটে তিনি লিখেন, ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার ও ন্যায় বিচার প্রতিনিয়ত প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে। এমতাবস্থায় আমরা নীরবে তা দেখে যেতে পারি না।  বিক্ষোভ পদযাত্রাটির শুরু হয় শহরের পোর্টল্যান্ড প্লেস থেকে। সেখান থেকে বিক্ষোভকারীরা অক্সফোর্ড সারকাস ও ট্রাফালগার স্কয়ার হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে এসে থামে। বিক্ষোভকারীরা ট্রা¤প-বিরোধী প্ল্যাকার্ড নিয়ে তার মধ্যপ্রাচ্য শান্তিচুক্তির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে। পাশাপাশি বয়কট, ডাইভেস্টমেন্ট অ্যান্ড স্যাংশন (বিডিএস) আন্দোলনের পক্ষেও বিক্ষোভ করেছে।

অলিভ ফর প্যালেস্টেনিয়ান ইয়ুথ এর পক্ষে বিক্ষোভে বক্তব্য রাখেন বৃটিশ-ফিলিস্তিনি হানেন খলিল। তিনি বলেন, যতদিন না ইসরাইল সকল বিতাড়িত ফিলিস্তিনিদের তাদের পূর্ব পুরুষের ভূখ-ে ফেরার অধিকার না দেবে ততদিন তাদের সঙ্গে সকল প্রকারের আলোচনা বন্ধ রাখা উচিত। শনিবারের বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভের প্রতীক আহেদ আল-তামিমিও ছিলেন। ২০১৭ সালে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের এক সেনাকে চড় মারার দায়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে আট মাসের কারাদ-ও দেয়া হয় তামিমিকে। তামিমি বিক্ষোভে বলেন, আমাদেরকে শিকারে পরিণত করা যাবে না! আমরা প্রতিবাদ চালিয়ে যাবো।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইসরাইল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে ট্রা¤প প্রশাসনের চুক্তির একটি খসড়া ফাঁস হয়েছে এক ইসরাইলি পত্রিকায়। ফাঁস হওয়া তথ্য অনুসারে, ফিলিস্তিনিদের আলাদা রাষ্ট্র দেয়া হবে তবে এর প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকবে ইসরাইলই। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ যদি এ চুক্তি মেনে নিতে অস্বীকার করে তাহলে তাদের সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান বন্ধ করে দিবে যুক্তরাষ্ট্র। আর যদি গাজা শাসন করা দল হামাস চুক্তিটি না মানে তাহলে গাজায় যুদ্ধ চালাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ চুক্তিটি মানবে না বলে জানিয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত হুসাম জমলত। শনিবার এই চুক্তির বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ করেন বিক্ষোভকারীরা।
পিএফবি সভাপতি হাফিজ আল-কারমি এক বক্তব্যে  যুক্তরাজ্য সরকারকে বালফোর ঘোষণা দেয়ার ভুল স্বীকার করতে আহ্বান জানিয়েছেন। ওই ঘোষণার পরই ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূখ- থেকে বিতাড়িত করে সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসরাইল।  পিএফবি’র এক মুখপাত্র আদনান হুমাইদান বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’র প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইসরাইলের অপরাধ অগ্রাহ্য করে তাদের অস্ত্র দেয়া ও দখলীকরণকে সমর্থন করা বন্ধ করুন। তারা সাবা আবু আরারের মতো শিশুদের হত্যা করছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি এক ইসরাইলি বোমা হামলায় প্রাণ হারায় এক বছর বয়সী শিশু সাবা মাহমুদ আবা আরার ও তার প্রসূতি মা।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn